প্রকাশ : ২০ মে ২০২২, ০০:০০
হাইমচরে পাবজি-ফ্রি ফায়ারে আসক্ত হয়ে এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে চরভৈরবী ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়াবগুলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ৮ম শ্রেণিপড়ুয়া ওই কিশোরের নাম জনি গাজী (১৫)। জনি ওই গ্রামের দেলোয়ার গাজীর ছেলে।
জানা যায়, চরভৈরবী ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়াবগুলা গ্রামের দেলোয়ার গাজী জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনের মতো বুধবার মাছ ধরতে নদীতে যান। স্ত্রীসহ তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে থাকেন ঘরে। তারা প্রতিদিনের মতো সবাই রাতে ঘুমিয়ে থাকেন। মেঝো ছেলে জনি ভোরে ফজর নামাজ পড়তে স্থানীয় মসজিদে যান। নামাজ শেষে বাড়িতে এসে কিছুক্ষণ পরই ঘর থেকে চলে যায়। চলে যাওয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর পার্শ¦বর্তী বাড়ির এক নারীর ডাক-চিৎকার শুনে বাগানে গিয়ে দেখেন, জনি গলায় ওড়না পেছিয়ে ফাঁস দিয়ে গাছের সাথে ঝুলে আছে। তাৎক্ষণিক লোকজন হাইমচর থানায় জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে মৃত কিশোরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে হাইমচর থানা পুলিশ কিশোরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করে।
স্থানীয়রা জানান, ছেলেটি মোবাইলে আসক্ত ছিলো। ফ্রিফায়ার গেমস্ খেলতে খেলতে তার মাথা নষ্ট হয়ে যায়। গেমস্ খেলার নেশায় ছেলেটি ঠিকমতো স্কুলে যেতো না। তাই তার বাবা তাকে গেমস্ না খেলার জন্যে নিষেধ করেন। হয়তো রাগে-ক্ষোভে সে আত্মহত্যা করেছে বলে তাদের ধারণা।
কিশোরের পিতা দেলোয়ার গাজী জানান, প্রতিদিনের মতো গতকালকেও আমি নদীতে মাছ ধরতে যাই। সকালে আমাকে ফোন করে বলে বাড়িতে আসতে। এখন এসে দেখি, আমার ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। কেনো আত্মহত্যা করলো কী কারণে করলো আমার কিছুই জানা নেই।
কিশোরের মা জলেখা বেগম বলেন, আমার ছেলের সাথে কারো কোনো শত্রুতা ছিলো না। সে মাঝে মধ্যে স্কুলে যেতো। নদীতেও মাছ ধরতো। রাতে ঘুমানোর সময় আমাকে বললো, মা, আমাকে ফজরের নামাজের সময় উঠিয়ে দিয়েন। আমি নামাজ পড়বো। সে নিজে নিজে ভোরে নামাজ পড়তে যায়। নামাজ পড়ে এসে আবার বাইরে যায়। বাইরে গিয়ে বাবা আর ঘরে আসে না। লোকজনের চিৎকার শুনে বাগানে গিয়ে দেখি বাবা আমার গাছের সাথে ঝুলে আছে। তিনি বলেন, আমার ছেলের অনেক রাগ ছিলো। কোনো কিছু বললেই রেগে যেতো। কথা একেবারেই কম বলতো। মাথায়ও সমস্যা থাকার কারণে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
হাইমচর থানার ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন জানান, গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরের আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে চাঁদপুর মর্গে পাঠিয়েছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, বাবা-মায়ের শাসনের ফলে রাগান্বিত হয়ে ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে।