শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫  |   ৩২ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোটার তালিকা করা কি খুবই কষ্টকর?
অনলাইন ডেস্ক

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের একটি সংবাদ অধিকাংশ পাঠকের নজর কেড়েছে। সংবাদটির শিরোনাম হয়েছে ‘কবরবাসী ভোট দিবেন ফরিদগঞ্জে মাদ্রাসার নির্বাচনে?’ সংবাদটিতে প্রবীর চক্রবর্তী লিখেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে তফসিল ঘোষণা করে ভোটের তারিখ, প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেলো গোড়ায় গলদ। মৃত, ভুয়া এবং অবৈধ লোকজনকে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করে সকল কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কড়ৈতলী কেএ আলিম মাদ্রাসায়। মৃত ও ভুয়া ভোটারের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি হাতেনাতে ধরিয়ে দেয়ার পর স্বীকার করেছেন মাদ্রাসা অধ্যক্ষ। ইতিমধ্যেই মোহাম্মদ মাসুদ আলম নামে এক অভিভাবক বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, কড়ৈতলী কেএ আলিম মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন আগামী ২ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়। সে লক্ষ্যে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচনের জন্যে প্রিসাইডিং অফিসারও নির্ধারণ করে ফেলেছে। কিন্তু ভোটার তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহমুদ খান শান্তর পিতা আবু সাঈদ খান গত তিন বছর পূর্বে মারা গেলেও তাকে মাদ্রাসার নির্বাচনে ভোটার বানানো হয়েছে। একইভাবে নবম শ্রেণির আনিকা আক্তারের বাবা মৃত জাকির হোসেনকে, আলিম প্রথম বর্ষের শারমিন আক্তারের বাবা মৃত মোস্তফা ছৈয়ালকে, আলিম ২য় বর্ষের সাইফুল ইসলামের বাবা মৃত অলিউল্লাকে ভোটার বানানো হয়েছে। একইভাবে রেজিস্ট্রেশন না থাকলেও আলিম প্রথম বর্ষের পান্না আক্তারের বাবা জাকির হোসেন বেপারীকে, শামছুন্নাহারের বাবা মাহবুবুর রহমানকে ভোটার বানানো হয়েছে। সবেমাত্র ভর্তি হয়েছে এমন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদেরও ভোটার বানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করা অভিভাবক মোহম্মদ মাসুদ আলম বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষাকে আমরা গ্রামের মানুষ সম্মানের চোখে দেখি। একই সাথে শিক্ষকদেরও। কিন্তু তারা নিজেদের মতো করে নির্বাচনের জন্যে কবরবাসীদেরও ভোটার বানিয়ে কার্য হাসিল করবেন তা মেনে নেয়া যায় না। সোমবার দুপুরে সরেজমিন কড়ৈতলী কেএম আলিম মাদ্রাসায় গিয়ে অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামকে ভুয়া, মৃত ও অবৈধ ভোটারের বিষয়টি জানানোর পর তিনি কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে মৃত অভিভাবককে ভোটার বানানো, ভুয়া ও অবৈধ ভোটারের বিষয়টি স্বীকার করেন। এ সময় তিনি বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য প্রতিটি ক্লাসে এক সপ্তাহ ধরে বলার পর, নোটিস বোর্ডে টানানোর পর এ ঘটনা ঘটেছে। আমি ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থাগ্রহণ করবো। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, ওই মাদ্রাসার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়টি তিনি জানেন। তবে অভিভাবকের দেয়া অভিযোগের কপি তিনি হাতে পান নি।

ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনের জন্যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ভোটার তালিকা প্রণয়ন খুব কষ্টকর কাজ বলে মনে করার সুযোগ নেই। তারপরও ফরিদগঞ্জের কড়ইতলী কেএ আলিম মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তথা অধ্যক্ষ মৃত, ভুয়া ও অবৈধ লোকজনের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে যে কাণ্ডটি করেছেন--সেটি সংগত কারণে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তিনি ভুল স্বীকার করলেও এটি তিনি ইচ্ছায় না অনিচ্ছায় করেছেন সেটি কিন্তু বিচার্য বা তদন্তযোগ্য বিষয়। আমরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের করণীয় কী হতে পারে সেটি নিয়ে ভাববার অনুরোধ জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়