প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ
ফরিদগঞ্জে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে জালিয়াতি!
ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মাঝে। ইতিমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী তাঁর স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ এনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে জানানোর সাথে সাথে আজ ৫ ডিসেম্বর রোববার প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ করবেন বলে তিনি জানান।
|আরো খবর
বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ৫ম ধাপের তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ জানুয়ারি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে অনুযায়ী ইতিপূর্বে প্রতিটি ইউনিয়নে তৃণমূলের বর্ধিত সভা সম্পন্ন হয়। এ সভার আলোকে তৃণমূলের জরিপ অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রদানের জন্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী এবং সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার গত ২৯ নভেম্বর যৌথ স্বাক্ষর দিয়ে ১৩টি ইউনিয়নের প্রার্থী তালিকা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি বরাবর পাঠিয়ে দেন। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরকৃত মূল তালিকা পরিবর্তন করে ভিন্ন একটি তালিকা কেন্দ্রে জমা দেয়ার অভিযোগ উঠে। মনোনয়ন বোর্ডের কাছে জমা দেয়া উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের দুটি তালিকা পাওয়া গেছে। তালিকা যাচাই করে দেখা গেছে, তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় নাম্বারে থাকা নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। তালিকা দুটিতে সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকারের স্বাক্ষর অবিকল থাকলেও সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারীর স্বাক্ষর দু রকম।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী জানান, যেই চিঠিতে তৃণমূলের জরিপ অনুসারে ১৬নং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আঃ কাদের খোকনকে এক নাম্বারে রেখে তালিকা প্রদান করা হয়েছে, সেই তালিকায় তিনি নিজে স্বাক্ষর দিয়েছেন। যার প্রমাণ তার কাছে রয়েছে। কিন্তু সেই তালিকা পরিবর্তন করে আরেকটি তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয় বলে তিনি জেনেছেন। পরে তিনি ওই কপি সংগ্রহ করে দেখেছেন সেটিতে তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। এছাড়া আরো কয়েকটি ইউনিয়নে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তাই তাৎক্ষণিক তিনি দলের যুগ্ম-সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনসহ ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছেন। সর্বশেষ গতকাল ৪ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি তিনি অবহিত করার চেষ্টা করেছেন। সে অনুযায়ী আজ ৫ ডিসেম্বর রোববার সকালে তিনি স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রার্থী তালিকা পরিবর্তন করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর লিখিত আবেদন করবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার জানান, কে বা কারা এটা করেছে তিনি তা জানেন না। তার কাছ থেকে অনেকেই এই তালিকা নিয়েছেন।
এদিকে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তৃণমূলের প্রার্থী জালিয়াতির বিষয়ে রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোয়ন প্রত্যাশী আঃ কাদের খোকন ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইসকান্দার আলী জানান, এ ধরনের জালিয়াতি আমরা আশা করি না। এভাবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দলের নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমে যাবে। যারা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে তাদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন।