প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুর সদর উপজেলার চাঁদখাঁর বাজারের সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত দুর্ঘটনা কবলিত বাসটির চালকও অবশেষে মারা গেলেন। এ নিয়ে ওই দুর্ঘটনায় ৯ মাসের শিশুসহ নিহতের সংখ্যা ২ জনে দাঁড়ালো। এদিকে দুর্ঘটনার পর গুরুতর আহত বাস চালকের পাশে শ্রমিক নেতাদের না পাওয়ায় সাধারণ শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তারা বাস টার্মিনালে শ্রমিক নেতাদের অফিস ভাংচুর করে এবং এক শ্রমিক নেতাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
৫ সেপ্টেম্বর রোববার ভোরে চাঁদপুর সদর উপজেলার চাঁদখাঁর বাজার এলাকায় এমএম নূরুল হক উচ্চ বিদ্যালয় ও জেলা যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। চাঁদপুর থেকে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-১৩১১) বাসটি এ জায়গায় আসলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে তীব্র গতিতে ধাক্ক খায়। এতে বাসের যাত্রী মায়ের কোলে থাকা ৯ মাসের শিশু ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং ড্রাইভারসহ ৫ জন মারাত্মক জখম হয়। দুর্ঘটনার পর আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে আহত ৫ জনকে ভর্তির পর অবস্থার অবনতি হলে বাস চালক মোঃ মিজান মোল্লা (৩৫)কে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানেই মোঃ মিজান মোল্লা রোববার রাত ১০টা ২৫ মিনিটে মারা যান বলে তার ভাতিজা মোঃ আবুল কালাম আজাদ রুবেল চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান।
নিহত বাস চালক মোঃ মিজান মোল্লা চাঁদপুর পৌর এলাকার ১৩নং ওয়ার্ডের টেকনিক্যালস্থ মোল্লা বাড়ির মোঃ ফজল মোল্লার ছেলে। সোমবার সকালে জানাজা শেষে নিজ বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।
এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় বাস চালক নিহত হওয়ার ঘটনায় শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে কোনো ধরনের খোঁজখবর এবং চিকিৎসা বা কোনো অনুদানের ব্যবস্থা না করায় বাস চালক ও শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন বাস চালক ও শ্রমিকরা। শ্রমিকদের অভিযোগ, শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের নামে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। অথচ এ টাকা শ্রমিকদের কল্যাণে কখনো ব্যয় করা হয় না। এ টাকা যায় তথাকথিত শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা বাবুল মিজি ও আনোয়ার মুন্সি গংয়ের পকেটে। এমনকি বাস মালিক সমিতির প্রভাবশালী কিছু নেতার পকেটেও যায় এ টাকার ভাগ। আজকে সড়ক দুর্ঘটনায় আমাদের একজন শ্রমিক ভাই গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন। অথচ শ্রমিক নেতাদের পাশে পাইনি। এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ বাবুল মিজির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড মোড় ও টেকনিক্যাল এলাকায় অবস্থান করে চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর জেলা প্রশাসক, পৌর মেয়র ও পুলিশ সুপারের প্রতিনিধির হস্তক্ষেপে বিকেল থেকে বাস চলাচল শুরু হয়।