বুধবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩৫

কিবরিয়া হত্যাকাণ্ড: দুই দশক পর রেজা কিবরিয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ

দুই দশক পর রহস্যের জাল আরও ঘন

মো.জাকির হোসেন
দুই দশক পর রহস্যের জাল আরও ঘন

প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া।ছবি :সংগৃহীত

আজ ২৭ জানুয়ারি, প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার ২০ বছর পূর্ণ হলো। দুই দশক পেরিয়ে গেলেও তার নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার আজও সম্পন্ন হয়নি। বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা, অভিযোগপত্র নিয়ে বিতর্ক, এবং ড. রেজা কিবরিয়ার নতুন অভিযোগ এই মামলাকে ঘিরে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে।

ড. রেজা কিবরিয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ: হত্যাকাণ্ডের দুই দশক পরও বিচার না হওয়া নিয়ে হতাশ ড. রেজা কিবরিয়া সম্প্রতি দাবি করেছেন, তার বাবার হত্যার পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ তিনজন ব্যক্তি জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, "আমার বাবার হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার খুব কাছের তিনজন জড়িত ছিলেন।" তবে তিনি তাদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।

হত্যাকাণ্ড ও মামলা: ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যেরবাজারে আওয়ামী লীগের একটি জনসভা শেষে ফেরার পথে গ্রেনেড হামলার শিকার হন শাহ এএমএস কিবরিয়া। হামলায় তিনি, তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ পাঁচজন নিহত হন এবং ৪৩ জন আহত হন।

এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু মামলাগুলোর তদন্ত শুরু থেকেই বিতর্কিত ছিল। ২০১৫ সালে বিএনপি নেতাদের জড়িয়ে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়, যা কিবরিয়া পরিবার "ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত" বলে দাবি করে আসছে।

বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা: মামলার বিচার দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করলেও এখনো চূড়ান্ত রায় দেওয়া সম্ভব হয়নি। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে মামলার ৪৮তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফিকুর রেজা বিশ্বাস এই সাক্ষ্য দেন।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা চারটি মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর জামিন পান। তার জামিনপ্রাপ্ত মামলাগুলোর একটি ছিল শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলা।

কিবরিয়া পরিবারের হতাশা: কিবরিয়া পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন যে, এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া রাজনৈতিক স্বার্থে প্রভাবিত হয়েছে। তারা সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছেন।

একজন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদ শাহ এএমএস কিবরিয়া ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার দক্ষ নেতৃত্ব দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। তার মতো একজন প্রখ্যাত ব্যক্তিত্বের হত্যাকাণ্ডের বিচার দীর্ঘদিন ঝুলে থাকায় সমাজের বিভিন্ন মহলে হতাশা দেখা দিয়েছে।

পরিবারের প্রত্যাশা ও দাবি: ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, "আমরা ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করে যাচ্ছি। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া এখনো শেষ না হওয়ায় আমাদের হতাশা বেড়েছে।"

এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার এবং প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মতে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হলে এটি দেশের বিচারব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়