রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৪ মে ২০২২, ০০:০০

হাইমচরে প্রভাবশালী নেতার প্রত্যক্ষ মদদে জোরপূর্বক জমি দখল
চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥

হাইমচর উপজেলার সদর আলগী বাজারে মূল্যবান বাণিজ্যিক প্লট জোর দখল করে দিবানিশি দোকানঘর নির্মাণ কাজ করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষনেতা।

ঘটনার বিবরণ ও আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার মহজমপুর গ্রামের মৃত গনি মুন্সীর ৫ ছেলে ও ৪ মেয়ে। বাবার মৃত্যুর পর ভাই-বোনের সম্পত্তি হিসাব-নিকাশ করে বন্টন করা হয়। বন্টন অনুযায়ী সকলে সকলের অংশে দখলে আছে। বন্টনের পর মৃত গনি মুন্সীর ছেলে পক্ষের ওয়ারিশ মিলন মিয়া বন্টনের বিরুদ্ধে একটি আনুষ্ঠানিক বন্টন মামলা রুজু করেন। যা বর্তমানে বিচারাধীন আছে।

এরই মধ্যে শাহিন মিয়াজীসহ কিছু লোভীর নজর পড়ে উপজেলা সদরস্থ আলগীবাজারে মৃত গনি মুন্সীর রেখে যাওয়া বাণিজ্যিক জমির উপর। মৃত গনি মুন্সীর মেয়ে কোহিনুরকে প্রলোভন দেখিয়ে মীমাংসিত বন্টন অমান্য করে বাজারের বাণিজ্যিক প্লট বিক্রিতে সম্মত করে অতি সংগোপনে উপজেলা আওয়ামী লীগের ঐ শীর্ষ নেতা প্রভাব খাটিয়ে সাব রেজিস্টারকে মৃত্যুপথযাত্রী কোহিনুরের বাসায় নিয়ে মৃত গনি মুন্সীর ছেলে ইসমাইল মুন্সীর নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের সীমানা নিয়ে ৮ লাখ টাকা মূল্যে ৩.৭৫ শতক জমি জনৈক জহিরুল ইসলাম সোহেল পাটওয়ারীর নামে সাব কবালা দলিল করে দেয়ার ব্যবস্থা করেন।

দলিল হওয়ার পর সাথে সাথেই সংবাদ পেয়ে এ দলিলকে অবৈধ দাবি করে দলিল বাতিলের মামলা করেন মৃত গনি মুন্সীর নাতী বোরহান মুন্সী। যা বর্তমানে বিচারাধীন আছে।

এরই মধ্যে সোহেল পাটওয়ারী ৮ লাখ টাকায় কেনা ৩.৭৫ শতক জমি অর্ধ কোটির অধিক মূল্যে বিক্রি করেন ৪নং নীলকমল ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন সরদারের নিকট। সালাহউদ্দিন সরদার জমি কিনেই দখলের চেষ্টা করলে বোরহান মুন্সী গং বাদী হয়ে দখলের বিরুদ্ধে মামলা করলে সংশ্লিষ্ট আদালত উক্ত বিরোধপূর্ণ সম্পত্তির উপর স্থিতাবস্থার নির্দেশ দেন। ফলে আপাতত দখল বন্ধ থাকে।

গত ১৮ মে তারিখ আদালত স্থিতাবস্থার আদেশ তুলে নিলে ওইদিন রাত থেকেই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা চার দিকে সশস্ত্র পাহারা বসিয়ে নিজে সশরীরে উপস্থিত থেকে দিবা-নিশি ২৪ ঘন্টা বিপুল সংখ্যক শ্রমিক নিযুক্ত করে দোকানঘর নির্মাণের কাজ করে চলছেন। ১৯ মে বোরহান মুন্সী মহামান্য হাইকোর্টে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট করলে মহামান্য হাইকোর্ট মামলার নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উক্ত জমিনের উপর পুনরায় স্ট্যাটাসকো জারি করে।

কিন্তু আদালতের এ নির্দেশ অমান্য করেই অবিরাম চলছে নির্মাণ কাজ। নির্মাণ কাজের চার দিকে সন্ত্রাসী পাহারা থাকায় অবৈধ নির্মাণ কাজের ছবি তোলা বা সংবাদ সংগ্রহেও যেতে পারছেন না কোনো সংবাদ কর্মী।

এ বিষয়ে মামলার বাদী বোরহান মুন্সী এ প্রতিনিধিকে জানান, আমার বাবা-চাচারা থাকতেই ফুফুদেরকে তাদের ওয়ারিশের জমিন হিসাব-নিকাশ করে দিয়ে দিয়েছেন। সেই জমিনে আমার ফুফুদের ঘর বাড়ি রয়েছে। আমাদের বাজারের মূল পয়েন্টের এ জমিতে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধির নজর পড়ে। তিনি আমার এক ফুফুকে টাকার লোভ দেখিয়ে অবৈধভাবে জমিন রেজিস্ট্রি করে নেন। সেই জমিনের অবৈধ দলিল বাতিলের জন্যে আমরা চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের করি। জমিনের ওপর আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেয়। ১৮ মে আদালত জমিনের নিষেধাজ্ঞা উঠায় নি। আমি পুনরায় উচ্চ আদালতে আবেদন করেল আদালত ১৯ মে আবারো জমিতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে। কিন্তু ওই নেতা জোর খাটিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তার ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করছেন। আমি হাইমচর থানায় গিয়েও কোনো প্রকার সহযোগিতা পাই না। ৯৯৯-এ ফোন দিলেও পুলিশ প্রশাসন কোনো প্রকার ভূমিকা রাখেনি। বর্তমানে আমরা পরিবারের সদস্যগণ চরম আতঙ্কে দিনাতিপাত করছি। ওই নেতার প্রভাবের কারণে স্থানীয় প্রশাসনসহ কেউ আমাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেননি। আমরা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়