প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
আঃ ছাত্তার গাজীর পাশে দাঁড়ানো উচিত

প্রতিবেদনটি অনেক বড় নয়, একেবারে সংক্ষিপ্ত। কিন্তু পড়ার মতো, নজর কাড়ার মতো। গতকাল সচিত্র প্রতিবেদনটি ছাপা হয় চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পাতায়। লিখেছেন সোহাঈদ খান জিয়া। ‘হার না মানা আঃ ছাত্তার গাজী’ শিরোনামে প্রতিবেদনটিতে লিখা হয়েছে, আঃ ছাত্তার গাজী (৪০) জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। ভিক্ষাবৃত্তি নয়, রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। স্ত্রী, ২ মেয়ে ও ১ ছেলে নিয়ে তার সংসার। ভাড়া রিক্সা চালিয়ে কোনো রকমে তার সংসার চলে। তিনি জানান, একটা রিকশা কিনতে পারলে আয় আরো ভালো হতো। আমাদের সমাজে অনেক দানশীল ব্যক্তি রয়েছেন, যাদের একটু সহায়তায় প্রতিবন্ধী আঃ ছাত্তার পেতে পারেন একটি রিকশা। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে।
আমাদের দেশে ধনাঢ্য/ উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যারা প্রতিবন্ধী, তাদের অধিকাংশ স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ জীবনযাপনের সুযোগ পায়, বাকিরা পরিবার থেকে ছিটকে পড়ে এবং বহবিধ বঞ্চনার শিকার হয়। আর মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, দরিদ্র, হতদরিদ্র পরিবারের প্রতিবন্ধী সদস্যদের অধিকাংশ ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নেয় কিংবা বেছে নিতে বাধ্য হয়; কেউ কেউ অন্যের করুণার শিকার হতে হয় বা গলগ্রহ হয়ে থাকতে হয়। জন্মগত প্রতিবন্ধী, রোগ বা দুর্ঘটনার কারণে প্রতিবন্ধীদের মধ্যে নগণ্যসংখ্যকই ভিক্ষাবৃত্তি ও অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা এড়াতে স্বাবলম্বী হবার কষ্টকর প্রয়াস চালায়। এদেরই একজন চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের আঃ ছাত্তার গাজী। তিনি রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে নিজের কেনা রিক্সা চালিয়ে নয়, অন্যের বানানো রিক্সা ভাড়া নিয়ে। তার ইচ্ছা বা অভিমত, নিজে একটি রিক্সা কিনে চালাতে পারলে তার আয় বাড়তো, সংসার ভালো চলতো। আমরা তার এই ইচ্ছা পূরণে জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, সদর উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, সমাজসেবা অধিদপ্তর, সমাজসেবামূলক সংগঠন সহ যে কোনো চিত্তবান বিত্তবান ব্যক্তিকে তার পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। আমরা মনে করি, যে কোনো একটি/ একজনের উদ্যোগ আঃ ছাত্তার গাজীকে পুরোপুরি স্বাবলম্বী করতে ও আর্থিক সচ্ছলতা প্রদানে বিরাট সহায়ক হতে পারে। প্রতিবন্ধিত্বের দোহাই দিয়ে সহজভাবে ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নেয়া মানুষগুলোর জন্যে আঃ ছাত্তার গাজী হোক দৃষ্টান্ত--এটা শুধু আমাদের নয়, সমাজসচেতন ব্যক্তিমাত্রেরই প্রত্যাশা।