শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

মুন্সিগঞ্জ সীমানার বালু উত্তোলনকারীরা ঢুকে পড়ছে মতলবের মেঘনায়
মাহবুব আলম লাভলু ॥

মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার চরআবদুল্লাহ বালুমহাল ইজারা নিয়ে সেখানেই বালু উত্তোলন করার কথা ইজারাদারের। কিন্তু তারা বালু উত্তোলনে ঢুকে পড়ছেন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল এলাকার মেঘনা নদীতে।

চাঁদপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলার মেঘনা নদীর সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হলেও মুন্সিগঞ্জের বালুমহাল ইজারাদারের পক্ষ থেকে তা মানা হচ্ছে না। তারা রাত-দিন যখনই সুযোগ পাচ্ছে চাঁদপুরের মেঘনায় ঢুকে বালু উত্তোলন করছে। বালু উত্তোলন করার কারণে তীব্র নদী ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে চরের আশ্রয়ণ প্রকল্প, মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ইকোনমিক জোনসহ চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি।

প্রদক্ষদর্শীরা জানান, মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের বাবুবাজার সংলগ্ন মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে একটি চক্র। বাল্কহেড, কার্গো ও ট্রলারযোগে বালু ভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রতিবাদ করলে সাময়িক বন্ধ রাখে, তারপর আবার শুরু করে। তারা যেনো চোর-পুলিশ খেলে। এ এলাকায় চক্রটির নেই কোনো বালু উত্তোলনের অনুমতি বা অনুমোদন। পেশীশক্তি ব্যবহার করে প্রতিদিন কেটে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকার বালু। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে একাধিকবার নির্দেশ দেয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি।

চরআবদুল্লাহ বালুমহালটি মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত। গত ৩ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার কোর্টগাঁও গ্রামের হাজী মোঃ ফারুক ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে জেলা বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা কমিটি থেকে উক্ত বালুমহাল ইজারা গ্রহণ করেন। ৬ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ০৫.৩০.৫৯০০.৩০৩.০৪.০০১.১৭-১০২নং স্মারকে রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মোঃ এরশাদ মিয়া স্বাক্ষরিত পত্রে এ ইজারা দেয়া হয়।

মেঘনা নদীতে চাঁদপুর-মুন্সিগঞ্জ জেলার সীমানা নির্ধারণ করা ছিলো না। চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার চর চারআনি মৌজা ও মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরআব্দুল্লাহ মৌজার সীমানা নির্ধারণ করার জন্যে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহণ করে। বুধবার (১৩ এপ্রিল) চাঁদপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলার মেঘনা নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হয়। মেঘনা নদীর মাঝখানে দুই জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারক বয়া ও লাল নিশানা দেন। মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী শরিফুল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ হেদায়েত উল্লাহ, মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কামরুল হাসান মারুফ, সার্ভেয়ার বাদশাহ মিয়া, মতলব উত্তর উপজেলার সার্ভেয়ার আবুবকর সিদ্দিক, মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফেরদাউস আলম সরকারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে চরআব্দুল্লাহ বালুমহালের সীমানা নির্ধারণ করা হয়।

চরআব্দুল্লাহ বালুমহালের সীমানা নির্ধারণ করা হলেও এখনও মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের বাবুবাজার সংলগ্ন মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে। তারা নদীতে নেমে বালু উত্তোলনকারীদের ধাওয়া করছেন। বালু উত্তোলনকারীদের পক্ষ থেকেও নদীতে মহড়া দেয়া হচ্ছে। বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে আগামীতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ এবং উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আরো কার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণ না করলে ভাঙন রোধ করা যাবে না। বাঁধবাসী দ্রুত অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়