শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

জেলা ক্রীড়া অফিসের আয়োজনে মাসব্যাপী অনূর্ধ্ব-১৫ বালক ও বালিকাদের ফুটবল প্রশিক্ষণ

চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ॥
জেলা ক্রীড়া অফিসের আয়োজনে মাসব্যাপী অনূর্ধ্ব-১৫ বালক ও বালিকাদের ফুটবল প্রশিক্ষণ

ক্রীড়া পরিদপ্তরের বার্ষিক কর্মসূচি ২০২৩-২০২৪-এর আওতায় ও জেলা ক্রীড়া অফিসের আয়োজনে মাসব্যাপী অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল বালক ও বালিকাদের প্রশিক্ষণ চলছে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে। শুক্রবার ও শনিবার ব্যতীত ২ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ প্রশিক্ষণ চলবে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ক্রীড়া অফিসার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম।

চাঁদপুর স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুর জেলার সাবেক ফুটবলার ও বাফুফের ফুটবল কোচিংয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ফুটবল কোচের অধীনে মাসব্যাপী ফুটবল প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন ফুটবলারসহ প্রমীলা ফুটবলারগণ। চাঁদপুর জেলার ৮ উপজেলা থেকে বাছাইকৃত ২০ জন বালক ও ১৮ জন বালিকা অনুশীলন করছেন। গোলকিপার, রক্ষণভাগ, মধ্যমাঠের ফুটবলারদের আলাদা আলাদাভাবে অনুশীলন করানো হচ্ছে। দেখা যায়, প্রমীলা ফুটবলারদের সাথে অনুশীলন চলাকালে তাদের অভিভাবক হিসেবে মায়েরা মাঠে উপস্থিত রয়েছেন।

গত ২ জানুয়ারি বিকেলে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে মাসব্যাপী ফুটবল প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইমিগ্রেশন অব পাসপোর্ট অধিদপ্তর চাঁদপুরের উপ-পরিচালক মোঃ ইউসুফ। উদ্বোধনকালে প্রশিক্ষণে সুযোগ পাওয়া ফুটবলারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মাদক থেকে দূরে রাখতে খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। মোবাইলের আসক্তি থেকে দূরে রাখতে ও খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টিতে মাসব্যাপী প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। খেলাধুলায় যে বেশি পরিশ্রম করবে সে ততোটাই সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাবে। খেলাধুলার পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে হবে। সরকার খেলোয়াড়দের জন্যে প্রশিক্ষণসহ খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা ক্রীড়া অফিসার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সোনালী অতীত ক্লাবের সভাপতি ও সাবেক ফুটবলার মনোয়ার হোসেন চৌধুরী এবং জেলা ক্রিকেট কোচ শামীম ফারুকী।

মাসব্যাপী এ প্রশিক্ষণে প্রথমে জেলার ৮ উপজেলা থেকে ৫০ জন বালক ও ৪০ জন বালিকা অংশগ্রহণ করে। প্রাথমিক বাছাইয়ে ২০ জন বালক ও ১৮ জন বালিকা খেলোয়াড় বাছাই করা হয়।

বাছাইকৃত (অনূর্ধ্ব-১৫) প্রমীলা ফুটবলাররা হলেন : গোলকিপার-আফরোজা, বর্ণ ও সাদিয়া আক্তার মীম। স্টপার (রক্ষণভাগ) : জাকিয়া, লামিয়া, পিংকি (১), শক্তিকা, পিংকি (২), অপরুপা, নুপুর ও ফাতেমা। মধ্যমাঠ ও স্ট্রাইকার : নুহামিম, রোজিনা, মাশরুম, সাবিয়া, আনহা, সুমি ও তানহা।

অনূর্ধ্ব-১৫ বালক দলের ফুটবলাররা হলেন : সাজিদ মাহমুদ, তানজিল, শাকিল বেপারী, রাকিব, সাইফ, মাসুম, শ্রাবণ, সোলায়মান, রোকন, হোসাইন, আশিকুর রহমান, শাহেদ, আয়াত, গালিব মাহমুদ, মোঃ রাকিব, মাহিদ, ইশান, নাজিমুল ইসলাম, জয়, রাতুল, নাজিম , জিহাদ, তানভীর ও মিরাজ।

প্রমীলা দলের ফুটবল কোচ ও সাবেক ফুটবলার জাহাঙ্গীর গাজী এ প্রতিবেদককে বলেন, এ প্রশিক্ষণটি অল্পমেয়াদী হয়ে গেছে। এই প্রশিক্ষণটি যদি দীর্ঘমেয়াদী করা হয়, তাহলে চাঁদপুর জেলা থেকে অনেক প্রমীলা ফুটবলার বের হয়ে আসবে। যেমন আমাদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সোনালী অতীত ফুটবল একাডেমী থেকে ৩ জন প্রমীলা ফুটবলার মিম, ইতি ও নুনিয়া এখন বাংলাদেশ সেনবাহীনীতে প্রমীলা ফুটবলারের কোটায় চাকুরি পেয়েছেন। জেলা ক্রীড়া অফিস থেকে যে ক'জন প্রমীলা ফুটবলার বাছাই করে দিয়েছে, এরা অনুশীলনে অনেক মনোযোগী। এদের দিয়েই আগামীতে জেলা অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল দল গঠন করা যাবে। ফুটবল কোচ ও সাবেক ফুটবলার আনোয়ার হোসেন মানিক বলেন, এক মাসের প্রশিক্ষণে যে বাজেট দেয়া হয়েছে তা খুবই কম। আমাদের যে বাজেট দিয়েছে এটা দিয়ে আমাদের চলতে কষ্ট হয়। এই প্র্যাকটিসটি সকালে করতে পারলে ভালো হতো। এই প্রশিক্ষণার্থীদের থেকেই ফুটবলার বাছাই করে জেলা দল গঠন করা যাবে, আর ফুটবলার খুঁজতে হবে না। ফুটবলারদের প্রশিক্ষণের জন্যে পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন।

সাবেক গোলকিপার ও ফুটবল কোচ আমিন মোল্লা বলেন, অল্প ক’দিনের প্রশিক্ষণটা তেমন কাজে লাগবে না। এই প্রশিক্ষণের আগে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে অনেক ফুটবলার বাছাই করে তাদেরকে ক'দিন অনুশীলন করানোর পর ওইখান থেকে বাছাই করে প্রশিক্ষণে দেয়ার দরকার ছিলো। এই প্রশিক্ষণটি যদি জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে হতো, তাহলে আরো ভালো হতো। অনুশীলনকারীরা আরো ভালো করার সুযোগ-সুবিধা পেতো।

ফুটবল প্রশিক্ষণে সুযোগ পাওয়া নাজিম বলেন, আমার বাবাও ফুটবল খেলতেন। আমি নিয়মিত পুরাণবাজার থেকে আরো ফুটবলারসহ এখানে অনুশীলনে আসি। আমাদের এ ধরনের প্রশিক্ষণে যদি সময় বাড়ানো হয়, তাহলে আমাদের জন্যে ভালো হবে। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন হলে আমরা অংশগ্রহণ করতে পারবো।

ফুটবলার শ্রাবণ বলেন, অনেকদিন পর জেলা পর্যায়ে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হলো। আমরা স্টেডিয়ামে ফুটবল অনুশীলন করি। আমাদের সহ যারা ফুটবলের সাথে জড়িত রয়েছে, তাদেরকে নিয়ে যদি জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে আবাসিক বা অনাবাসিক ফুটবলের ক্যাম্প করা হয় তাহলে অনেক ফুটবলার সৃষ্টি হবে।

প্রশিক্ষণ নিয়ে জেলা ক্রীড়া অফিসার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, জেলা ক্রীড়া অফিস কর্তৃক আয়োজিত ডেভেলপমেন্ট কাপ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল প্রশিক্ষণ-এর মাধ্যমে আমরা নতুন নতুন প্রতিভাবান খেলোয়াড় খুঁজে বের করে আনবো। যার মধ্য দিয়ে তৃণমূল পর্যায় থেকে আরও উদীয়মান খেলোয়াড় খুঁজে পাবো। ২০২৪ সালে আমাদের বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট (অনূর্ধ্ব-১৭)-এ যে সকল খেলা বাস্তবায়ন করা হবে, সেই খেলাগুলোতে বয়সের যে সকল জটিল সমস্যা থাকে তারও নিরসন হবে এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে। তাছাড়া সামনে আমাদের জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে ডেভেলপমেন্ট কাপ ফুটবল আয়োজন হচ্ছে। এই প্রশিক্ষিত ফুটবল খেলোয়াড়দের আমরা অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেবো। এই ডেভেলপমেন্ট কাপ ফুটবল প্রশিক্ষণের অন্যতম লক্ষ্য হলো, তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবলের আরও জাগরণ সৃষ্টি করা এবং অনূর্ধ্ব-১৫ বছর বয়স্ক খেলোয়াড়দের বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়