প্রকাশ : ৩১ মে ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা ও সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টির অভিযোগে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়েরকৃত মামলায় ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাহিদ খানকে আটক করা হয়েছে। চাঁদপুর সদর মডেল থানায় পুলিশ তাকে আটক করে।
জানা যায়, গত বছরের ১১ নভেম্বর চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিন ৭৬নং উত্তর বালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অগ্রণী ব্যাংক চাঁদপুরের সিনিয়র অফিসার মোঃ আলমগীর তপাদার। ওইদিন সকাল ১১টার দিকে ফুটবল মার্কার মেম্বার প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে ৮০/৯০ জন সমর্থক প্রতিদ্বন্দ্বী মুরগী মার্কার সমর্থকদের উপর হামলা করে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারগণ বাধা প্রদান করলে তাদের সাথে তারা মারমুখী আচরণ করে। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ব্যাপক সংঘর্ষের ও হামলার ঘটনা ঘটে এবং ভাংচুর হয়। এতে সরকারি কাজে বাধা প্রদান করা হয়। শুধু তাই নয়, কর্মকর্তাদের উপর হামলা করে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে ১৩৪/১৮৬/৩৩২/৩৫৩/৩৪ ধারা মোতাবেক সরাসরি কাজে বাধা ও সরকারি মালামাল ক্ষতি সাধনের অভিযোগ এনে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার আলমগীর তপাদার বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা রুজু করেন।
এ মামলার নামীয় আসামী হিসেবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর (ইন্টেলিজেন্স এন্ড অপারেশন) এনামুল হক চৌধুরী গতকাল ৩০ মে সোমবার দুপুরে জাহিদ মেম্বারকে তার নিজ এলাকা থেকে সঙ্গীয় ফোর্সসহ আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
জানা যায়, জাহিদ মেম্বারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। কিছু দিন পূর্বে ঢালিরঘাট এলাকার বাড়ির পুকুর পাড়ে থাকা ইউনিয়ন পরিষদের বেশ কিছু গাছ এই জাহিদ মেম্বার কেটে নিয়ে যায়।
পরে চেয়ারম্যান রফিকুল্যা পাটোয়ারী গাছ কাটার ঘটনা জানতে পেরে গাছগুলো পরিষদে জমা দিতে বললে রাতে সেই গাছ পরিষদে পাঠিয়ে দেয়। শুধু গাছ কাটা নয়, গত কিছুদিন আগে জাহিদ মেম্বার তার এলাকার সরকারি খাল দখল করে বেশ ক’টি দোকান নির্মাণ করে। মাটি সমবায় সমিতির নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ক’বছর আগে কোরবানির পশুর হাটে অবৈধভাবে পল্লীবিদ্যুতের খাম থেকে বিদ্যুৎ চুরি করে ব্যবহার করায় মামলা হলে সেই মামলায় সে জেল খেটেছে। চলতি বছরে জাটকা রক্ষায় জেলেদের বরাদ্দকৃত সরকারি চাল দেয়ার কথা বলে জেলেদের কাছ থেকে টোকেনের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা পরবর্তিতে মৎস্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন তদন্তে সত্যতা খুঁজে পেয়েছে।
এভাবে বহু অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। মেম্বারের গ্রেফতারের ঘটনায় এলাকাবাসী শুকরিয়া আদায় করেছে বলে এলাকার জনগণ সংবাদ কর্মীদের মুঠোফোনে জানান।