রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

ভাড়া দেয়া হয়েছে কি গ্যালারির নিচের ঘরসহ সামনের মাঠ?

অনলাইন ডেস্ক
ভাড়া দেয়া হয়েছে কি গ্যালারির নিচের ঘরসহ সামনের মাঠ?

কোনো সড়কের পাশে বিদ্যমান ঘর যদি কোনো মালিক কাউকে ভাড়া দেয়, তাহলে তিনি ঘরই ব্যবহার করবেন, ঘরের সামনের ফুটপাত ও সড়ক নয়। কিন্তু বাস্তবে কী দেখা যায়? অনেক ভাড়াটিয়া ভাড়াকৃত ঘরের সামনে ফুটপাত থাকলে তো সেটা ব্যবহার করেনই, দখলও করে বসেন। পারলে সড়কও ব্যবহার করার চেষ্টা করেন। চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের সামনে দিয়ে গেলে ভাড়াটিয়া, এমনকি মালিকও কীভাবে ফুটপাত ও সড়ক দখল করে ব্যবসা করছে তার নিকৃষ্ট নমুনা দেখা যায়। এই শহরের আরো অনেক স্থানের চিত্র একই রূপ। মাঝে মধ্যে পৌরসভা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে এমন দখলবাজদের শায়েস্তা করে। কিছু সময়ের ব্যবধানে যথা পূর্বং তথা পরং হয়ে যায়। সড়কসমূহের পাশের এই চিত্র এখন স্টেডিয়াম পাড়াতেও দেখা যাচ্ছে। এটা নিয়ে মঙ্গলবার চাঁদপুর কণ্ঠের ক্রীড়াকণ্ঠ পাতায় ছাপা হয় একটি প্রতিবেদন। যাতে লিখা হয়েছে, স্টেডিয়াম গ্যালারির নিচে বিদ্যমান ঘর ভাড়া নিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান কীভাবে সম্মুখস্থ আউটার স্টেডিয়ামের মাঠ সীমাহীনভাবে ব্যবহার করে খেলোয়াড়দের নিকট মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই কথা উঠেছে, স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ তথা চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা শুধু ঘর ভাড়া দিয়েছে, না সম্মুখস্থ মাঠসহ ঘর ভাড়া দিয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ভুক্তভোগীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি জেলা প্রশাসকের আশুদৃষ্টি কামনা করেছেন, যাতে তিনি দয়ার্দ্র হয়ে জরুরি ব্যবস্থাগ্রহণ করতে পারেন।

‘জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন অভিভাবকগণ ॥ চাঁদ ট্রেডার্সের সার্ভিসিং সেন্টার : আতঙ্কিত অনুশীলনকারী খেলোয়াড়রা’ শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম লিখেছেন বিস্তারিত। এর সারসংক্ষেপ হচ্ছে : চাঁদপুর জেলা শহরে স্টেডিয়াম ছাড়া খেলাধুলা ও হাঁটা-চলার জন্যে স্টেডিয়ামের পাশেই রয়েছে আউটার স্টেডিয়াম। এই আউটার স্টেডিয়ামে দুপুর ১টার পর থেকে বিভিন্ন বয়সী ফুটবলার ও ক্রিকেটারগণ নিয়মিত অনুশীলন করে থাকেন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেই বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ নিয়মিত হাঁটা ও ব্যায়ামসহ বাচ্চাদের নিয়ে চলে আসেন আউটার স্টেডিয়ামে। সপ্তাহের শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন মাঠে গেলেই দেখা যাবে কেউ নেটের মধ্যে, আবার কেউ নেটের বাইরে এসে ফুটবল ও ক্রিকেট নিয়ে অনুশীলন করছেন। কিন্তু মোটরসাইকেল চালানোর জন্যে খেলোয়াড়রা ঠিকমতো অনুশীলন করতে পারছেন না। কিছুক্ষণ পর পরই স্টেডিয়ামের গ্যালারির নিচে ভাড়াকৃত চাঁদ ট্রেডার্সের সার্ভিসিং সেন্টারের কর্মচারীদের দৌরাত্ম্যে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন খেলোয়াড়রা। এই সেন্টারের কর্মচারী রিফাতসহ বেশ ক’জন কিছুক্ষণ পরপরই অরুণ নন্দী সুইমিং পুলের গেট থেকে শুরু করে একেবারে সুইমিংপুল ও খেলার মাঠে অনেক উচ্চস্বরে হর্ন বাজিয়ে খুব দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালান। উচ্চস্বরে হর্ন এবং মোটরসাইকেলের বিকট আওয়াজে অনুশীলনকারী খেলোয়াড়দের খেলা এবং অনুশীলনে বিঘ্ন ঘটছে। আউটার স্টেডিয়াম লাগোয়া সোনালী অতীত ফুটবল একাডেমী ও ক্লেমন চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমির খেলোয়াড়রা নিয়মিত অনুশীলন করেন এখানে। এই একাডেমির মধ্যে বিশেষ করে ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমিতে বিভিন্ন প্রাইমারি ও কিন্ডারগার্টেনে পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ জেলা শহরের বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়া নারী ও পুরুষ ক্রিকেটাররা অনুশীলন করেন। শিশুদের অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের অনুশীলনের জন্যে মাঠের পাশে বসে থাকেন। মোটরসাইকেল চালকদের হর্ন এবং দ্রুত গতিতে চালানোর কারণে তারা ভয়ে থাকেন।

মাঠে অনুশীলনকারী ক্রিকেটারদের অভিভাবকরা এ প্রতিবেদককে বলেন, দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন বয়সী মোটরসাইকেল চালক ও সার্ভিসিং সেন্টারের কর্মচারীরা দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে আমরা ভয়ে থাকি, আর বাচ্চারাতো অনেক সময় ভয়ে মাঠে আসতে চায় না। নেটের ভেতর ক্রিকেট খেললেও উচ্চ আওয়াজের কারণে তারা ঠিকমতো অনুশীলনে মনোযোগী হতে পারছে না। আমরা এ বিষয়টিতে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। শনিবার সন্ধ্যায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবুর সাথে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদকের আলাপকালে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কঠিন ব্যবস্থা নিবো। খেলা চলাকালীন সময় মোটরসাইকেল ট্রায়াল দিবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যাবে না।

আমরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। তিনি চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে খেলা কিংবা খেলার অনুশীলন চলাকালীন উচ্চ আওয়াজে হর্ন বাজিয়ে মোটরসাইকেলের বেপরোয়া চলাচল নিয়ন্ত্রণ কিংবা বন্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে কোনো চাপের মুখেও শেষ পর্যন্ত কঠিন তথা দৃঢ় থাকবেন বলে আমরা আশা রাখি। তারপরও আমাদের কথা আছে, স্টেডিয়ামের গ্যালারির নিচে দোকানঘর ভাড়া দেয়ার জন্যে ভাড়াটিয়া নির্বাচনে কি চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার লিখিত/ অলিখিত কোনো নীতিমালা আছে? যদি থাকতো, তাহলে নিশ্চয়ই আউটার স্টেডিয়ামের পাশে কোনো দোকানঘর মোটরসাইকেল সার্ভিস সেন্টারের জন্যে ভাড়া দেয়া হতো না। আমরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, যদি উপরোল্লিখিত মোটরসাইকেল সার্ভিস সেন্টারের কোনো গাড়ির ট্রায়ালের জন্যে অনুশীলনরত কোনো খেলোয়াড় দুর্ঘটনার শিকার হন, তাহলে তার দায় কে নেবেন? তিনি সভাপতি হিসেবে আইনের মারপ্যাঁচে দায় এড়াতে পারলেও কি বিবেকের কাছে কিংবা সাধারণ্যে সেটা এড়াতে পারবেন?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়