মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

বিভিন্ন স্থানে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

অনলাইন ডেস্ক
বিভিন্ন স্থানে মহান  শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। এ বিষয়ে চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিনিধিসহ প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রাপ্ত খবরগুলো নিম্নরূপ :

চাঁদপুর সরকারি কলেজ

মেঘনাপাড়ের বাতিঘর বলে খ্যাত চাঁদপুর সরকারি কলেজে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালন করা হয়। রাত বারোটা এক মিনিটে কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ মোঃ খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে শিক্ষক-কর্মকর্তা চাঁদপুরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করার মধ্য দিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিবসের কর্মসূচির শুভ সূচনা করেন। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিত রাখা হয়। সকাল সাড়ে আটটায় কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ মোঃ খলিলুর রহমান বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকবৃন্দকে নিয়ে শিক্ষক পরিষদের উদ্যোগে কলেজ শহিদ মিনার এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সকাল দশটায় কলেজ কনফারেন্স কক্ষে শুরু হয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে ভাষা আন্দোলনের ভূমিকা : একটি পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনার। প্রফেসর সামছুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ মোঃ খলিলুর রহমান, মহান শহিদ দিবস প্রতিপালন কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মদ ইয়াহিয়া খান, পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করেন পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক গোপাল কৃষ্ণ ভৌমিক। সেমিনারের শুরুতে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শহিদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আল-আমিন। বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শরীফ মাহমুদ চিশতীর সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোঃ মাসুদ আলম। উপস্থাপিত প্রবন্ধের উপর মূল আলোচনা করেন প্রফেসর মোঃ রফিক উল্লাহ। এছাড়াও আলোচনা করেন বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অমর চন্দ্র দাস, ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোঃ আলী আজগর ফকির ও সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মদ ইয়াহিয়া খান।

বিশেষ অতিথি প্রফেসর শেখ মোঃ খলিলুর রহমান গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন ’৫২-র ভাষা আন্দোলনে আত্মদানকারী সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, শফিউরসহ সকল ভাষা শহিদ, ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ, ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন, গাজীউল হক, আহমদ রফিক প্রমুখকে। গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত ও আহত সকল মুক্তিযোদ্ধাকে। তিনি বলেন, '৫২-র ২১ ফেব্রুয়ারি না হলে '৭১ সৃষ্টি হতো না। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভাষা আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অবিস্মরণীয়। তিনি একুশের চেতনাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। মাতৃভাষার চর্চাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনের মাধ্যমে সমাজের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে।’

সভাপতি প্রফেসর সামছুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের মায়ের ভাষার ওপর, মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর বারবার আঘাত এসেছে, এখনও আসছে। পরাজিত শক্তির প্রেতাত্মারা বারবার আক্রমণ করেছে আমাদের ভাষা, স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর।’ তিনি সেমিনার আয়োজনের সাথে যুক্ত সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

সেমিনার শেষে কবিতা আবৃত্তি এবং রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বাদ জোহর কলেজ কেন্দ্রীয় মসজিদ এবং হোস্টেল মসজিদসমূহে ভাষা শহিদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত ও তবররুক বিতরণের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে তাৎপর্যপূর্ণ এই দিবসের অনুষ্ঠানমালার।

চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ

মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪ উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করার মাধ্যমে চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়। কলেজের সকল শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থী সকাল সাড়ে ৭টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এবং কলেজ শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘শেখ রাসেল দেয়ালিকা’ উন্মোচন করেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান। ‘দেয়ালিকা’ উন্মোচন শেষে কলেজের ২১৬ নং কক্ষে বাংলা বিভাগ কর্তৃক সেমিনার আয়োজন করা হয়।

সেমিনারে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদাউস ও পবিত্র গীতা পাঠ করেন একাদশ শ্রেণির মানবিক শাখার শিক্ষার্থী সান্তনা। বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তাহমিনা ফেরদৌসের সভাপতিত্বে এবং সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক আলআমিনের সঞ্চালনায় আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ ইকবালুর রহমান, কলেজের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কমিটির আহ্বায়ক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জীবন কানাই সাহা এবং শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ এনামুল হক। সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তাহমিনা ফেরদৌস। 'সর্বস্তরের বাংলা ভাষার প্রচলন : বর্তমান প্রেক্ষাপট' শিরোনামের প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বাংলা ভাষা সর্বস্তরে প্রচলনের ক্ষেত্রে সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আফসার আলী শিকদার, সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ এনামুল হক।

প্রধান অতিথি প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “ভাষা শহিদরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাঁদের অবদানের জন্যেই বাংলা ভাষা রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা পেয়েছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে ২১ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমেই ১৯৫২ সালের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ পায়। মহান ২১ আমাদের প্রেরণার উৎস। '৫২-এর ফেব্রুয়ারি ২১-এর ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের তাৎপর্য বর্তমান প্রজন্মকে বুকে ধারণ ও লালন করতে হবে। তবেই শহিদদের আত্মা শান্তি পাবে।” তিনি আরও বলেন, “১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে এবং তোমাদের মাধ্যমেই ২০৪১ সালে এদেশ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে।''

সেমিনারে কলেজের সকল শিক্ষক, কর্মচারী, বিএনসিসি, গার্ল ইন রোভার, রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়