শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০৯

রামগঞ্জে আন্দোলনকারী প্রাথমিকের ৭ শিক্ষককে শোকজ

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি)
রামগঞ্জে আন্দোলনকারী প্রাথমিকের ৭ শিক্ষককে শোকজ

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধি পরিপন্থি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় আন্দোলনকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তাদেরকে জবাব দেওয়ার জন্যে নির্দেশ দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুরে রামগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) ফাতেমা ফেরদৌসীর সই করা আলাদা চিঠি ওই শিক্ষকদের দেওয়া হয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে বেতন দেওয়াসহ ৩ দফা দাবিতে লক্ষ্মীপুরসহ দেশব্যাপী আন্দোলন করছেন। এই ৭ শিক্ষকও আন্দোলনে সম্পৃক্ত রয়েছেন।

শোকজপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন : রামগঞ্জ উপজেলার নাগমুদ বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল বাশার, সহকারী শিক্ষক প্রিয়াংকা রাণী ভৌমিক, ফেরদৌসি বেগম, জয়পুরা এসআরএমএস সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুকবুল হোসেন, সহকারী শিক্ষক নুরুন নাহার, মেহেদী হাসান ফরিদ ও মর্জিনা আক্তার।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, শিক্ষক আবুল বাশার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা ও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত প্রেস ব্রিফিং করেছেন৷ এটি সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিপরিপন্থি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ৩ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক (ডিসি) বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুকবুল হোসেন, সহকারী শিক্ষক নুরুন নাহার, মেহেদী হাসান ফরিদ ও মর্জিনা আক্তারকে শোকজ করা হয়।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় শিক্ষক প্রিয়াংকা রাণী ভৌমিক ও ফেরদৌসি বেগমকে শোকজ করা হয়। তারাও সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিপরিপন্থি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন। তারা ৩য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা বর্জন করেন। এতে কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা জীবনে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

আবুল বাশারকে দেওয়া শোকজপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ (পরিমার্জিত সংস্করন) অনুযায়ী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার সংক্রান্ত আদেশ অমান্য করে আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পরীক্ষা বর্জণের ঘোষণা দেন, যা সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিপরিপন্থি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আপনি ১ ডিসেম্বর কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত প্রেস ব্রিফিং করেছেন যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি ২২ এর পরিপন্থি। আপনি ২ ডিসেম্বর ৩য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা বর্জন করেছেন, এতে কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা জীবনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চারজন শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, নোটিশ হাতে পেলে জবাব দিবেন।

রামগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা ফেরদৌসী বলেন, শোকজপ্রাপ্ত শিক্ষকরা সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিপরিপন্থি ও দায়িত্ব কর্তব্য পালনে চরম অবহেলা করছেন। সরকারি আদেশ নির্দেশ অমান্যের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর কেনো সুপারিশ করা হবে না, তার গ্রহণযোগ্য লিখিত জবাবের জন্য ৩ কর্মদিবসের মধ্যে আমার কাছে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন দেওয়াসহ ৩ দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে তিন লাখ সহকারী শিক্ষকের ‘লাগাতার’ কর্মবিরতি চলছে। গত ২৭ নভেম্বর থেকে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কয়েকটি সংগঠন গত ১ ডিসেম্বর থেকে কর্মবিরতি এবং ৩ ডিসেম্বর থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অবহিত করেন।

ডিসিকে /এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়