রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৫ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

নির্বাচন নিয়ে বাগাড়ম্বর ও বাস্তবতা

অনলাইন ডেস্ক
নির্বাচন নিয়ে বাগাড়ম্বর ও বাস্তবতা

অবশেষে গত ৭ জানুয়ারি ২০২৪ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। যেভাবেই হোক, ভোটগ্রহণের দিনটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বড়ো ধরনের ঘটনায় কলুষিত হয়নি। নির্বাচনবিরোধীরা ভোট বন্ধ করতে নানামুখী তৎপরতা চালালেও কাঙ্ক্ষিত সফলতা পায় নি। সেজন্যে ভোট বন্ধ হয়নি।

কম ভোটারের উপস্থিতিতে ভোটগ্রহণ সম্পন্নের পর শতাংশ যা-ই বলা হোক না কেন, এর সত্যাসত্য যাচাই না করে এটা বলা যায়, ভোটারদের কেন্দ্রে আনার ব্যাপারে আওয়ামী লীগসহ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কর্মীদের দৃশ্যমান তৎপরতা ছিলো না। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনকেন্দ্রিক উৎসবমুখরতা সৃষ্টি ও প্রদর্শনে সক্ষম হলেও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাওয়া এবং ভোটকেন্দ্রে আনার ব্যাপারে যথাযথ তৎপর ছিলো না। ওরা মিছিল, গান গাওয়াসহ বাহ্যিক কিছু তৎপরতা দেখালেও তাদের কেন্দ্রীয় সভাপতির নির্দেশনানুযায়ী হুবহু কাজ করে নি। আর আওয়ামী লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের গা এলিয়ে দেয়া ভাবের কথা না-ই বললাম। সেজন্যে আওয়ামী লীগসহ আওয়ামী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতলেও নিখুঁত জেতার তৃপ্তিটুকু পুরোপুরি গলাধঃকরণ করতে পারেন নি। আর তাতে নির্বাচনবিরোধীরা কথা বলার সুযোগ পেয়েছে।

নির্বাচন নিয়ে বাগাড়ম্বর কে না করেছে? নির্বাচনবিরোধীরা আতঙ্ক সৃষ্টিতে সক্ষম হলেও বাগাড়ম্বর কি কম করেছে ও করছে? কর্মসূচির নামে যতোটুকু বলে, ততোটুকু বাস্তবায়নে কি পারঙ্গমতা প্রদর্শন করতে পারছে? বস্তুত এই না পারার পক্ষে তারা যতোটুকু বলে, তাতেও বাগাড়ম্বর হচ্ছে। আর নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীরাও বাগাড়ম্বর করছে। ফরিদগঞ্জে এক প্রার্থী বাগড়ম্বরের মাধ্যমে নিজেকে এমনভাবে তুলে ধরেছেন যে, তাতে মনে হয়েছে, তিনিই সর্বোত্তম ও সবচে' যোগ্য প্রার্থী এবং সবচে' বেশি ভোট পাবেন। কিন্তু বাস্তবতায় তিনি জামানত টেকানোর মতো ভোটও পেলেন না। আবার কোনো প্রার্থী জয়ের ব্যাপারে অতি বিশ্বাসী হয়ে আবোলতাবোল কথা বলেও সফলতা দেখাতে পারলেন না। হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি ও মতলব উত্তর-দক্ষিণে কয়েক প্রার্থীও করলেন তা-ই। কিন্তু ভোটে চমক দেখাতে পারলেন না।

নির্বাচনে বাকচাতুর্য, বাক্যবাণ, বাগাড়ম্বর যেটাই বলি না কেন, সেটা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু পক্ষ-বিপক্ষ উভয়ই যদি বাস্তবতা থেকে বেশি দূরে থাকেন, তাহলে নিরীহ সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়? আপাত দৃষ্টিতে যেটা অসম্ভব দাবি, সেটা আদায়ে বিরোধী পক্ষের যে শক্তি দরকার, সেটা প্রদর্শন করতে হয়। সেটা না করলে সিংহ ও বাঘের ন্যায় গর্জনও বিড়ালের মিউমিউ ডাকের মতোই শোনায়। আসলে বাস্তবতার চেয়ে কৃত্রিমতার প্রলেপে ঢাকা পড়ছে অনেক কিছু। আর ক্ষমতায় যাওয়াটাই যেনো মুখ্য-সরকারের পক্ষাবলম্বনকারী ও সরকারবিরোধী উভয়েরই। সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধা, সুখ-দুঃখকে পুঁজি করে কোনো পক্ষই যেভাবে তাদেরকে কাছে ভিড়ানো কিংবা কাজে লাগানোর কথা, সেভাবে পারছে না। সিরিয়াসনেসের পরিবর্তে শৈথিল্যই কার্যত দৃশ্যমান। আর একটা বিষয় স্পষ্ট, সেটা হচ্ছে উভয় পক্ষেই তাড়াহুড়ো, গোঁজামিল ও মতদ্বৈধতা। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নেই কারোরই। শুধু আছে বাগাড়ম্বর আর বাগাড়ম্বর...

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়