বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় এমএইচভিদের ভূমিকা
ইব্রাহীম বিন ইউসুফ

গ্রামীণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প গ্রহণ এবং ২০০০ সালে গোপালগঞ্জে প্রথম কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে। যা স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনেকগুলো স্বপ্নের মধ্যে একটি। কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার পর থেকে অনেক কল্পনা-জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ এ ক্লিনিক গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। যেখানে সিএইচসিপি, স্বাস্থ্য সহকারী এবং পরিবার পরিকল্পনার সহকারীগণ সেবা দিয়ে আসছে। এই স্বাস্থ্যসেবাকে আরও ত্বরান্বিত করার জন্যে সরকার ২০১৯ সালে বাংলাদেশের ১০৬টি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিক এ ৫/৭ জন করে এমএইচভি (Multipurpose Health Voluntire) বহুমুখি স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করেছে। যার জন্য আমরা (এমএইচভিগণ) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই স্বেচ্ছাসেবীগণ নিরলস ভূমিকা পালন করছে। এমএইচভিগণ তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে জনগণ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করছে। মূলত এমএইচভি নিয়োগ করা হয়েছিলো মানুষকে অনলাইনভিত্তিক স্বাস্থ্য পরিচিতি কার্ড (Health Id Card) প্রদানের জন্যে। নানা কারিগরি জটিলতায় যা এখনো করা হয়নি। কিন্তু যার ফলে এমএইচভিগণ তাদের কাজ বন্ধ রাখেনি। যখনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যেই নির্দেশনা পেয়েছে সেই অনুযায়ী এমএইচভিগণ কাজ করে যাচ্ছে। যা ইতোমধ্যে সর্বমহলের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এমএইচভিগণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন মহামারি করোনা (কোভিড -১৯) ভাইরাসের সময়। যখন সারাবিশ্বে লকডাউন ছিলো। যখন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে কেউ ঘর থেকে বাইরে বের হতেন না তখন এমএইচভিগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোদ, বৃষ্টি, ঝড়কে উপেক্ষা করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন করা থেকে শুরু করে ভ্যাকসিন প্রদান ক্যাম্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ কাজ করতে গিয়ে অনেক এমএইচভি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক ‘ভ্যাকসিন হিরো’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। যা সর্বমহলে প্রশংসার দাবি রাখে। এমন একটি কাজে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করতে পেরে আমরা এমএইচভিগণ গর্ববোধ করছি। শুধু করোনা ভ্যাকসিনই নয় সরকার-ঘোষিত সকল জাতীয় প্রোগ্রাম (ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন, কৃমি ট্যাবলেট খাওয়ানো, ইপিআই টিকা কেন্দ্রে) বাস্তবায়নে এমএইচভিগণ বদ্ধপরিকর। এমএইচভিগণ বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যবার্তা সকলের নিকট পৌঁছে দিচ্ছে। জনগণকে পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ, নরমাল ডেলিভারি, সংক্রামক-অসংক্রামক রোগ উঠোন বৈঠক, স্বাস্থ্য সচেতনতা, আর্সেনিক ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে থাকে। সর্বোপরি এমএইচভিগণ জনগণকে কমিউনিটি ক্লিনিক এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবাগ্রহণের জন্যে উদ্বুদ্ধ করছে। যার ফলে কমিউনিটি ক্লিনিক এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এমএইচভি নিয়োগের পর থেকে স্বাস্থ্য খাত একটি নতুন মাত্রা পেয়েছে বলে আমরা মনে করি। এমএইচভি নিয়োগে তরুণ, মেধাবীদের নিয়োগ করা হয়েছে। যারা ইতোমধ্যে ৪ বছর হাতেকলমে কাজ করার ফলে ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।

এমএইচভি নিয়োগে কোনো নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো না থাকলেও তাদের নির্দিষ্ট কর্মসম্পাদানের উপর ভিত্তি করে একটি সম্মানী ভাতা দেয়া হয়, যা নিয়ে আমরা এমএইচভিগণ সন্তুষ্ট থাকলেও বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির কারণে দুর্বিসহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সক্ষমতা সম্পর্কে অবগত, যিনি দেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর মতো মহাযজ্ঞ সম্পন্ন করে সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। শুধু পদ্মাসেতুই নয়, তিনি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করছেন মেট্রোরেল রেল, কর্নফুলী ট্যানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, উৎক্ষেপণ করেছেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। বাস্তবায়নের পথে বহু প্রকল্প।

আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যে প্রাণভরে দোয়া করি। তিনি দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার কথা বিবেচনা, এমএইচভিদের পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা করে তাদের বাতিল না করে একটি বেতন কাঠামোতে আনবেন বলে আশাবাদী। সেই সাথে আমরা এ-ও বিশ্বাস করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাইলে এমএইচভিদের স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত এই কাজটিকে তাঁর বিশেষ দৃষ্টিতে এনে একটা সফলতা প্রদান করবেন বলে আমরা আশাবাদী।

মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল : এমএইচভি, কেরোয়া কমিউনিটি ক্লিনিক, ফরিদগঞ্জ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়