শনিবার, ০৩ মে, ২০২৫  |   ২৫ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

ব্যতিক্রম আয়োজনেই সম্ভব টেকসই অস্তিত্ব

অনলাইন ডেস্ক
ব্যতিক্রম আয়োজনেই সম্ভব টেকসই অস্তিত্ব

আমাদের সমাজে নানান জন নানান সংগঠন গড়ে তোলে। কিন্তু এসব সংগঠনের অন্তত নব্বই শতাংশ গতানুগতিক কাজে ব্যাপৃত থাকে। সম্পূর্ণ নতুন, উদ্ভাবনীমূলক ও ব্যতিক্রম কাজ করে থাকে হাতে গোণা কিছু সংগঠন। আর সেটা করেই এমন সংগঠন হয় আলোচিত, প্রশংসিত ও টেকসই অস্তিত্বের আলোকে উদ্ভাসিত। এমন একটি সংগঠন হচ্ছে মধ্য মনোহরখাদী ছালেহীয়া পাঠাগার ও যুব সংগঠন। এ সংগঠনটি ব্যতিক্রম আয়োজনে ক'জনের ওমরা পালনের উদ্যোগ এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সংগঠনটি নিয়ে সোমবার চাঁদপুর কণ্ঠে মোঃ আবদুর রহমান গাজী পরিবেশন করেছেন বিশেষ সংবাদ, যেটি অনেক মনোযোগী পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত মনোহরখাদী গ্রামের মধ্য মনোহরখাদী বায়তুন নূর জামে মসজিদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই সংগঠন। এ মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওঃ মোঃ সুলতান মাহমুদ যুব সমাজকে অনৈসলামিক কার্যকলাপ ও ইসলামী আদর্শে উজ্জীবিত করতে ৬০ সদস্য নিয়ে ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন সংগঠনটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্যে শিক্ষা উপকরণ (খাতা, কলম) দিয়ে সহায়তা করে চলেছে সংগঠনটি। সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার ফলে গ্রামের যুব সমাজ শিক্ষাগ্রহণে উদ্যোগী হচ্ছে। তারা মাদক থেকে নিজেদের বিরত রাখতে সক্ষম হচ্ছে এবং অনৈসলামিক কার্যকলাপ থেকে মুক্ত থাকছে। এছাড়া যৌতুকমুক্ত বিবাহ অনুষ্ঠানে সংগঠনটি উৎসাহ প্রদান করে গ্রামবাসীর কাছ থেকে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জনের সুবিধার্থে সংগঠনটির পাঠাগারের বেশ পরিচিতি রয়েছে। যেখানে ২শ’টিরও বেশি বিভিন্ন ধরনের বই সংরক্ষণ করা হয়েছে। গ্রামের যুব ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই পাঠাগারে এসে জ্ঞানার্জন করার সুযোগ লাভ করছে। এ পাঠাগারের সদস্যরা যুবকদের সুস্থ ও সুন্দর জীবন গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করছেন।

২০২০-২১ সালে করোনাকালীন সময়ে মনোহরখাদী গ্রামের অসহায় দুঃস্থ পরিবারের মাঝে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করে মানুষের পাশে দাঁড়ায় এই সংগঠনটি। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মাওঃ মোঃ সুলতান মাহমুদ মসজিদটির খতিবের পাশাপাশি ফরিদগঞ্জ চরপাড়া মোহাম্মাদীয়া তৈয়্যিবিয়া আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক, যিনি ধারণ করেন উদ্ভাবনী চিন্তা-চেতনা। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ সদস্য জনপ্রতি ১ হাজার টাকা জমা করে ওমরার কার্যক্রম শুরু করেন তার পরামর্শে। সংগঠনের সদস্যদের জমানো টাকা থেকে এবার ৩ জন সদস্যকে ওমরায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এমন সিদ্ধান্তের আলোকে গত ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ রাত ৯টায় সংগঠনের তিনজন সদস্য নিজেরা ওমরায় না গিয়ে তাদের পিতাকে ওমরায় পাঠান। যুবকদের এমন কার্যক্রমে অভিভাবক মহলে আনন্দ বিরাজ করছে এবং এলাকায় সাড়া জেগেছে।

একটি সংগঠনের সদস্যরা মাসিক সঞ্চয়ের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে নিজে কিংবা পিতা/ মাতাকে ওমরায় পাঠানোর কাজটি যে কতো বড়ো কাজ এবং ব্যতিক্রম ও উদ্ভাবনীমূলক সেটি সাধারণ বর্ণনায় ফুটিয়ে তুলতে গেলে কম হয়ে যায়। কারণ, কাজটি প্রশংসনীয় নয় প্রশংসাব্যঞ্জক, কেবল দৃষ্টান্তমূলক নয়, অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। মসজিদের ইমাম/ খতিবগণ ইচ্ছা করলে যে মসজিদকেন্দ্রিক সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে উল্লেখযোগ্য কাজ করে স্বীয় গ্রহণযোগ্যতা নির্ণয় করে নেতৃত্বের সার্বজনীনতায় উপনীত হতে পারে, মধ্য মনোহরখাদী ছালেহীয়া পাঠাগার ও যুব সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মোঃ সুলতান মাহমুদ তাঁর উৎকৃষ্ট প্রমাণ। আমরা তাঁর কাছ থেকে আরো উদ্ভাবনীমূলক ও উদ্দীপনামূলক কার্যক্রম প্রত্যাশা করছি এবং তাঁর সংগঠনটির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি, অগ্রগতি, সর্বোপরি টেকসই অস্তিত্ব প্রত্যাশা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়