মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৫, ২০:০২

শেষ জীবনে মাথা গোঁজার আশ্রয় রক্ষার্থে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্যের পরিবার

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো।।
শেষ জীবনে মাথা গোঁজার আশ্রয় রক্ষার্থে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্যের পরিবার
ফরিদগঞ্জে ভাংচুরের শিকার ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য মোশারফের হোসেন দম্পতি।

স্বদেশের মানুষ যেনো নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারেন, সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছেন। অবসর জীবনে সেই মানুষটি নিজেই নির্বিঘ্নে ঘুমানোর স্বপ্ন দেখছেন, কিন্তু বাস্তবে তা করতে পারছেন না। দু সহোদর ভাইয়ের দ্বারা অপমান অপদস্থ ও লাঞ্ছিত হয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু রক্ষার্থে বিচারের আশায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে তাকে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মো. মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া (৬৮)-এর প্রতি নিষ্ঠুরতার কথা এগুলো। তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের পাড়া গাব্দেরগাঁও গ্রামের মৃত আবদুর রহমান ভূঁইয়ার ছেলে। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার সালিস হলেও কোনো সমাধান না পেয়ে বাধ্য হয়ে রোববার (১৫ জুন ২০২৫) রাতে ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী পরিবারটি।

ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ ও সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী মো. মোশারফ হোসেন ভূঁঁইয়া পরিবারের বড়ো সন্তান। তিনি বিজিবিতে চাকুরি জীবনে ভাই-বোনদের পড়ালেখার খরচ মেটানোর পাশাপাশি পরিবারের হাল ধরেছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা স্বাবলম্বী হলেও শেষ জীবনে নিজ পরিবার নিয়ে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন। বাড়ির পুকুরের পাশে পুরাতন একটি ঘরে বসবাস করছেন তিনি। পুকুর পাড়ের কারণে ইতোমধ্যেই ঘরটির মাঝ বরাবর ফাটল দেখা দিয়েছে। ঘরটি স্থানান্তরের জন্যে চেষ্টা করতে গিয়ে হচ্ছেন ভাইদের দ্বারা নানা ধরনের হয়রানির শিকার। পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকলেও তার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন আলতাফ হোসেন ও জাকির হোসেন নামে ছোট দু ভাই। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার বিবাদ সৃষ্টি হলে জনপ্রতিনিধিরাসহ স্থানীয়ভাবে সমাঝোতা বৈঠক করে ব্যর্থ হতে হয়েছে।

ভুক্তভোগী মো. মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমি চাকুরি জীবনে বাবার পাশাপাশি পরিবারের হাল ধরেছিলাম। এখন পরিবারের সবাই স্বাবলম্বী হলেও পুকুর পাড়ে বাবার রেখে যাওয়া ঘরটিতেই থাকতে হচ্ছে আমাকে। ঘরটির মেঝেতে বড়ো ধরনের ফাটল দেখা দিয়ে অর্ধেক দেবে গেছে। বাধ্য হয়ে ঘরটি স্থানান্তরের চেষ্টা করলেও দু ভাই আলতাফ হোসেন ও জাকির হোসেনের কারণে তা করতে পারছি না। পরিবারের অন্যরা সবাই ঠিক আছে। পাশে আমার আরেকটি ছোট ঘর ছিলো, রোববার ছোট দুই ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা আমার ওই ঘরটি ভেঙ্গে দিয়েছে। এদিকে মোশারফ হোসেনের দু সহোদর আলতাফ হোসেন ও জাকির হোসেনকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে আলতাফ হোসেনের স্ত্রী আমেনা বেগম বলেন, আমাদের চলাচলের জন্যে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়েছে, এ জন্যে অনেকদিন থেকেই ঝামেলা চলছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ বিরোধে আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমাদের প্রতিপক্ষরা কয়েকদিন পরপর সালিস বসায়। তারাও ঠিকমতো মানছে না, তাই সমাধানও হচ্ছে না।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মো. লিটন বলেন, মো. মোশারফ হোসেন ভূঁইয়ার অভিযোগ সত্য, তার এই দু ভাই দ্বারা তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়