প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুর শহরকে রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিটি দীর্ঘদিনের। এ দাবিটি এখন গণদাবিতে পরিণত হয়ে গেছে। চাঁদপুর জেলাবাসীর এটি এখন প্রাণের দাবি। চাঁদপুর শহরের নতুনবাজার এবং পুরাণবাজার অংশকে মেঘনার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করতে হলে স্থায়ী বাঁধের বিকল্প নেই। বর্ষা মৌসুমে নদী যখন উত্তাল হয়ে ওঠে, তখন ভাঙ্গন দেখা দিলে তাৎক্ষণিক কিছু বরাদ্দ দিয়ে সাময়িক ভাঙ্গন ঠেকানো গেলেও এগুলো স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নয়। তাই আর কোনো অস্থায়ী কাজ নয়, একটি সমীক্ষা করে স্থায়ী বাঁধ কী ধরনের হলে শত শত বছরের ঐতিহ্যের এই শহরকে রক্ষা করা যাবে সেই বাঁধই চাচ্ছে চাঁদপুরবাসী।
আর এই দাবিটি সম্প্রতি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম চাঁদপুর সফরে আসলে সকল মহল থেকে তাঁর কাছে জোরালোভাবে তোলা হয়। চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, চাঁদপুরের সাংবাদিকবৃন্দসহ সকলেই পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর কাছে এই দাবিটি জোরালোভাবে তুলে ধরেন। চাঁদপুরবাসীর সাথে একাত্ম হয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টিতে এ বিষয়টি জোরালোভাবে আনেন।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিসহ অন্য সকলের দাবির প্রতি তাঁর নৈতিক সমর্থন জানিয়ে বলেন, চাঁদপুর শহরকে রক্ষা করতে হলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের আগে অন্য কাজ করতে হবে আমাদের। সেটি হলো, মিনি কক্সবাজার নামে যে চর মেঘনার বুকে জেগেছে, সেটি পুরোপুরি কেটে সেখানে নদীর নাব্যতা পুরোটা ফিরিয়ে আনতে হবে। একই সাথে চাঁদপুর সীমানায় নদীতে অনেক ডুবোচর আছে, সেগুলোকে কেটে ফেলতে হবে। জেগে ওঠা চর, ডুবোচরগুলো খনন করে নদীর গতিপ্রবাহকে স্বাভাবিক করে দিতে হবে। এসব চর এবং ডুবোচরে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়েই পাড়ে পাল্টা আঘাত করে। আর তখনই ভাঙ্গন দেখা দেয়। তাই জেগে ওঠা চর এবং ডুবোচরগুলো না কাটলে কোনো বাঁধই টিকবে না। প্রতিমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার চাঁদপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে সাংবাদিকদের সাথে এবং জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভায় তাঁর এ কথাগুলো বেশ জোর দিয়ে বলেন। তিনি জেলা প্রশাসককেও এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার জন্যে বলেন।
এ বিষয়ে গতকাল কথা হয় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সাথে। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রতিমন্ত্রী মহোদয় যথার্থই বলেছেন। বাঁধকে টেকসই এবং স্থায়ী করতে হলে নদীর গতিপথ বুঝে তার পথচলাকে নির্বিঘ্ন করে দিতে হবে। সে জন্যে ডুবোচর এবং জেগে ওঠা চর খনন করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে। খনন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নদীর কোথায় কী পরিমাণ খনন করতে হবে তা নির্ধারণ করতে আগে হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে করতে হবে। সে সার্ভে রিপোর্ট অনুযায়ী খনন করা হবে। আর খনন কাজটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বিআইডব্লিউটিএ অথবা পানি উন্নয়ন বোর্ড করবে। জেলা প্রশাসক আরো জানান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের এই পরামর্শ বা নির্দেশনার বিষয়টি যেহেতু আমাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ও অবগত আছেন, তাই দুজনের নির্দেশনা এবং পরামর্শ অনুযায়ীই আমরা সামনে এগুবো।