প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর পুরাণবাজার জাফরাবাদ পালপাড়া বিষ্ণু মন্দিরে ১৭তম বাৎসরিক হরিনাম মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় শ্রীমৎ প্রাণ গোপাল গোস্বামীর স্মরণে প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও প্রাণ গোপাল গোস্বামীর ভক্ত শিষ্য ও অনুরাগীগণ শ্রীমদ্ভাগবত পাঠসহ ২৪ প্রহরব্যাপী শ্রী শ্রী হরিনাম মহাযজ্ঞের আয়োজন করেন।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে গতকাল ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে, ৪ দিনব্যাপী ধর্মীয় উৎসবের শুভ সূচনা করেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সস্পাদক চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি তমাল কুমার ঘোষ। তিনি আয়োজকদের প্রতি অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ধর্ম মানুষকে সুসংহত করে। আমরা যত উন্নত জীবনের অধিকারী হই না কেন তা সকলই অস্থায়ী। আমাদের অধীনে থাকা কোনো সম্পদই আমাদের জীবনে স্থায়ী নয়। আমরা এসেছি সম্পদ ছাড়া, আবার সম্পদ ছাড়াই আমাদেরকে যেতে হবে। অর্জিত সম্পত্তি সকলই পড়ে থাকবে। তাই পরকালকে বিশ্বাস করতে হবে এবং আমাদের কর্মময় জীবনের সাথে ধর্মকে প্রাধান্য দিতে হবে। উত্তম মানুষ হতে হবে। ন্যায় পথে চলতে হবে। সমাজ সংসারে যতজন মহাপুরুষের আবির্ভাব হয়েছে। সকলেই শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে কথা বলেছেন। তাদের মূলবাণী ছিল মানুষকে ভালোবাসো, সৎ পথে চল, অন্যায় কর্ম থেকে বিরত থাক। সে যে ধর্মের লোকই হোক না কেন তা সকলের জন্যেই ছিল প্রযোজ্য। তিনি ধর্মীয় আদর্শ মেনে সামর্থ্য অনুযায়ী, সামাজিক উন্নয়নে, সেবামূলক কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকার জন্যে সকলের প্রতি আহ্বান জানান এবং উৎসবের সফলতা কামনা করেন।
উপস্থিত ছিলেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ সভাপতি পরেশ চন্দ্র মালাকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোপাল চন্দ্র সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন সাহা, সদস্য মানিক ঘোষ, সহদেব বর্মণ, দুলাল চন্দ্র রায়, তাপস স্বর্ণকার, জাতীয় হিন্দু মহাজোট চাঁদপুর জেলা সভাপতি শিবু চন্দ্র দাস, পুরাণবাজার দাসপাড়া শিব মন্দির কমিটির সভাপতি উত্তম কুমার দে, জাফরাবাদ পালপাড়া বিষ্ণু মন্দিরের সভাপতি উত্তম কুমার গোস্বামী, সাধারণ সম্পাদক দেব কুমার কুন্ডু, সহ-সভাপতি গৌতম গোস্বামী, সুবল পোদ্দার, মানিক নন্দী, সমীর পাল, রসরাজ ঘোষ, জয়রাম পাল, রনি পোদ্দার, নেপাল পালসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শ্রীমৎ প্রাণ গোপাল গোস্বামীর ভক্তবৃন্দসহ সুধীজন।
তারা এই দিন বিকেলে নারী, পুরুষ সম্মিলিত হয়ে, ব্যান্ড পার্টির বাজনা সহকারে উৎসবমুখর পরিবেশে নেচে গেয়ে হরিনাম কীর্তন সহকারে পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদীতে গঙ্গা আহ্বান করেন। সন্ধ্যা ৭টায় উৎসবস্থল বিষ্ণু মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় শ্রীমদ্ভভাগবত পাঠ। পাঠ করেন বিশিষ্ট পাঠক শ্রী উত্তম কুমার গোস্বামী। সন্ধ্যা সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হয় ৩ দিনব্যাপী ২৪ প্রহর শ্রী শ্রী হরিনাম যজ্ঞের শুভ অধিবাস। আজ থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অহোরাত্র নামযজ্ঞ শেষে ২ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ে মহানাম যজ্ঞের সমাপন, তৎপর নগর কীর্তন ও জলকেলী উৎসব শেষে মহানাম যজ্ঞের সমাপ্তি ঘটবে বলে জানা যায়। ১ ডিসেম্বর মধ্যাহ্নে অনুষ্ঠিত হবে মহোৎসব ও মহাপ্রসাদ বিতরণ। বহিরাগত ভক্তবৃন্দের জন্য উৎসব চলাকালীন প্রসাদের ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানান মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক দেব কুমার কুন্ডু।