প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
চাঁদপুর পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ড
৩০০ পরিবার পানিবন্দী : দুর্ভোগে জনজীবন
‘এখন বর্ষাকাল। নিয়মিতই বৃষ্টি হয়। আর বৃষ্টির পানি জমে রূপ নিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতায়। পানি নিষ্কাশনের নাই কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা। আমরা গরিব বলে আমাদের দুঃখ-কষ্ট কেউ বুঝে না। প্রতি বছরই পৌরসভার ট্যাক্স দিই। বিশুদ্ধ পানি, রাস্তাঘাট, গ্যাস সরবরাহ, পানি নিষ্কাশনসহ পৌরসভার বিভিন্ন সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত রয়েছি’এভাবেই কথাগুলো একাধিক ভুক্তভোগী নারী চাঁদপুর কণ্ঠকে বলতে লাগলেন।
|আরো খবর
সরেজমিনে গিয়ে দেখি যায়, চাঁদপুর পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ডের জিটি রোডস্থ (উত্তর) সামু গাজী বাড়ি এলাকার বেশ ক’টি বাড়ির মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে মরহুম ওয়ালী উল্লাহ পাটওয়ারী, মরহুম শওকত আলী ছৈয়াল, মরহুম আবু বেপারী ও মরহুম ফজল খান বাড়ির প্রায় ৩শ’ পরিবার জলাবদ্ধতায় পড়ে আছেন।
ছৈয়াল বাড়ির কোহিনুর বেগম জানান, আজ ৩ মাস হয়ে গেছে বৃষ্টির জমে যাওয়া পানি নিষ্কাশন হয় না। আমাদের মাটির ঘর। খুব কষ্ট হচ্ছে আমাদের।
পাটওয়ারী বাড়ির রাবেয়া বেগম জানান, আমাদের বাড়ির বেশিরভাগ টয়লেটই চাক্কি দিয়ে করা। বৃষ্টির জমে থাকা পানির সাথে টয়লেটের লাইন মিলে গেছে।
রফিকুল ইসলাম পাটওয়ারী জানান, এখন আগস্ট মাস। এ মাসে ডেঙ্গু মশার লার্ভা জন্মায়। পানি জমে রাস্তাঘাট শ্যাওলা পড়ে গেছে। জমে থাকা পানি নিষ্কাশন এখন জরুরি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে কাউন্সিলরকে বলছি, এখনও কোনো কাজ হয়নি।
মিজান বেপারী জানান, পৌরসভার ট্যাক্স দিলেও সেবা মিলে না। কাদায় একাকার হয়ে গেছে বাড়িঘর। পৌরসভার কাছে ভাত-কাপড় চাই না, জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন করে দিন।
আনোয়ার হোসেন মিজি জানান, এখানে বেশ ক’টি বাড়ি আছে। সে সকল বাড়িতে বৃষ্টির পানি, বাসা-বাড়ির অবশিষ্ট পানি জমে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চাগুলো ঘরবন্দী হয়ে আছে। অনেকেরই শরীরে দেখা দিয়েছে চর্মরোগ।
মোঃ দেলোয়ার খান জানান, যার যার সুবিধা মতো পুকুর, ডোবা-নালা ভরাট করে ফেলেছে। যার কারণে বৃষ্টি হলেই পানি জমাট বেঁধে যায়। এখন এ এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা জরুরি হয়ে পড়েছে।
ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুদ পাটওয়ারী জানান, ৫শ’ ফুট লম্বা একটি ড্রেনের অভাবে ৩শ’ পরিবার মাসখানেক ধরে জলাবদ্ধতায় ভুগছেন। বিষয়টি নিয়ে আমি চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। আগামী অর্থবছরে এ ড্রেনের কাজ করা হবে। এখন তাৎক্ষণিকভাবে পানি সরাতে কাউন্সিলরের সাথে আলাপ করেছি।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অ্যাডঃ মোঃ কবির হোসেন চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ওই সকল বাড়ির প্রত্যেক ঘরে ঘরে গিয়ে দেখেছি। আসলেই তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এখন তো বর্ষার সময়। এ সময় পৌরসভা থেকে বরাদ্দ দিয়ে ড্রেনের কাজ করা খুব কঠিন। তবে আগামী অর্থবছরে মেয়র মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করে সেটি আগে করা হবে। বর্তমান সমস্যা নিরসনে মাসুদ পাটওয়ারীর সাথে আলাপ হয়েছে। আলাদা মেশিন লাগিয়ে পানি নিষ্কাশন করে জলাবদ্ধতা নিরসন করা যায় কি না সেটা দেখছি।