শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

কচুয়া উত্তর ইউপি সচিব মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ
মেহেদী হাসান ॥

৬নং কচুয়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে নতুন জন্ম সনদে অতিরিক্ত ফি আদায়, জন্ম নিবন্ধনের নাম, বয়স ও অন্যান্য সংশোধনী সনদ প্রদানে নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সচিবের এমন কর্মকাণ্ডে চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, প্রতিটি শিশুর ১ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সরকারি নিয়মানুযায়ী জন্ম নিবন্ধনের কোনো ফি নেই, তবে ৪৫ দিন থেকে ৫ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকা ও ৫ বছরের উপরের সব বয়সীদের ৫০ টাকা ফি নেয়ার সরকারি নিয়ম রয়েছে। সরকারের এ নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলার কচুয়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মফিজুর রহমান সরকারি নির্ধারিত ফি আদায়ের স্থলে নিজেই নতুন নিয়ম করে বসেছেন। তিনি সরকারি নিয়মে প্রতি জন্ম সনদে ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা ও জন্ম নিবন্ধনে নাম ভুল হলে সংশোধন বাবদ ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী।

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, উজানী গ্রামের ফাতেমা বেগম তার অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে আয়েশা আক্তারের বিয়ে দেয়ার সময় ইউপি সচিব মফিজুর রহমানকে ২ হাজার টাকা দিয়ে জন্ম নিবন্ধনে বয়স বাড়িয়ে নেয়। কিন্তু বর্তমানে মেয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র করার জন্যে একাডেমিক সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে তারা জন্ম সনদের সাথে সার্টিফিকেটের অমিল থাকায় জন্ম নিবন্ধনের বয়স ঠিক করতে বলেন নির্বাচন কর্মকর্তা। কিন্তু বর্তমানে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম নিবন্ধনের বয়স সংশোধন করতে গেলে সচিব জানায় এ জন্ম নিবন্ধন আর সংশোধন করা যাবে না। বর্তমান চেয়ারম্যান স্বাক্ষর করবেন না।

একই ইউনিয়নের সিংআড্ডা গ্রামের সিরাজ মিয়ার মেয়ে আয়েশা আক্তারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। তার পরিবার তাকে অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে দেয়ার জন্যে ইউপি সচিব মফিজুর রহমানকে ২ হাজার টাকা দিয়ে জন্ম নিবন্ধনের বয়স বাড়িয়ে নেয়। পরে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিয়েটি বন্ধ করে দেয়।

নাঈম হোসেন নামের এক ভুক্তভোগী জানায়, আমি জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্যে সচিবের সাথে ৩ হাজার টাকা চুক্তিবদ্ধ হয়ে ১৫শ’ টাকা দিই।

জন্ম নিবন্ধন নিতে আসা একাধিক ভুক্তভোগীর সঙ্গে আলাপকালে তারা এ প্রতিবেদককে জানান, জন্ম নিবন্ধন আনতে গেলে সচিব বিভিন্ন কাগজপত্রের ভুল ধরেন এবং সময়মতো কাগজপত্র না দিয়ে হয়রানি করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তিনি কাজ করেন না। তবে ইউনিয়ন পরিষদে এ অভিযোগ নতুন নয়। সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে ইউপি সচিব মফিজুর রহমান জন্ম সনদে অতিরিক্ত ফি আদায় করেন।

উত্তর কচুয়া ইউপির সাবেক সদস্য সোহরাব হোসেন বলেন, পুরাতন জন্ম নিবন্ধনে ভুল আছে এটা সংশোধন করে ডিজিটাল করতে হলে তিন হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে বিভিন্ন কাগজপত্রে সমস্যা দেখিয়ে তিনি ভুক্তভোগীদের হয়রানি করেন।

ইউপি সচিব মফিজুর রহমান অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সবাই নিয়েছে আমিও নিয়েছি। সামনে আর নিবো না।

কচুয়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. আখতার হোসাইন বলেন, সচিব মফিজুর রহমান জন্ম নিবন্ধনের জন্যে অতিরিক্ত ফি আদায় এবং মেয়েদের বয়স বাড়িয়ে জন্ম সনদ সংশোধন করে বাল্যবিবাহে সহযোগিতা করে আসছেন বলে আমিও অভিযোগ পেয়েছি। তবে আমি দায়িত্বগ্রহণের পর সচিবকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে এ সকল কর্মকাণ্ড বন্ধ করেছি। তারপরও কিছু জন্ম নিবন্ধনে সে অতিরিক্ত ফি আদায় করার সংবাদ পেয়েছি। ইউনিয়ন পরিষদের সেবাকে মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যে সচিব অসাধু কাজ করে যাচ্ছেন। তার অনৈতিক সকল কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জেলা প্রশসাক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়