বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

ফরিদগঞ্জে এক জমি নিয়ে চার দশকের বিরোধ
ফরিদগঞ্জ ব্যুরো ॥

ফরিদগঞ্জে মাত্র ৭ শতক জমি নিয়ে গত ৪০ বছর ধরে দুই পক্ষের মধ্যে হামলা-মামলা চলে আসছে। সর্বশেষ একপক্ষ পাকা ভবন নির্মাণ শুরু করলে অপরপক্ষ নিজেদের সম্পত্তিতে ভবন নির্মাণের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করেছে। আদালত ইতিমধ্যেই ওই বিরোধকৃত জমির উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ঘটনাটি উপজেলার ১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের রনাতলী গ্রামের হাসান আলী বেপারী বাড়ির আলী হাজী মমিন উল্লাহর সাথে আলী আশ্বাদের মধ্যে।

জানা গেছে, ওই গ্রামের রনাতলী মৌজার সি.এস. ৭৬/১ খতিয়ানের ৩৪৪ দাগের ২৭ শতকের মালিক চান মিয়ার ৫ ছেলে ১ মেয়ে আব্দুর রহমান গংয়ের মধ্যে হালিমের মৃত্যুতে পুত্র খলিল ও ২ মেয়ে জমিলা ও আলীমেরনেছা ওয়ারিশ হন।

এর মধ্যে মমিন উল্যাহ গং ১৯৭৫ সালের ৬ জানুয়ারি আলীমেরনেছার কাছ থেকে ৭ শতক জমি ক্রয় করেন। অন্যদিকে উল্লেখিত সময়ের আগে ও পরে আলী আশ্বাদ গং দুইবারে প্রথমে ২০ শতক ও পরে ৭ শতক জমি খলিলুর রহমানের কাছ থেকে ক্রয় করে। খলিলুর রহমান আপস বন্টক দেখিয়ে নিজেই ২৭ শতক জমি বিক্রি করে। এতে তার বোনদের সম্পত্তির বিষয়টি অনিষ্পত্তি থেকে যায় বলে অভিযোগ উঠে। ফলে মমিন উল্লাহর দাবি খলিলুর রহমান তার নিজের প্রাপ্য অংশের তুলনায় এই দাগে বেশি সম্পত্তি বেশি বিক্রি করেছে।

এ বিষয়ে গত ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধের জের ধরে হামলা ও একাধিক মামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়ভাবে বহুবার সালিস হলেও মীমাংসা হয়নি। এক পক্ষ মামলা দায়ের করে রায় পেলে অপর পক্ষ আপিল করে রায় ফিরে পায়। সর্বশেষ আলী আশ্বাদ উক্ত জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ শুরু করলে আবারো বিরোধের সৃষ্টি হয়। মমিন উল্লা বাদী হয়ে চাঁদপুর আদালতে ১৪৫ ধারায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মামলা দায়ের করলে আদালত বিরোধপূর্ণ জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। একই সাথে ফরিদগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে বিষয়টি সরজমিনে পরিদর্শন পূর্বক প্রতিদেবন দেয়ার নির্দেশ দেয়।

এ ব্যাপারে মমিন উল্ল্যার ছেলে মাহবুব জানান, তারা ১৯৭৫ সালের ৬ জানুয়ারি খলিলের বোন আলীমেরনেছার কাছ থেকে ৭ শতক জমি ক্রয় করেন। যার বি.এস. খতিয়ান তাদের নামে এবং তারা নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করছেন। আলী আশ্বাদ গং জমির বিষয়ে জজকোর্টে মামলায় ৩০ ও ৩১ ধারার মামলা করলেও আপিল করে মামলায় তাদের পক্ষে রায় পেয়েছেন। তাই এই জমির বৈধ মালিক তারা। কিন্তু তাদের জমিতে আলী আশ্বাদরা পাকা ভবন নির্মাণ করছে। তাই তারা আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন।

অন্যদিকে আলী আশ্বাদের ছেলে শাহআলম জানান, খলিলুর রহমানের মোট ১ একর ৯ শতক জমি বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে তারা মাত্র ২৭ শতক জমি ক্রয় করেছেন। বাকী পুরো অংশ মমিন উল্লাহ গং ক্রয় করেছেন। ইতিপূর্বে এই জমি নিয়ে বহুবার সালিস হয়েছে। সকল রায় তাদের পক্ষে গিয়েছে। মমিন উল্লাহদের দাবিকৃত ৭ শতক জমি রেখেই তারা তাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে ভবন নির্মাণ করছেন। ফলে কেনো তারা মামলা করলো বুঝলাম না। তারা সালিস বা এলাকার মুরুব্বি কাউকেই মানছেন না। আশা করছি আদালত সঠিক সিদ্ধান্ত দিবেন।

সরজমিনে গিয়ে আরো দেখা যায়, জমিনের একপাশে পুকুর কেটে অন্য পাশে তারা ভবন নির্মাণের জন্য মাটি কাটা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন জানায়, সকল পক্ষকে নিয়ে বসলে এর সমাধান সম্ভব। কারণ খলিলুর রহমানের মোট সম্পত্তির হিসেব সঠিক রয়েছে। এগুলো সমাধান না হলে উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরেই দুই পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। সর্বশেষ আলী আশ্বাদ গং ভবন নির্মাণ করার সময় মমিন উল্লাহ গং আদালতের আশ্রয় নেয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়