প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
সারাদেশে ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পহেলা বৈশাখে বাংলা বর্ষবরণ উদ্যাপিত হলেও গতকাল ১৫ এপ্রিল শুক্রবারকে চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে কেউ কেউ পহেলা বৈশাখ হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং এদিনে হালখাতা উদ্যাপন করেন। তবে বিশেষ করে এদিনটিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষজনদেরকেই পহেলা বৈশাখ হিসেবে পালন করতে দেখা যায়। তারা এদিন তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পূজা অর্চনা থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক হালখাতার মহোৎসব পালন করেন এবং দিনটিকে গদিসাইত হিসেবে উল্লেখ করে নতুন বছরের হিসেব-নিকেশ শুরু করেন। ব্যবসায়িক লেন-দেনের সুবিধার্থে এদিন কোনো কোনো মুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যাবসায়ীগণও তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করেন এবং সারাবছরের জন্যে ব্যবসায়িক হিসেব-নিকেশ শুরু করেন।
গতকাল ১৫ জানুয়ারি শুক্রবার দেশের বিভিন্নস্থানের ন্যায় পুরাণবাজার পাইকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায় উৎসবের আমেজ। এদিন সনাতন ধর্মাবলম্বী ব্যবসায়ীগণ বাংলা পঞ্জিকার গণনা অনুযায়ী সময় নির্ঘন্ট মেনে তাদের আরাধ্য সিদ্ধিদাতা গনেশ ও গৌরনিত্যানন্দ মহাপ্রভুর মূর্তি স্থাপন পূর্বক পূজা দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নতুন বাংলা বছরের যাত্রা শুরু করান এবং সেই মতে হিসেবের খাতাপত্রও সংরক্ষণ করেন। এদিন সুসলিম সস্প্রদায়ের কোনো কোনো ব্যবসায়ীকেও দেখা গেছে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দোয়ার আয়োজন করতে। তবে পবিত্র মাহে রমজানের কারণে তা ছিল খুবই সীমিত আকারে।
পুরাণবাজারের বিশিষ্ট পাইকারী ব্যবসায়ী চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক সালাউদ্দিন মোঃ বাবর জানান, আমরা দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী গত ১৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পহেলা বৈশাখ পালন করেছি। কিন্তু সনাতন ধর্মাবলম্বী ব্যবসায়ীদের সাথে ব্যবসায়িক লেনদেন ঠিক রাখার জন্য আমরা আজ ১৫ এপ্রিল নতুন বছরের হিসেবের খাতা শুরু করি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ব্যবসায়ীসহ ক্রেতা সাধারণকে মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করার চেষ্টা করি। যেহেতু এ বছর পবিত্র মাহে রমজান, তাই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দোয়ার আয়োজন করলেও কোনো প্রকার মিষ্টিমুখের আয়োজন করতে পারিনি।
এ ব্যাপারে চাঁদপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রয়াত পরেশ চন্দ্র সাহার ছেলে শিমুল সাহা জানান, আমরা বরাবরের মতই বাংলা পঞ্জিকা মতে পহেলা বৈশাখ পালন করাসহ ব্যবসায়িক হালখাতা শুরু করি। এদিনে আমরা ধর্মীয় রীতি-নীতি মেনে নতুন বছরের লেনদেন করে থাকি এবং সারা বছর যেন সকলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে পারি, সে লক্ষ্যে আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পূজা-অর্চনার আয়োজন করে থাকি। এদিন সাধ্য অনুযায়ী মিষ্টি বিতরণের মধ্য দিয়ে একে অপরের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনেরও চেষ্টা করি। তবে গতকাল পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মাবলম্বী ব্যবসায়ীরা শহরের বিভিন্নস্থানে সকল বিঘœ নাশকারী শ্রীশ্রী সিদ্ধিদাতা গণেশের পূজার আয়োজন করেন।