প্রকাশ : ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
হাজীগঞ্জে ইমন হত্যাকাণ্ড
পুরো নীলনকশা পুলিশের হাতে ॥ ১৮ আসামির সবাই পলাতক
হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়নের জনতা বাজারের বার্নিশ মিস্ত্রী ইমন (২৫) হত্যাকাণ্ডের পুরো নীলনকশা পুলিশের হাতে চলে এসেছে। কারা মেরেছে, কেনো মেরেছে, কী কারণে মেরেছে, কারা সরাসরি কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছে, কারা সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে জনতা বাজারে এসেছে--সবই এখন পুলিশের হাতের মুঠোয়। এমনকি কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেয়া দলটিতে থাকা হত্যাকারীদের সবার পরিচয় পুলিশ জানতে পেরেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে ইমন হত্যা মামলার ১৮ নামীয় আসামীর মধ্যে ১৮ জনই পলাতক রয়েছে। ফয়েজ বাবু নামের যুবলীগ নেতাকে ঘটনার দিন রাতেই আটক করেছে পুলিশ। এদিকে ইমন হত্যার বিচারের দাবিতে গত রোববার বিকেলে স্থানীয় জনতা বাজারে নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। গত রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ইমনের বাবা মোঃ হারুনুর রশিদ বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা (নং-১৪) দায়ের করেন। এতে ৯ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলো : জিলানী বেপারী (২০), তারেক আজিজ (৩০), রাসেল খান (২৭), আব্দুল্লাহ (২৮), রমজান বেপারী (২২), ফরহাদ (২২), রাকিব (২৫), জাবেদ বেপারী (২৮), শাহাদাত বেপারী (২৬), পারভেজ মোশারফ কালু (২৫), জাহিদ (২২), পলাশ (২৬), শিপন চন্দ্র রায় (২৬), রাজু দাশ (২৫), সিয়াম (১৮), কাবির (১৮), নাছির (১৮) ও রায়হান (১৯)সহ অজ্ঞানামা আরো ৯/১০ জন।
সূত্র জানায়, গত ২১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) বিকেলে রাজারগাঁও ইউনিয়নের পূর্ব রাজারগাঁও বেপারী বাড়ির একটি ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিলে তবররুক বিতরণ নিয়ে জিলানী (১নং আসামী) ও সৈকত (জনতা বাজার এলাকার) নামের দুই যুবকের তর্ক-বির্তকের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৩ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) বিকেলে দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নে সাতবাড়িভাঙ্গা গ্রামে আবারও তাদের দুজনের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও মারামারির ঘটনা ঘটলে জিলানী স্থানীয় একটি দোকানে আশ্রয় নেয়। জিলানী দোকানে আশ্রয় নিলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ইমন (হত্যাকাণ্ডের শিকার) তাকে বের না করার জন্যে দোকানীকে বলেন এবং বাহির হলে সৈকত তাকে (জিলানী) মারধর করবে তিনি বলে চলে যান। পরে ওইদিন সন্ধ্যায় রাজারাগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তারেক আজিজসহ প্রায় ২০ জনের একটি দল ৪টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মামলার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা বাকিলা ইউনিয়নের জনতা বাজারে এসে ইমনের উপর অতর্কিত হামলা করে তাকে মারাত্মক আহত করে চলে যায়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) পঙ্কজ কুমার দে ও হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে একটি চা দোকানের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেন।
এদিকে ঘটনার সময়ের ভিডিও ফুটেজসহ স্থানীয় জনতা বাজারের প্রত্যক্ষদর্শীদের (হত্যাকাণ্ডের সময়ে উপস্থিত) বরাত দিয়ে একটি সূত্র জানায়, রাজারগাঁও থেকে ভাড়া করা দলটি যেসব সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে জনতা বাজারে কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছে সেসব সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালককের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, অচিরেই এ মামলার আসামিরা আটক হবে।