চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ। ৩১ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টায় বদলিজনিত বিদায়ী তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ হাবিব-উল-করিমের কাছ থেকে এ দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। এ উপলক্ষে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কক্ষে সংক্ষিপ্ত পরিসরে বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ সময় হাসপাতালে কর্মরত সকল চিকিৎসক-নার্স ও কর্মচারীর পক্ষ থেকে বিদায়ী তত্ত্বাবধায়ককে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার প্রদান করা হয়। একইসাথে দায়িত্বপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ককে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ও হাসপাতালের আরএসও ডাঃ মাহমুদুন্নবী মাসুম, আরএমও এবং করোনার ফোকাল পার্সন ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেল ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ সালেহ আহমেদ।

মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ ফরিদ আহমেদ চৌধুরীর পরিচালনায় হাসপাতাল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ড মাস্টার মনির ও সিনিয়র স্টাফ নার্স নাজমুন নাহার। এ সময় ডাক্তার, নার্স ও সকল বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।

বিদায়ী তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ হাবিব-উল-করিম তার বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ ১৯ মাস যাবৎ আমি এই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করেছি। আমি দায়িত্ব নেওয়ার দু-এক মাস পরেই করোনার দুর্যোগ শুরু হয়। এর মধ্যে শুরুর দিকে আমি চরমভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। ওই সময়ে আপনাদের যে সহযোগিতা পেয়েছি, তা আমার জীবনে ভুলবো না। কারণ করোনার ওই সময়টাতে সন্তান তার অসুস্থ পিতামাতাকে ফেলে চলে যাবার ঘটনাও ঘটেছে। ঠিক ওই মুহূর্তে আপনারা আমার পাশে ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, করোনার দুর্যোগে আমরা সবাই মিলে কাজ করেছি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সবার কাছ থেকে আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছি। সবমিলিয়ে সার্বিকভাবে আমি চাঁদপুরে সুবর্ণসময় পার করেছি। দায়িত্ব পালনকালে আমার যতো ভুলভ্রান্তি এবং অসুন্দর দিক আছে আপনারা ক্ষমা করে দিবেন। নবাগত তত্ত্বাবধায়ক একজন ভালো এবং কর্মদক্ষ মানুষ। আমি তার জন্যে শুভকামনা জানাচ্ছি।

দায়িত্বপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিদায়ী তত্ত্বাবধায়ক হাবিব-উল-করিম অত্যন্ত ভালো ও কর্মদক্ষ মানুষ। স্যারের সাথে আমার অনেক আগেই পরিচয় ছিল। আমরা একসাথে চাঁদপুরে একটি ক্রান্তিকাল পার করেছি। সবশেষ গত জুলাই এবং আগস্ট মাস ছিল ভয়াবহ ক্রান্তিকাল। আমরা সম্মিলিতভাবে করোনার এই দুর্যোগে মানুষের চিকিৎসা সেবায় এক সঙ্গে কাজ করেছি। তিনি বর্তমানে আরো বড় জায়গায় যাচ্ছেন। স্যারের জন্য আমার শুভকামনা রইল।

ডাঃ সাখাওয়াত উল্লাহ আরো বলেন, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে জনবল সংকট রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আমরা কাজ করবো, চাঁদপুরবাসীকে সর্বোচ্চ সেবা দিবো। আমি যতদিন এ দায়িত্বে আছি, আপনাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করবো।

তিনি বলেন, আমরা যার যার অবস্থান থেকে সঠিকভাবে কাজ করলে আরো ভালো কিছু করতে পারবো। কাজ করতে গিয়ে যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে সেটি আমরা আলোচনা করে সমাধান করব। চাঁদপুরের গণমাধ্যম সবসময় আমাদের পাশে ছিল। তারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন। আগামীতে তারা আমাদের সহযোগিতা করবেন। কোনো ভুলত্রুটি হলে তারা আগে আমাদেরকে জানাবেন সে আশা করছি। সবাই মিলে চাঁদপুরবাসীর সেবায় কাজ করব।

উল্লেখ্য, ডাঃ-হাবিব-উল করিমকে নোয়াখালী ম্যাটসের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়। আগামী সপ্তাহে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।