রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০১ মে ২০২২, ০০:০০

হারিয়ে গেছে ঈদ কার্ড
শামীম হাসান ॥

একটা সময় ছিলো ঈদ এলেই প্রিয়জনকে ঈদ কার্ড দেয়ার ধুম পড়তো। ঈদুল ফিতরের আগে রমজানের ১০ থেকে ১৫ দিন যেতেই দোকানে কিংবা রাস্তার পাশের অস্থায়ী দোকানে দেখা মিলতো রঙ-বেরঙের ঈদ কার্ড। ঈদুল আজহার কার্ডগুলোর কোনো কোনোটিতে থাকতো গরুর ছবি সম্বলিত ঈদ মোবারক লেখা। বিভিন্ন কারুকাজের ঈদের শুভেচ্ছা সম্বলিত নানা আকৃতির এসব কার্ড প্রিয়জনকে দেয়া যেন ঈদের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলো।

কিছু ঈদ কার্ড খুললেই মিউজিক বেজে চমকে দিতো কার্ড গ্রহীতাকে। প্রকারভেদে সব শ্রেণির মানুষের সাধ আর সাধ্যানুযায়ী এসব কার্ড পাওয়া যেতো ২ টাকা থেকে শতাধিক টাকায়। নব্বই দশকতো বটেই, একুশ শতকের শুরুতেও ‘ঈদ’ আর ‘ঈদ কার্ড’ একে অপরের পরিপূরক হলেও এখন ‘ঈদ কার্ড’ যেন সেকেলে সংস্কৃতি। ফেসবুক, হোয়াটসআপ, টুইটারের ভিড়ে হারিয়ে গেছে ঈদ কার্ড। এ প্রজন্মের অনেকে জানেই না একসময় ঈদ কার্ড বলে কিছুর প্রচলন ছিলো।

সোনালী বা সাদা খামের উপর প্রিয়জনের নাম লিখে ঈদ কার্ড দেয়া সেই আনন্দের দেখা এখন আর মিলে না। ঈদ কার্ডের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিলো কার্ডের ভেতরে একটা পাশ খালি থাকতো, যেখানে মনের মাধুরী মিশিয়ে ছন্দে ছন্দে নিজের মত করে শব্দের গাঁথুনিতে জানানো হতো প্রিয় মানুষটিকে ঈদের শুভেচ্ছা। বয়স ভেদে সকল বয়সের মানুষদের মধ্যেই এর আনন্দ বহমান ছিলো। প্রাইমারি স্কুল পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের দেখা যেতো ২ টাকা মূল্যের কার্ড কিনে ক্লাসের প্রিয় বন্ধুটিকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজ বাড়িতে ঈদের দাওয়াত দিতে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এসব কার্ডের আদান-প্রদান বেশি করা হতো। সে সময় ঈদ কার্ড ঈদ আনন্দে নতুন মাত্রা সৃষ্টি করতো।

কালের বিবর্তনে আধুনিকায়নের ছোঁয়ায় ঈদ কার্ডের মাধ্যমে ঈদ শুভেচ্ছা জানানোর প্রচলন হারিয়ে গেছে পুরোদমে। এখন ফেসবুকের ম্যাসেজ এবং মোবাইলের এসএমএসই ঈদ কার্ডের জায়গা দখল করে নিয়েছে।

ঈদ কার্ড হারিয়ে গেলেও তার অস্তিত্ব এখনো আছে কোথাও কোথাও। পুরো ফরিদগঞ্জ বাজার ঘুরে কোথাও ঈদ কার্ড পাওয়া না গেলেও ফরিদগঞ্জে রশিদীয়া লাইব্রেরীতে দেখা মিলে কয়েক বছর আগের পুরানো কিছু ঈদ কার্ড। ঈদ উপলক্ষে সেগুলো বিক্রির আশায় বের করেছেন।

ঈদ কার্ড বিক্রি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে দোকানদার জানান, আগে এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে কিংবা প্রিয় মানুষদের ঈদ কার্ডের মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হতো। এখন সবাই মোবাইল টিপাটিপিতে ব্যস্ত। ফোনেই শুভেচ্ছা জানায়। তাই হারিয়ে যাচ্ছে ঈদ কার্ড।

ব্যক্তিগতভাবে এখন আগের মত ঈদ কার্ড না ব্যবহার হলেও অফিসিয়ালি অনেকেই ঈদ কার্ডের মাধ্যমেই শুভেচ্ছা জানান। তাই অফিসিয়াল শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে হলেও ঈদ কার্ডের অস্তিত্ব এখনও আছে। নতুন প্রজন্মের মাঝে আবার ফিরে আসুক ঈদ কার্ডের আনন্দ, আবার ঈদ হোক অনাবিল আনন্দময়-এমনটাই প্রত্যাশা নব্বই দশকের কার্ড বিনিময় করা মানুষদের।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়