প্রকাশ : ১২ মে ২০২২, ০০:০০
শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের দহশ্রী পূর্ব পাড়া জামে মসজিদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ বিরোধ সমাধান করতে এগিয়ে আসলে (প্রতিপক্ষের কাছে) লাঞ্ছিত হন ইউপি সদস্য। শাহরাস্তি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, দহশ্রী পূর্ব পাড়া জামে মসজিদের কোনো কমিটি ছাড়াই শুধুমাত্র কোষাধ্যক্ষ দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। কমিটির বর্তমান কোষাধ্যক্ষ আলী হোসেন ঈদের নামাজ শেষে উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশে আয়-ব্যয় হিসাব উপস্থাপন করেন। এরপর মিয়াজী বাড়ির ইকবাল হোসেন কোষাধ্যক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে মসজিদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্যে একজন মোতাওয়াল্লি নির্ধারণের জন্যে প্রস্তাব করেন। এ নিয়ে মিয়াজী বাড়ি ও পূর্ব হাজী বাড়ির মুসল্লিদের মাঝে বাকবিত-া শুরু হয়। এতে মিয়াজী বাড়ির নূরুল ইসলাম আহত হন। এক পর্যায়ে ইমাম সাহেব মোনাজাত দিয়ে নামাজ শেষ করেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করতে থাকে।
গত ৬ মে শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের জন্যে মুসল্লিগণ মসজিদে প্রবেশ করে। এ সময় এলাকাবাসীর অনুরোধে রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান স্থানীয় ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম এ মসজিদে সকলের সাথে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে তিনি উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিষয়টি আলোচনা করে সমাধান করা হবে। আপনারা শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন। এরপর জাহাঙ্গীর হোসেন দাঁড়িয়ে ইউপি সদস্যকে ধন্যবাদ জানান। এরই মধ্যে কয়েকজন আমির হোসেনের নেতৃত্বে আবারো উত্তেজিত হয়ে পড়েন। মুহূর্তের মধ্যেই হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এতে কয়েকজন আহত হন। আহতদের শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্যে নেয়া হয়। সেখানেই হাজী বাড়ির অমির হোসেনের ছেলে মামুন ইউপি সদস্য খোরশেদ আলমকে লাঞ্ছিত করে।
খোরশেদ আলম জানান, আমি বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু তা পূর্ব হাজী বাড়ির লোকজনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তিনি আরো বলেন, আমি আহতদের দেখতে হাসপাতালে যাই। কিন্তু আমির হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন মিন্টুসহ বেশ কয়েকজন উত্তেজিত হয়ে আমাকে হুমকি-ধমকি দেয়। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি বাড়ির জন্যই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না।
মুসল্লি আলমগীর হোসেন জানান, মিয়াজী বাড়ির পূর্ব পুরুষগণ স্বাধীনতার কয়েক বছর আগে এ মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। মূলত মিয়াজী বাড়ি ও হাজী বাড়ির লোকজনই এখানে নামাজ আদায় করে থাকে। মিয়াজী বাড়ির লোকজন মসজিদ উন্নয়নে কাজ করুক অথবা কোনো দায়িত্ব পালন করুক তা হাজী বাড়ির লোকজন মেনে নিতে পারছে না। আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। এদিকে দুপক্ষের মধ্যে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে, যে কোনো সময় আবারো সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।