প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
নকল সরবরাহের দায়ে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের দুই বছরের কারাদণ্ড
শাহরাস্তিতে স্মার্টফোনের মাধ্যমে অভিনব কায়দায় পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল সরবরাহের দায়ে রাজাপুরা আল-আমিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছায়েদুল ইসলামকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসির আরাফাত।
৩ মার্চ শাহরাস্তি চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষায় ইংরেজি প্রথমপত্রের পরীক্ষা চলাকালে বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকারি গাড়ি দূরে রেখে পায়ে হেঁটে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এ সময় কেন্দ্রের ভেতরে অবস্থানরত অফিস সহকারী, আয়া এবং কিছু শিক্ষক ছোটাছুটি শুরু করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেন্দ্রে অনিয়ম ও নকলের বিষয়টি আন্দাজ করতে পেরে শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করেন। পরে শ্রেণিকক্ষের বাইরে এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের বাউন্ডারি সীমানার মধ্যে অসংখ্য হাতে লিখে সমাধান করা প্রশ্নের উত্তর/নকল পাওয়া যায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতি টের পেয়ে শিক্ষকদের ইঙ্গিতে পরীক্ষার্থীরা নকল জানালা দিয়ে শ্রেণিকক্ষের বাইরে ফেলে দেয় বলে ধারণা করা হয়।
এরপর হাতে লিখে সমাধান করা ফটোকপি করা নকল দেখে কেন্দ্রে উপস্থিত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাজাপুরা আল-আমিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ ছায়েদুল ইসলাম (৫৩), পিতা-মৃত মোঃ সুন্দর আলী পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রিন্টারে ২৫-৩০ কপি হাতে লিখা নকলের প্রিন্ট বের করেছেন। উক্ত শিক্ষককে পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি এক পর্যায়ে জানান, বাসায় তিনি মোবাইল ফোন রেখে এসেছেন। তার নম্বরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কল দিলে পাশের ব্যাগের মধ্যে মোবাইল ফোনটি বেজে উঠে। মোবাইল ফোনে প্যাটার্ন লক ছিল, তাকে প্যাটার্ন লকটি খুলতে বললে তিনি তাৎক্ষণাৎ মোবাইল থেকে কিছু একটা ডিলিট করে দেয়ার চেষ্টা করেন। পরে তার মোবাইল ফোন তল্লাশি করে হোয়াটসঅ্যাপের মধ্যে শ্রেণিকক্ষের বাইরে উদ্ধারকৃত হাতে লেখা নকলের হুবহু ছবি পাওয়া যায়। তিনি জানান, তার এক ছাত্র এগুলো সমাধান করে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছে। পরে তিনি কেন্দ্রের প্রিন্টারে প্রিন্ট করে রুমে রুমে নকল সরবরাহ করেছেন।
তিনি দোষ স্বীকার করায় পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন, ১৯৮০-এর ৯ (ক) ধারা মোতাবেক রাজাপুরা আল-আমিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ ছায়েদুল ইসলাম (৫৩), পিতা-মৃত সুন্দর আলী, গ্রাম-ভদ্রগাছা, উপজেলা-নবীনগর, জেলা-ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে দুইবছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইয়াসির আরাফত।