প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুর শহর সংলগ্ন মেঘনার পশ্চিমপাড়ের চরাঞ্চলে চলমান কঠোর লকডাউন অনেকটাই উপেক্ষিত। প্রতিদিন কারণে-অকারণে নৌপথে শহরমুখী হচ্ছেন শত শত মানুষ। সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ চাঁদপুরের নৌপথে কার্যকর হতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে চাঁদপুরে মেঘনার এপার-ওপারে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই যাতায়াত করছে।
দেশে দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে বৈশি^ক মহামারি করোনার ভয়াবহতা। চাঁদপুর জেলা করোনা মহামারিতে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে আছে আরো আগে থেকেই। চাঁদপুরে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্রাধিক বৃদ্ধি পাওয়ার পরও মানুষের মাঝে আশানুরূপ সাবধানতা পরিলক্ষিত হয়নি।
এই সংক্রমণের হাত থেকে দেশের মানুষকে রক্ষার লক্ষ্যে ঘোষিত হয়েছে কঠোর লকডাউন। গত ২৩ জুলাই থেকে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত ১৪ দিনের এই লকডাউন ঘোষিত হয়। চলমান কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খুবই তৎপরতার সাথে কাজ করেও অনেক ক্ষেত্রে তা কার্যকর করতে হিমশিম খাচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা কার্যকর করতে গিয়ে প্রশাসন কঠোর হচ্ছে, করছে জরিমানা। তারপরও মানুষ থেমে নেই। নিরাপদে ঘরে থাকার চেয়ে প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে বাইরে বের হয়ে আসছেই।
এদিকে লকডাউন না মানার চিত্র ফুটে উঠেছে চরাঞ্চলেও। তারা প্রতিদিনই নৌপথে পাড়ি জমাচ্ছে শহরে। আবার প্রয়োজন মিটিয়ে ফিরে যাচ্ছে নিজেদের গন্তব্যে। ফলে বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে লকডাউনের কার্যকারিতা। প্রতিদিনই চাঁদপুর শহরঘেঁষা মেঘনার পশ্চিমপাড়ে থাকা বালাবাজার, আলুরবাজার, দুলারচর, রাজরাজেশ^র, ঈশানবালা, ঈদগা বাজার (ফেরীঘাট)সহ চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে নৌপথে ট্রলারযোগে চাঁদপুর শহরে পাড়ি জমান শত শত নারী-পুরুষ। তবে তারা চাঁদপুরে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে পূর্বের নির্দিষ্ট নৌঘাট বা ট্রলারঘাট ব্যবহার করে না। তারা পূর্বের নির্দিষ্ট ট্রলার ঘাট থেকে ট্রলারে না উঠে মাঝির সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে সুবিধাজনক স্থান থেকে ট্রলারে উঠে। ওই সকল যাত্রীবাহী ট্রলার চাঁদপুর পুরাণবাজারের নির্দিষ্ট মদীনা মসজিদ ট্রলার ঘাট, তেল ঘাট ও ভূঁইয়ার ঘাট এলাকায় যাত্রী না নামিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি এড়িয়ে হরিসভা এলাকা বা আশপাশের সুবিধাজনক স্থানে তাদের নামিয়ে দেয়। এরা আবার চরাঞ্চলে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও একই পন্থা অবলম্বন করে। তারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ট্রলারের অবস্থান জেনে নেয় এবং সেমতে ট্রলারে চড়ে চরাঞ্চলে ফিরে যায়। এক্ষেত্রে নদীরপাড় সংলগ্ন মানুষজন কিছু বলতে চাইলেও ট্রলার মালিক ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের পেশী শক্তির কারণে কেউ কিছু বলতে সাহস করে না। অথচ প্রশাসন চলাচলের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। বন্ধ রেখেছে সকল ধরনের পরিবহন। কিন্তু জনসচেতনতা বৃদ্ধি না পাওয়ায় প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে চলছে লকডাউন না মানার প্রবণতা। নৌপথে কঠোর লকডাউন মানার বিষয়ে প্রশাসন আরো কঠোরতা অবলম্বন করবে এটাই সচেতন মহলের প্রত্যাশা।