সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১ লাখ ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা
অনলাইন ডেস্ক

প্রচলন আছে, রাজধানী ঢাকা নাকি জাদু আর মায়ার শহর। এ মায়ার শহরে এসে একবার বসবাস শুরু করলে তার আর নিজ এলাকায় ফিরে যেতে মন চায় না। তাই বেকার, ভাগ্যান্বেষী, বিদ্যান্বেষীসহ নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষের ‘স্বপ্ন গড়ার শহর’ এই ঢাকা। প্রায় এক হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটারের এ শহরে প্রায় দুই কোটি মানুষের বাস। দিন দিন তা বাড়ছে জ্যামিতিক হারে।

নানা সমস্যায় জর্জরিত রাজধানী ঢাকা। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আবাসন সমস্যা। নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের ক্ষেত্রে এ সমস্যা একটু বেশি। তবে আশার কথা হলো, সমস্যা সমাধানে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনায় (২০১৬-২০৩৫) নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের আবাসনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ৫৫টি স্থান নির্দিষ্ট করে এক লাখ ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা মহানগরের মোট জনসংখ্যার বিরাট একটি অংশ নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত। তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। এ কারণে ড্যাপে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সমস্যা সমাধানে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনায় (২০১৬-২০৩৫) নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের আবাসনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ৫৫টি স্থান নির্দিষ্ট করে এক লাখ ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা আছে

জানা গেছে, নির্ধারণ করা ৫৫টি স্থানে সাশ্রয়ী মূল্যের ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। প্রথমে ড্যাপের অধীন চারটি এলাকায় পাইলট প্রকল্প বা পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত আছে। ওই চার এলাকার মধ্যে রয়েছে- মোহাম্মদপুর, কেরানীগঞ্জ, মিরপুর ও শ্যামপুরের কদমতলী।

এক পরিসংখ্যানের হিসাব অনুযায়ী, ঢাকায় বর্তমানে দুই কোটিরও বেশি মানুষ বাস করে। প্রতি বছর ঢাকা শহরে ছয় লাখ ১২ হাজার মানুষ যুক্ত হচ্ছে। দিনে যা এক হাজার ৭০০ জন। পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল শহরগুলোর তালিকায় ঢাকা ১১তম। কিন্তু আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যার হিসাবে ঢাকা পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ। এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে ৪৩ হাজার ৫০০ মানুষ। ১৯৭৪ সালে দেশে প্রথম আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। ওই শুমারিতে ঢাকা শহরে জনসংখ্যা মেলে মাত্র ১৬ লাখ।

ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ২৫ বছরে রাজধানীতে বাড়িভাড়া বেড়েছে প্রায় ৪০০ শতাংশ। এ সময় নিত্যপণ্যের যে দাম বেড়েছে সেই তুলনায় বাড়িভাড়া বাড়ার হার প্রায় দ্বিগুণ।

সংগঠনটির অপর এক পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকার ২৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ, ৫৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া প্রায় ৫০ শতাংশ, ১২ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ টাকা ব্যয় করেন বাসার ভাড়া পরিশোধে।

এ প্রসঙ্গে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও ডিটেল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম একটি হচ্ছে বাসস্থান। শহরের পরিকল্পনা প্রস্তাব, নীতিনির্দেশনা, বিধিবিধান তৈরি হচ্ছে সংখ্যালঘিষ্ঠ উচ্চবিত্তের চাহিদা ও রুচির কথা বিবেচনা করে। অথচ, মোট জনসংখ্যার বড় অংশ নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের আবাসনের জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগ নাই। তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (২০১৬-৩৫) নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের আবাসনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে স্থান নির্দিষ্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, নগর বিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনাবিদসহ সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা ড্যাপ প্রস্তুত করেছি। আগের ড্যাপের সঙ্গে নতুন করে অনেক কিছু সংযুক্ত হয়েছে। আমরা আশাবাদী, শিগগিরই ড্যাপের বাস্তবায়ন শুরু হবে।

বিদ্যমান নানা সমস্যা কমিয়ে পরিকল্পিত ঢাকা মহানগর গড়তে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সংশোধিত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা হলো ড্যাপ। রাজউকের উদ্যোগে প্রণীত নতুন ড্যাপে থাকছে- ভূমি পুনর্বিন্যাস, উন্নয়নের স্বত্ব, প্রতিস্থাপন পন্থা, ভূমি পুনঃউন্নয়ন, ট্রানজিটভিত্তিক উন্নয়ন, উন্নতিসাধন ফি, স্কুল জোনিং ও ডেনসিটি জোনিং। ওয়ার্ডভিত্তিক জনঘনত্বের বিষয়ে দিকনির্দেশনাও থাকবে সংশোধিত ড্যাপে।

রাজউকের অন্তর্ভুক্ত এলাকায় দুই হাজার ১৯৮ কিলোমিটার জলাধার সিএস রেকর্ড অনুযায়ী উদ্ধার করে সচলেরও সুপারিশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে এসব এলাকাকে বিনোদন স্পটে পরিণত করার কথা উল্লেখ আছে।

বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) পরিকল্পিত ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে উন্নয়নমুখী নানা ছক সাজানো হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে ঢাকার সার্বিক চিত্র। নতুন ড্যাপের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০ বছর।

রাজউক কর্তৃক বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা আগামী ২০ বছরের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, যার আওতাধীন এলাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১১ সালের তথ্য অনুযায়ী, ২০৩৫ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার প্রক্ষেপণ জনসংখ্যা ধরা হয়েছে দুই কোটি ৬০ লাখ। ড্যাপের প্রকল্প এলাকাকে ছয়টি স্বতন্ত্র প্রধান অঞ্চল এবং ৭৫টি উপ-অঞ্চলে বিভক্ত করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়