প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
মোঃ আহসান হাবীব, জন্মগতভাবে আওয়ামী পরিবারের সন্তান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার অন্যতম পলাতক ও ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী মেজর (বরখাস্তকৃত) রাশেদ চৌধুরীর প্রতিবেশী আহসান হাবীবের পরিবার। যে কারণে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আহসান হাবীবের বাবা আব্দুল লতিফ মাস্টারকে ধরে নিয়ে হত্যা করে রাশেদ চৌধুরী। যে হত্যার বিচার আজও পাননি। শিশু বেলায় বাবাকে হারিয়ে মাকে নিয়ে বেঁচে আছেন আহসান হাবীব। বর্তমানে আওয়ামী লীগের স্বর্ণযুগে এসেও দল থেকে কোনো সুবিধা না নিয়ে নিজে জড়িয়ে পড়েছেন ব্যবসার কাজে। আওয়ামী লীগ আর নিজের ব্যবসা এই দুটোই এখন তার ধ্যানজ্ঞান। আওয়ামী লীগের দুর্দিনে দলের কাণ্ডারীর দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমানে রয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদে। সর্বশেষ দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজেদের কারণে বিজিত হন।
আহসান হাবীব স্থানীয় বেলচোঁ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি; বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি; সাধারণ সম্পাদক, বেলচোঁ বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি; সাবেক সভাপতি, শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ, বেলচোঁ উচ্চ বিদ্যালয়; সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বেলচোঁ উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখা; সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইউনিয়ন শাখা; সাবেক আহ্বায়ক, ইউনিয়ন যুবলীগ; সাবেক সদস্য, উপজেলা যুবলীগ; সাবেক সদস্য, জেলা ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ধারাবাহিক আয়োজন রাজনৈতিক ভাবনা পর্বে মোঃ আহসান হাবীব তার মনের অভিব্যক্তি তুলে ধরেছেন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার দৃষ্টিতে যে কোনো নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন কিসের নিরিখে হয়? এজন্যে কী কী করতে হয়?
আহসান হাবীব : দলীয় মনোনয়ন কয়েকটা নিরিখে হতে পারে-এলাকার জনপ্রিয়তা, গোয়েন্দা রিপোর্ট, শিক্ষাগত যোগ্যতা, সামাজিক অবস্থান, পারিবারিক অবস্থান, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ দলের কিনা। এর জন্যে এক কথায় বলতে হবে রাজনৈতিক আদর্শ থাকতে হবে। আমি নিজেও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছিলাম, কিন্তু মনোনয়ন কিসের নিরিখে দেয়া হয় আমার সঠিক জানা নেই। তবে আমার ধারণা, অনেক শ্রমণ্ডঘাম, দলীয় কোন্দল মিটানো, রাজনৈতিক জোরালো অবস্থান, সাহস, অনেক ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে মনোনয়নের দৌড়ে দৌঁড়াতে হয়।
চাঁদপুর কণ্ঠ : স্থানীয় পর্যায়ে নিজ দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল কী কী কারণে হয় বলে আপনার ধারণা? এ কোন্দল নিরসনে জেলা পর্যায় বা কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতার সাংগঠনিক ব্যবস্থাগ্রহণের হুঙ্কার সাধারণত দ্রুত উচ্চারিত হয় না। এটার হেতু কী?
আহসান হাবীব : স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় কোন্দল মূলত কয়েকটা কারণে হয়-ভিন্ন মতাদর্শের লোক দলের পদ পদবীতে লবিংয়ের মাধ্যমে চলে আসা, ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন ও দলের পদণ্ডপদবী না পাওয়া, ব্যক্তি সুবিধা না পাওয়া। সিনিয়র নেতৃবৃন্দের চাপাচাপিতে সাংগঠনিক ব্যবস্থাগ্রহণে কোন্দলের নিরসন হয় না। দলের বিদ্রোহীদের বহিষ্কার করে পরে আবার ফিরিয়ে নেবার ইতিহাস সচরাচর থাকে বলে হুঙ্কার কাজে আসে না।
চাঁদপুর কণ্ঠ : দলের তৃণমূলের বর্ধিত সভায় কিংবা সাধারণ বর্ধিত সভায় খোলামেলা অনেক কথা হয়। অনেক তিক্ত সত্য কথা উচ্চারিত হয়। এগুলো কি আদৌ আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়?
আহসান হাবীব : না। এক কথায় মাঠ পর্যায়ে ব্যবস্থাগ্রহণ মোটেই হতে দেখি না। তবে কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হলেও আমরা একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ে বিষয়গুলো জানতে পারি না।
চাঁদপুর কণ্ঠ : রাজনীতিতে আদর্শের চর্চা ও দলীয় গঠনতন্ত্র যথাযথভাবে মেনে চলার গুরুত্ব কতোটুকু? আপনি কি মনে করেন আপনার দলে উক্ত চর্চা ও মেনে চলার কাজটা যথাযথভাবে হচ্ছে?
আহসান হাবীব : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস অনেক লম্বা ও ত্যাগের অংশ অনেক বেশি। আওয়ামী লীগ করতে হলে ত্যাগ আর আদর্শ থাকতে হবে। বর্তমান সময়ে মাঠ পর্যায়ে গঠনতন্ত্র আর আদর্শের চর্চার বিষয়টি বিলুপ্ত প্রায়। দলীয় গঠনতন্ত্র নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা বিরলদৃষ্ট। আমি মনে করি, ত্যাগ স্বীকার আর আদর্শের চর্চা আর সাংগঠনিক গুরুত্ব বুঝা ছাড়া রাজনীতিতে শান্তি ফিরবে না।