সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৩, ০০:০০

কিশোর থেকে আমি সাংবাদিকতার যৌবনে
মোঃ আবদুর রহমান গাজী

২০০৫ সালের জানুয়ারি মাস। শীতের সকাল। কোনো একদিন লেখালেখি নিয়ে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদকের সাথে কথা হয়। এ সময় তিনি আমাকে লেখালেখি করতে উদ্বুদ্ধ করেন। আজ সে স্মৃতিতে হারিয়ে গিয়েছে আমার মন।

অতীতের দিকে ফিরে তাকাতেই দেখি, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের সাথে আমার জীবনের অনেক কিছু মিলে যাওয়াটা দলিল হিসেবে রয়েছে। তার মধ্যে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে আমার নাম দিয়ে যেদিন নিউজ ছাপা হয় (২০০৫ সালের ৭ অক্টোবর) ওইদিনই আমি প্রথম সন্তানের বাবা হই। আবার ২০০৯ সালে চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন ভাতিজা-ভাতিজির জন্ম হয়। আরো রয়েছে বহু স্মৃতি, যা অন্য সময় বলা যাবে।

প্রথমত আমি ছিলাম চাঁদপুর কণ্ঠের সংবাদদাতা। তারপর নিজস্ব প্রতিবেদক। ক্রমান্বয়ে স্টাফ রিপোর্টার। পরবর্তীতে সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার। বর্তমানে কৃষিকণ্ঠের বিভাগীয় সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। তার পাশাপাশি ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এর আগে দুবার কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছিলাম।

আমি এনালগ সাংবাদিকতা থেকে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ডিজিটাল সাংবাদিকতার পথে পা দিয়েছি। বর্তমানে সাংবাদিকতার বৃত্ত ও পরিধি প্রসারিত হচ্ছে ক্রমাগত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং পরিবর্তিত মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপের কারণে সাংবাদিকতায় এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। এখন সাংবাদিকতা একটা নতুন রূপ নিয়েছে। প্রথাগত সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও রেডিওর বাইরেও গণমাধ্যমের শাখা-প্রশাখা তৈরি হয়েছে। অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ব্লগ, ব্রডকাস্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও জনগণের কাছে সংবাদ ও তথ্য পৌঁছে যাচ্ছে দ্রুত। সংবাদ বিশ্লেষণও হচ্ছে নানাভাবে। এসবই চলছে জনসাধারণের আগ্রহ ও প্রবণতার ওপর নজর রেখে।

এখন সাংবাদিকদের কাজ অনেক বৈচিত্র্যপূর্ণ। অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতা, ডেটা সাংবাদিকতা, মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতা, মতামত সাংবাদিকতা, নাগরিক সাংবাদিকতাসহ নানা ফরম্যাটের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে এ বৈচিত্র্য এসেছে। ডিজিটাল মিডিয়ার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এসব বৈচিত্র্যপূর্ণ সংবাদ এখন সর্বস্তরের মানুষের কাছে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে।

দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাজনৈতিক কেলেঙ্কারিসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর নজর রেখে চাঁদপুর কণ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর মানে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ। চাঁদপুরে মিডিয়া-সাক্ষরতার প্রসার এবং ডিজিটাল দক্ষতার প্রচারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে চাঁদপুর কণ্ঠ। এ উদ্যোগে যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি হলেন আমার বস ও দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত। চাঁদপুর কণ্ঠ নতুন প্রজন্মের সাংবাদিক তৈরির পাশাপাশি গণমাধ্যমণ্ডপেশাদারদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে কাজ করছে।

চাঁদপুর কণ্ঠের একটি শক্তিশালী অনলাইন রয়েছে। যার মাধ্যমে দেশি-বিদেশে হাজার হাজার পাঠক চাঁদপুরের বিভিন্ন খবর জানতে পারেন। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট ইকবাল বিন বাশার। প্রধান সম্পাদক : কাজী শাহাদাত, নির্বাহী সম্পাদক : মির্জা জাকির, বার্তা সম্পাদক : এ এইচ এম আহসান উল্লাহ, চীফ রিপোর্টার বিমল চৌধুরী, ম্যানেজার সেলিম রেজা, সার্কুলেশন ম্যানেজার সোহাঈদ খান জিয়া, সহকর্মী মিজানুর রহমান, গোলাম মোস্তফা, সাইফুল আজম, মুহাম্মদ ফরিদ হাসান, উজ্জ্বল হোসাইন, মোঃ আলআমিন হোসাইন, মোস্তফা কামাল সুজন, কাজী আজিজুল হাকিম নাহিন ও উপজেলা পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ। আমরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে এই প্রতিষ্ঠানের কর্মী হয়ে কাজ করছি।

নির্ভরযোগ্য প্রমাণসহ পাঠকের কাছে সবার আগে তথ্য পৌঁছে দেয়ার প্রতিযোগিতা এখন প্রকট। প্রচলিত গণমাধ্যমের সমস্যা হচ্ছে লোকবলের ঘাটতি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী যে কোনো সময় যে কোনো জায়গা থেকে যে কোনো ঘটনার ভিডিওচিত্র কিংবা ছবি তাৎক্ষণিকভাবে প্রচার করতে পারেন। আর এ সমস্যাটা কাটিয়ে ওঠার জন্যেই চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক সম্পাদক মহোদয়ের নেতৃত্বে সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক এবং জুম মিটিং হয়। ওই সভা তাৎক্ষণিক সাংবাদিকতার কাজটা সহজ করে দেয়। ফলে সব সময় প্রাণবন্ত থাকছে পাঠকের চাহিদার বিভিন্ন খবরাখবর।

আধুনিক সাংবাদিকতা : সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ মূলত নির্ভর করছে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, পাঠক-দর্শকের পছন্দ, মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপের পরিবর্তনশীল প্রকৃতিসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর। সেগুলো হচ্ছে :

ডিজিটাল রূপান্তর : সাংবাদিকতা এখন পুরোপুরি অনলাইনভিত্তিক হয়ে উঠেছে। এখন ইন্টারনেটই সংবাদ বিতরণের প্রাথমিক প্ল্যাটফর্ম। এই ডিজিটাল রূপান্তরের ফলে অনলাইন নিউজ ওয়েবসাইট, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া এবং মোবাইল নিউজ অ্যাপের উত্থান ঘটেছে ব্যাপকভাবে। ফলে প্রথাগত প্রিন্ট মিডিয়ার জনপ্রিয়তাও দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এমনটি যাতে না হয় সেজন্যেই চাঁদপুর কণ্ঠের সাথে আজও আছি। ভবিষ্যতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ।

গ্রহণযোগ্যতা : ভুয়া খবর এবং ভুল তথ্যের যুগে, আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই সত্যতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাঁদপুর কণ্ঠে কাজ করছি।

সামাজিক ও মানবিক দায়িত্ব : গণমাধ্যম ও সমাজের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। গণমাধ্যমের বিকাশ ঘটেছে সমাজকে আশ্রয় করে। গণমাধ্যম সর্বপ্রথম মানুষের তথ্যের চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করেছে। এটা মানুষের কৌতূহল নিবৃত্ত করেছে এবং করে যাচ্ছে। সমাজ ও সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যমেরও বিকাশ ঘটেছে। চরিত্র এবং চেহারাগত পরিবর্তন এসেছে গণমাধ্যম জগতে ব্যাপকভাবে। একেক যুগে মানুষ একেক ধরনের মূল্যবোধ লালন করেছে এবং গণমাধ্যম সমাজকল্যাণের উদ্দেশে সেসব মূল্যবোধের প্রসার ঘটিয়েছে।

২০০৫ সাল থেকে সাংবাদিকতা শুরু করেছি। এখন কিশোর থেকে আমি সাংবাদিকতার যৌবনে পৌঁছেছি। সামনের দিনগুলোতে যাতে আরো ভালোভাবে কাজ করতে পারি সেজন্যে সকলের দোয়া চাই। আর যাদের অনুপ্রেরণায় সাংবাদিকতা ধরে রাখতে পেরেছি, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়