প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
চতুরঙ্গের পাঁচদিনব্যাপী জাতীয় ইলিশ উৎসব শুরু
এ বছর আমরা চেষ্টা করবো বিদ্যমান লোকবল দিয়েই মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে : জেলা প্রশাসক
‘জাটকা এবং মা ইলিশের পাশে, আমরা আছি প্রতিটি নিঃশ্বাসে’ স্লোগানকে সামনে রেখে গতকাল শুরু হলো চতুরঙ্গের ১৪তম জাতীয় ইলিশ উৎসব চাঁদপুর-২০২২। সন্ধ্যায় গোলটেবিল বৈঠকে মুখ্য আলোচক ছিলেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের মহাসচিব হারুন আল রশীদের উপস্থাপনায় বিশেষ আলোচক ছিলেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার)। স্বাগত বক্তব্য রাখেন দেশের খ্যাতিমান পোশাক রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান ইয়র্ক ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী মোঃ সেলিম খান।
|আরো খবর
চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদারের সভাপ্রধানে বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মৎস্যজীবী নেতা শাহ আলম মল্লিক ও মানিক দেওয়ান। এ বৈঠকে বিশিষ্ট সংস্কৃতিজন অনুপম বিশ্বাসকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান তাঁর বক্তব্যে বলেন, চাঁদপুর ইলিশের বাড়ি হিসেবে স্বীকৃত। ইলিশের বাড়ি বললে সবাই চাঁদপুরকে চেনে। আগামী ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও মা ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। এজন্য চাঁদপুরের প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ, কোস্টগার্ড একযোগে কাজ করবে। পাশাপাশি চাঁদপুরের বিভিন্ন সংগঠন ও সকল শ্রেণীর মানুষকে একসাথে কাজ করতে হবে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, বিশ্বের প্রায় ১১টি দেশের নদণ্ডনদীতে ইলিশ পাওয়া গেলেও শতকরা ৭৫ ভাগ ইলিশ আমাদের দেশে আহরিত হয়। তিনি বলেন, চাঁদপুরে নিবন্ধিত প্রায় ৪৪ হাজার জেলে রয়েছে। নিষিদ্ধ সময়ে এই ৪৪ হাজার জেলের মাছ ধরা বন্ধ করতে চাঁদপুরের প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ডসহ ১ হাজার লোকবল প্রয়োজন, যা কখনোই সম্ভব নয়। তারপরও এ বছর আমরা চেষ্টা করবো বিদ্যমান লোকবল দিয়েই মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে। আমরা চাঁদপুরের নদীর প্রতিটি এলাকায় কঠোরভাবে নির্দেশনা জারি করবো, যাতে কেউ মা ইলিশ ধরতে না পারে। এই ২২ দিন চাঁদপুরে অবস্থিত বরফকলগুলো বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করবো।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, শুধু ইলিশের জন্যই নয়, দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ বৃদ্ধির জন্য সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার বলেন), গত বছরের ন্যায় এ বছরও চাঁদপুরের পুলিশ প্রশাসন মা ইলিশ নিধন বন্ধ রাখতে কাজ করবে। পুলিশ, কোস্টগার্ডের পাশাপাশি সকল শ্রেণীর মানুষকে একযোগে কাজ করতে হবে।
পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, আমাদের কাছে প্রস্তাব এসেছে যে, চাঁদপুরের সকল মাছ ধরার নৌযানগুলো এই ২২ দিন আটক রাখার জন্য। যা কখনোই পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। তারপরও আমরা কোস্টগার্ডের সাথে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কোনো উদ্যোগ নেয়া যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা করব। আলোচনা শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে চতুরঙ্গের স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
বিকেল সাড়ে ৪টায় চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের মহাসচিব ও ইলিশ উৎসবের রূপকার হারুন আল রশীদের উপস্থাপনায় উৎসবের সূচনা পর্ব সম্পন্ন হয়। এতে মৎস্যজীবী নেতা আঃ মালেক দেওয়ান, মানিক দেওয়ান, শাহ আলম মল্লিক, সংস্কৃতিজন অনুপম বিশ্বাস, চতুরঙ্গের যুগ্ম মহাসচিব মৃণাল সরকার, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সংগীত প্রশিক্ষক অনিতা কর্মকার, চতুরঙ্গের ভাইস চেয়ারম্যান সাধনা সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সবশেষে ইলিশ উৎসবের আহ্বায়ক কাজী শাহাদাত তার বক্তব্য প্রদানের পর সেরা গানবাজ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের মনোজ্ঞ পরিবেশনা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অনুষ্ঠিত হয় মুক্ত ভাবনা। এতে কাজী শাহাদাতের সভাপ্রধানে ও হারুন আল রশীদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন নারী নেত্রী ডাঃ রাশেদা আক্তার ও মুক্তা পীযূষ এবং মৎস্যজীবী নেতা মানিক দেওয়ান।
গোল টেবিল বৈঠকের পর সোমা দত্তের পরিচালনায় নৃত্যধারার এবং সবশেষে ঢাকার সংগঠন ‘বয়াতি’র সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।