মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

ভালো দাম পাওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ॥

এক সময়ের দেশের সোনালি আঁশ নামে খ্যাত পাট কৃষকের গলার ‘ফাঁস’ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো কয়েক বছর আগেও। কচুয়ার অনেক কৃষকই পাট চাষ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবে গত ২/৩ বছর পাটের দর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারও পাট চাষ শুরু করেছেন বলে জানান পাট চাষীরা। এ বছর কচুয়ায় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে পাটের। আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকায় ও মাটি পাট চাষের উপযোগী হওয়ায় এমন ফলন হয়েছে বলে মনে করছেন কৃষি অফিস।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, এলাকার শত শত নারীণ্ডপুরুষ রাস্তার দু’পাশে ও বাড়ির আঙ্গিনায় বসে পচা পাট গাছ থেকে পাটের আঁশ সংগ্রহে ব্যস্ত রয়েছে। তারা মনে করছে পাটের সুদিন ফিরে এসেছে।

মনোহরপুর গ্রামের কৃষক জসিম হোসেন বলেন, গত তিন বছর ধরে পাটের ভালো দাম পাচ্ছি। ধানের তুলনায় পাট ও ভুট্টা আবাদে বর্তমানে লাভ বেশি হচ্ছে। এ কারণে আমি এ বছর চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। এতে প্রায় ১৮ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ১৩ থেকে ১৪ মণ পাট হয়েছে। করোনার কারণে এখনো বাজারে পাট ভালোভাবে বিক্রি শুরু হয় নি। ইতিমধ্যে পাটখড়ির প্রতি আঁটি ২০টাকা ধরে বিক্রি করে দিয়েছি। এখান থেকে প্রায় ১৭ হাজার টাকার মতো লাভ করেছি। পাটের দাম ভালো পেলে আরো বেশি লাভবান হবো।

কাদলা গ্রামের পাট চাষী আলাউদ্দিন জানান, প্রায় এক যুগ পূর্বেও দেখেছি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা ব্যাপক হারে পাট চাষাবাদ করতো। বর্ষা মৌসুম এলে বাড়ি বাড়ি পাট গাছ থেকে আঁশ ছাড়ানোর ব্যস্ত সময় পার করতো কৃষকণ্ডকৃষাণীরা। পাটের দাম ভালো না পাওয়ায় অনেক চাষী পাট চাষ ছেড়েই দিয়েছিল। গত দুইণ্ডতিন বছর ধরে পাটের দাম ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছর আমি ভালো দাম পেয়েছি। ১৭০০ থেকে দুই হাজার টাকা মণ পর্যন্ত বিক্রি করেছিলাম। দাম ভালো পাওয়ার কারণে এবং লাভবান হওয়ায় এ বছর আমি পাঁচ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পাটের রোগণ্ডবালাই তেমন একটা নেই। পাটও বেশ ভালো হয়েছে। বর্তমানে বাজারে পাটের মূল্য উঠানামা করছে। এ বছর মণপ্রতি পাট ২২শ’ টাকা থেকে ২৫শ’ টাকা ধরে বিক্রি করেছি। কৃষি বিভাগ থেকে আমাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে। দাম থাকলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে পাট চাষ করব।

কচুয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, এ বছর পাটের রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন ছিল না। বাজারে পাটের দাম ভালো থাকলে কৃষকরা বিগত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি লাভবান হবেন। এতে ভবিষ্যতেও তাদের পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোফায়েল হোসেন জানান, চলতি বছর কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩শ’ ১০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। পাট উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ৩ হাজার কৃষকের মধ্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে। কচুয়ায় এ মৌসুমে হেক্টর প্রতি ৬ টন পাট উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। কৃষকরা পাটের ভালো দাম পেলে আগামীতে পাট চাষে আরও আগ্রহী হবেনও বলে তিনি জানান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়