রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৬

মুন্সিগঞ্জে সহিংসতা: থানা থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া

পুলিশের কঠোর অভিযান

মো.জাকির হোসেন
পুলিশের কঠোর অভিযান
যুবদল নেতা তরিকুল ইসলাম।(ছবি: সংগৃহীত)

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানার হাজত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া যুবদল নেতা তরিকুল ইসলামকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাতে উপজেলার পশ্চিম দেউলভোগ এলাকা থেকে পুলিশ তাকে আটক করে।

তরিকুল ইসলাম শ্রীনগর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন এবং দেউলভোগ গ্রামের আবদুল মান্না ব্যাপারীর ছেলে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তাকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মারামারির একটি মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে তরিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে শ্রীনগর থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা থানায় এসে তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। পুলিশ তাদের অনুরোধে সাড়া না দিলে একদল নেতা-কর্মী সরাসরি ওসি এবং সার্কেল এসপির উপস্থিতিতে থানাহাজত থেকে তরিকুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় শ্রীনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে ২০১ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। পুলিশ ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম উদ্দিন চৌধুরীকে প্রত্যাহার করে মুন্সিগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার জানান, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তিনি বলেন, “থানাহাজত থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া একটি গুরুতর অপরাধ। এ ঘটনায় জড়িতরা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, আসামি তরিকুলের জবানবন্দি থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী নেতাদের নাম সংগ্রহ করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে একাধিক দল কাজ করছে।

এদিকে, স্থানীয়দের দাবি, দলীয় পরিচয়ে অপরাধীকে রক্ষা করার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এই ঘটনায় যুবদলসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে দলীয় নেতাকর্মীদের মতে, এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে শ্রীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজাদ রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “তরিকুল ইসলামকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তদন্ত চলছে এবং আমরা নিশ্চিত করছি যে, এ ঘটনায় জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।”

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশকে উত্তপ্ত করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে।

এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা সড়ক অবরোধ করেছেন। তাদের দাবি, তরিকুল ইসলামের গ্রেপ্তার ও বহিষ্কার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে করা হয়েছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তারা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছেন এবং কোনো রাজনৈতিক প্রভাব এতে কাজ করছে না।

এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে সংযম প্রদর্শন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়