রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৫ মে ২০২২, ০০:০০

আজ জাতীয় কবির ১২৩তম জন্মবার্ষিকী
অনলাইন ডেস্ক

আজ বুধবার ২৫ মে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ সালের ২৪ মে, ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম কাজী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম কাজী ফকির আহমেদ এবং মাতার নাম জাহেদা খাতুন। জাহেদা খাতুন ছিলেন কাজী ফকির আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী। পিতা-মাতার ৬ষ্ঠ সন্তান ছিলেন নজরুল। নজরুলের সহোদর তিন ভাই ও এক বোন। এরা হলেন কাজী সাহেব জান, কাজী আলী হোসেন ও বোন উম্মে কুলছুম।

নজরুলের জন্মের আগে তাঁর পর পর চার ভাইয়ের মৃত্যুর পর নজরুলের জন্ম। এ জন্যেই নজরুলের জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হলো দুখু মিয়া। তাঁর বাবা বাড়ির মসজিদের পাশে একটি মক্তব চালাতেন ও মসজিদে আযান দিতেন, ইমামতি করতেন, মাজারের খাদেমের কাজ করেন ও কোরআন খতমের দাওয়াত গ্রহণ করতেন। কাজী ফকির আহমেদ কিছুদিন জ্বরে অসুস্থ থাকার পর ১৯০৮ সালে কবির ৯ বছর বয়সে ১৩১৪ বঙ্গাব্দের ৭ চৈত্র মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলামের অপরিসীম অবদান বর্ণনা করেও বোধ হয় শেষ করা যাবে না। বাংলা সাহিত্যে তাঁর সব ক্ষেত্রে বিচরণ ছিল মুক্ত আকাশে পাখি উড়ার মতই। তিনি আমাদের অহঙ্কার ও তারুণ্যের কবি, প্রেরণার কবি, উৎসের কবি, উদ্দীপনার কবি। তিনি বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবি ও একজন বাঙালি কবি। একটি বিদ্রোহী কবিতা লিখেই বিদ্রোহী কবি এবং পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি। দেশপ্রেম, মহত্ত্ব, মনুষ্যত্ববোধ, মানুষের মধ্যে প্রেমণ্ডভালোবাসা জাগ্রত করা তাঁর লেখনিতে পাওয়া গেছে।

পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ থেকে পরাধীনতার বিরুদ্ধে লেখনি, বৃটিশ শাসকদের হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করেও ক্ষুরধার লেখনি অব্যাহত রাখা, প্রেমণ্ডপ্রণয়-ভালোবাসায় বিচ্ছেদ, জেল-জরিমানা, অর্থভৈববের প্রাচুর্যহীন জীবন, দারিদ্র্যের নিষ্পেষণে থেকে জীবন-যাপন, প্রথমজীবনে নার্গিসের প্রেমের বিরহ-বেদনা, প্রেয়সী ও পরে স্ত্রী প্রমীলার পক্ষাঘাত জনিত অসুস্থতায় কবিকে সাময়িক বিচলিত হওয়া, সন্তান ও মাতৃবিয়োগ থেমে যান নি তিনি। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক, যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রণী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্যে সর্বাধিক পরিচিত হন।

১৯২০ সাল হতে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত তাঁর সব রচনার সঠিক হিসেব পাওয়া না গেলেও ২ হাজার ৮শ’ গান, ৯শ’ কবিতা, ১শ’ টি প্রবন্ধ, ৫৫টি গ্রন্থ, ২৫টি নাটক, ১৮টি গল্প, ১শ’ ৯৪ গজল ও ইসলামী গান এবং ৪৫০টি শ্যামা সঙ্গীত রচনার প্রমাণ পাওয়া যায়। বাংলা সাহিত্য গগণে আর কোনো বাংলা ভাষার কবি বা সাহিত্যিক ২০-২১ বছরের অত্যল্প সময়ে এত রচনাবলি রেখে গেছেন কি না তা জানা নেই। বাংলা গানে তিনি রাগ-রাগিণী সংযোজন করেন।

কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্য, কবিতায় সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ এ দু’বাংলাতেই তাঁর কবিতা, গান ও গজল সমানভাবে সমাদৃত। তাঁর কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে ‘বিদ্রোহী কবি’ নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাঁর কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।

একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল সর্বদাই ছিলেন সোচ্চার। অগ্নিবীণা হাতে তাঁর প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তাঁর প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনের সব কাজেই ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ। তাঁর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উভয় বাংলাতে উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়