নোংরা দেয়াল পরিষ্কার করে নান্দনিক করছেন শিক্ষার্থীরা

ক’দিন আগেও চাঁদপুর শহরের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বাসাবাড়ির দেয়ালগুলোর দিকে তাকানো যেত না। রাজনৈতিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনী পোস্টারে ছেয়ে ছিলো। আর এখন দেয়ালজুড়ে নান্দনিকতা। দেয়ালের নোংরা পরিষ্কার করে দল বেঁধে শিক্ষার্থীরা দেয়ালে দেয়ালে তুলে ধরছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নানা স্মৃতিপট, নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়, অসাম্প্রদায়িক চেনতার বাংলাদেশকে গড়ার ছোট ছোট কথা। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল এবং চোখ জুড়ানো চিত্রকর্মে সেসব দেয়াল এখন সেজেছে বর্ণিল রূপে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ঘিরে রক্তাক্ত জুলাইকে গ্রাফিতির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলছে দেয়ালে দেয়ালে।

১১ ও ১২ আগস্ট চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে নান্দনিকতাপূর্ণ দেয়ালগুলোর দৃশ্য দেখা যায়। চাঁদপুর শহর ও আশপাশের অঞ্চলে বসাবাসরত বিভিন্ন বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেয়ালগুলো নান্দনিক করার কর্মযজ্ঞে অংশ নিচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা গত ক'দিনে চাঁদপুর সরকারি কলেজ, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ চাঁদপুর ক্যাম্পাস, মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের দেয়ালগুলোতে বিভিন্ন শিল্পকর্ম আঁকছেন।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর চাঁদপুরের শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে জেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক, থানা, পৌরসভার লেক ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছেন। একই সঙ্গে তারা শহরের ওয়্যারলেস, বিপণীবাগ ও পালবাজারে বাজার মনিটরিং করেছেন। তাদের এই কাজে সহযোগিতা করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয় ও স্কাউট।

এছাড়া চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের বাবুরহাট থেকে শুরু করে শহর এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় কাজ করছেন বহু শিক্ষার্থী। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তারা এই দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের সঙ্গে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) ও স্কাউট সদস্যরা।

ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার এই কাজ শুধুমাত্র চাঁদপুর শহরে নয়, জেলার ফরিদগঞ্জ, হাইমচর, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলায় একইভাবে চলছে।

জেলা শহরের সড়কে দায়িত্বপালনকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ১২ আগস্ট ট্রাফিক পুলিশ ডিউটিতে এসেছে।তার আগে গত ক'দিন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা না থাকায় আমরা জনদুর্ভোগ কমাতে নিজ উদ্যোগে এই কাজ শুরু করেছি।