প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

২০০২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০০৪ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চাঁদপুরে দশম পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন মোঃ বখতিয়ার আলম। তিনি চাঁদপুর শহরে কমিউনিটি পুলিশিং, চাঁদপুর-এর নৈশকালীন টহল কার্যক্রমে সন্তুষ্ট হয়ে বলেছিলেন, দিনের চাঁদপুরের চেয়ে রাতের চাঁদপুর অধিক নিরাপদ। তিনি চাঁদপুর থেকে চলে গেছেন ১৯ বছর ৯মাস হয়ে গেলো। অথচ তাঁর কথার সত্যতা রয়ে গেলো। এখনও দিনের চাঁদপুর এখানকার বাসিন্দাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী নিরাপদ হয়নি। রাতের বেলা চাঁদপুর শহরে চুরির হার অনেক কমে আসলেও দিনের বেলা চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও না কোথাও ঘটে থাকে। এসব কাজে সংশ্লিষ্টদের সবাইকে ধরাও যাচ্ছিল না। মাঝেমধ্যে কেউ ধরা পড়লেও তার আশাব্যঞ্জক ফলোআপ হচ্ছিল না। অবশেষে একটি ঘটনায় দিনের চুরি রোধে পুলিশের করণীয় নির্ধারণে সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণে নবাগত পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনা প্রাপ্তির আশা উঁকিঝুঁকি মারতে শুরু করছে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন।
সেই ঘটনা নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠে গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে একটি সংবাদ। 'চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে দুই নারী চোর আটক' শিরোনামের সংবাদে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর শহরের একটি বিল্ডিংয়ে ঢুকে চুরি করে পালানোর সময় দুই নারী চোরকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। ১৬ অক্টোবর সোমবার দুপুরে চেয়ারম্যান ঘাট এলাকার দক্ষিণ জিটি রোডস্থ জনৈক আবুল কাশেমের হাজী ভিলার ৪র্থ তলার দুই বাসায় এ ঘটনা ঘটে। আটককৃতরা হলেন রিতা আক্তার (৩৫) ও মীম আক্তার (২৫)। তাদের বাড়ি শরীয়তপুর জেলায় বললেও ঢাকার কমলাপুর এলাকা থেকে এসেছে বলে পুলিশ ও স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে তারা। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি করার সরঞ্জাম রেঞ্চু, স্ক্রু ড্রাইভার, অজ্ঞান করার মলম জাতীয় পদার্থসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। তারা পেশাদার নারী চোর চক্রের সদস্য বলে ধারণা স্থানীয়দের। জানা যায়, দক্ষিণ জিটি রোডের হাজী ভিলার চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া রিনা আক্তার (৪২) ও দুলাল খান (৪৫)-এর বাসার তালা ভেঙ্গে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালানোর সময় সিসিটিভিতে এ দৃশ্য দেখে বাড়ির লোকজন এদের ধরে ফেলে এবং উত্তম মধ্যম দেয়। খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল উপস্থিত হয় এবং ওই দুই নারী চোরকে জনতার রোষানল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শেখ মুহসীন আলম বলেন, আটক দুজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং তাদের সাথে জড়িত চোর চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে।
আমরা দিনের বেলা চাঁদপুর শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে যে চোর চক্র নানান কৌশলে চুরি করে, সেই চক্রকে ব্যাপক তদন্ত ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে চিহ্নিত ও আটক করার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে ভেবে দেখবার জন্যে নবাগত চৌকষ পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএমণ্ডএর সুদৃষ্টি কামনা করছি। কারণ, দিনের চুরি চাঁদপুরের মানুষের অনেক উদ্বেগ ও কষ্টকর যন্ত্রণার বিষয়। দিনের চুরি বন্ধের সাথে সাথে ভোর বেলা মোটরসাইকেলধারী ছিনতাইকারীর উপদ্রব বন্ধের উপায় নিয়ে কিছু করা গেলে চাঁদপুর অনেক শান্তিপূর্ণ জনপদ হিসেবে খ্যাতি পাবে। রাজনৈতিক সহিংসতামুক্ত চাঁদপুরে যদি দিনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপকে ফলপ্রসূ করা যায়, তাহলে সাধারণ্যে স্বস্তির বাতাস যে বইবে, সেটি দৃঢ়তার সাথে বলা যায়।