শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

বড় ভাইয়ের ঘুষিতে প্রাণ গেলো ছোট ভাইয়ের
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

হাজীগঞ্জে বড় ভাই নজরুল ইসলামের (৫২) ঘুষিতে প্রাণ গেলো ছোট ভাই সেলিম হোসেনের (৪৫)। সম্পত্তিগত বিরোধ নিয়ে সালিসি বৈঠকের কিছু পূর্বে দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারির এক পর্যায়ে এমন ঘটনা ঘটে। রোববার দুপুরে হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে হাজীগঞ্জের হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের হাঁড়িয়াইন গ্রামের নতুন মিজি বাড়িতে। নিহত সেলিম হোসেন ওই বাড়ির মৃত সামছুল হকের ছেলে। তিনি হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ বাইতুল মামুর মসজিদের সহকারী ইমাম (মুয়াজ্জিন)। তিনি পাঁচ সন্তানের জনক। একই ঘটনায় অপর অভিযুক্ত হলেন নিহতের চাচাতো ভাই ছেরাজুল ইসলামের ছেলে সোলেমান মিজি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বড় ভাই নজরুল ইসলাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, এদিন সকালে সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে বড় ভাই নজরুল ইসলাম ছোট ভাই সেলিমের মধ্যে সালিসি বৈঠক হওয়ার কথা ছিলো। স্থানীয় ইউপি সদস্য খোরশেদ সালিসি বৈঠকে উপস্থিত হলেও সেলিমের পক্ষের লোকজন না আসায় বৈঠকের কিছুটা দেরি হয়। এর মধ্যে নজরুল ও মোঃ সেলিমের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এতে করে দুজনেই অচেতন হয়ে পড়েন। পরে নিজ নিজ পরিবারের লোকজন তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক সেলিমকে মৃত ঘোষণা করেন। একই সময় আহত নজরুলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের বড় মেয়ে আয়েশা আক্তার জানান, আমাদের ঘর তোলা (নির্মাণ)কে কেন্দ্র করে এদিন সকালে বাবা ও জেঠার (নজরুল ইসলাম) সাথে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে জেঠা ও সোলেমান জেঠা একসাথে বাবাকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারে। পরে বাবা অচেতন হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তার বাবা হৃদরোগী ছিলেন বলে আয়শা আক্তার জানান।

নিহতের স্ত্রী পেয়ারা বেগম জানান, ঝগড়ার এক পর্যায়ে আমার জা (নজরুলের স্ত্রী) আমাকে মারধর করলে আমি ঘরে চলে আসি। এরপর বাইরে কী হয়েছে, আমি তা দেখিনি। পরে আমার স্বামী ঘরে এসে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন (অচেতন হয়ে পড়েন)।

এ দিকে হাসপাতালে ও নিজ বাড়িতে অভিযুক্ত নজরুল ইসলামকে না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। অপর অভিযুক্ত সোলেমান মিয়াজীকেও তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে কথা হয় তার পুত্রবধূ প্রিয়ার সাথে। তিনি জানান, শুনেছি বাবাকে (শ্বশুর) সেলিম কাকা গালমন্দ করে মারতে আসেন। পরে তার ভাই (নজরুল ইসলাম) বাধা দেন এবং সেলিম কাকাকে তিনি মারধর করেন। আমার বাবা নির্দোষ।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য খোরশেদ জানান, তারা পাঁচ ভাই ও দুই বোন। পথের জায়গা নিয়ে নজরুলের ও সেলিমের মধ্যে বিরোধ। আজ (রোববার) সকালে সালিসি বৈঠক হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সেলিমের পক্ষের লোকজন আসতে দেরি করায় আমি ওই বাড়ি থেকে চলে আসি।

সালিস আব্দুস সাত্তার জানান, সেলিমের পক্ষের লোকজন না আসায় দরবারের দেরি হচ্ছিলো। তাই আমি তাদের বাড়ির বাইরে এসেছিলাম। পরে বাড়ির ভেতরে তাদের ডাক-চিৎকার শুনে মেম্বারকে বিষয়টি জানাই।

হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল জানান, নিহতের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়