রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২২, ০০:০০

মেঘনা নদী থেকে উদ্ধারকৃত অজ্ঞাত ব্যক্তির বাড়ি ফরিদগঞ্জে
শামীম হাসান ॥

২২ মে রোববার বিকেলে চাঁদপুর পুরাণবাজার হরিসভা মন্দির সংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে উদ্ধারকৃত লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত ব্যক্তির নাম আবিদ মিয়া (৫৭)। তাঁর বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৬নং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম কাওনিয়া গ্রামের মোঃ আলী বেপারী বাড়ি। নিহত আবিদ মিয়া মৃত কেরামত মিয়ার ছেলে। উদ্ধারের পর মৃত ব্যক্তির পকেটে থাকা মুঠোফোন ও নোটিসের সূত্র ধরেই লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর নৌথানার সাব-ইন্সপেক্টর রেদওয়ান। তিনি আরও জানান, উদ্ধারকৃত লাশটি চাঁদপুর নৌপুলিশের পক্ষ থেকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মৃত আবিদ মিয়া ১৬ মে সকাল ১০টায় বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তারপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আজকে তিনি লাশ হয়ে ফিরে আসছেন।

খোঁজ না পেয়ে আবিদ মিয়ার স্ত্রী কুসুম বেগম ১৮ মে ফরিদগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।

২৩ মে সোমবার দুপুরে নিহত আবিদ মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্স যোগে চাঁদপুর থেকে লাশ আনার পর তার নিজ বাড়ির সামনে মসজিদের সম্মুখে দুপুর দুইটায় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

দাফনের পর আবিদ মিয়ার বড় বোনের ছেলে রবি চাঁদপুর কণ্ঠের এই প্রতিনিধিকে জানান, ১৬ মে সোমবার রাতে মামা আমাদের বাসায় আসবেন মুঠোফোনে জানিয়েছেন। পরে তিনি রাতে আমাদের বাসায় না আসায় আমার স্ত্রী রোকসানা মুঠোফোনে আসার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি রাতে আসবেন না বলে পরদিন সকাল ৭টায় আসবেন বলে জানান এবং তিনি তখন কোথায় আছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি তখন ঢাকার উত্তরায় আছেন বলে জানান। পরের দিন ১৭ মে মঙ্গলবার সকাল ৭টায় আমার বাসায় আসার কথা থাকলেও না আসায় মোবাইল ফোনে আমি তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে আর মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। নিহতের ভাগিনা রবি আরো বলেন, তাকে কল করে না পাওয়ায় এক পর্যায়ে আবিদ মিয়া নিখোঁজ হওয়ার পূর্বে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী তার ক্রয়কৃত উত্তরায় ৭ নাম্বার রোডে ৬নং বাড়ি ৬ তলা বিশিষ্ট ফ্লাটে খোঁজ নিতে গেলে সেখানে এ রকম কোনো বাড়ির হদিস পাননি। দীর্ঘ সময় খুঁজে না পাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কিনা সে সন্দেহে উত্তরার স্থানীয় হাসপাতালে খোঁজ নিয়েও এই নামের কোনো রোগীর হদিস পাওয়া যায়নি। হাসপাতালেও কোনো তথ্য না পেয়ে এক পর্যায়ে উত্তরা থানায় কর্মরত পুলিশের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, যেখান থেকে নিখোঁজ হয়েছে অর্থাৎ তার নিজ উপজেলা ফরিদগঞ্জ থানায় জিডি করার পরামর্শ দেয়।

পরবর্তীতে ফরিদগঞ্জ থানায় নিহতের স্ত্রীর জিডির সূত্র ধরে তদন্তের এক পর্যায়ে জানা যায়, নিহত আবিদ মিয়ার সর্বশেষ লোকেশন ১৬ মে কেরাণীগঞ্জে দেখানো হয়েছে। কিন্তু তার ভাগিনা বউ রোকসানার সাথে ওই রাতে ফোন কলে তিনি উত্তরায় আছেন বলে জানিয়েছিলেন। ১৬ মে রাতে নিহতের জানানো অবস্থান ও পুলিশের মোবাইল ট্রাকিংয়ে পাওয়া অবস্থান ভিন্ন হওয়ায় ঘটনা নতুন রহস্য জন্ম দিয়েছে। মোবাইল ট্রাকিংয়ে নিহতের সর্বশেষ অবস্থান ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ উপ-পরিদর্শক মশিউর (এসআই) জানিয়েছেন।

নিহতের বাড়িতে জনৈক ফিরোজের সাথে কথা হলে তিনি চাঁদপুর কণ্ঠের এই সংবাদকর্মীকে জানান, আমার চাচা ঢাকায় বাড়ি কিনবেন বলে গ্রামে তার পৈত্রিক অনেক সম্পত্তি বিক্রি করেছেন এবং ভিন্ন সময়ে তিনি ঢাকায় সম্পত্তি কিনেছেন বলে আমরা শুনেছি। কোথায় কিনেছেন তা কাউকে বলেননি। মাঝে মধ্যেই কে বা কারা বাড়িতে এসে তাকে নিয়ে যেতেন। কার সাথে যেতেন, কে ছিলো তারা-সে বিষয়ে তিনি কখনোই কাউকে কিছু বলেননি। একটা সময় শুনেছিলাম তিনিসহ ক’জন মিলে সমিতির মাধ্যমে সম্পত্তি কিনেছেন। তারাই তাকে কিছুদিন পরপর নিয়ে যেতেন গাড়িতে করে। কিন্তু তা আদৌ সত্য কি না সে বিষয়ে জানা নেই আমাদের।

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদ হোসেন জানান, যেহেতু চাঁদপুর নৌপুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছে এবং ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে, তাই বিষয়টি চাঁদপুর নৌথানা পুলিশই দেখবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়