প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
মতলব দক্ষিণে আয়েশা আক্তার (৩২) নামে এক গৃহবধূকে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। বর্তমানে এই গৃহবধূ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। নির্যাতিত গৃহবধূ মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের পদুয়া গ্রামের আবুল বাসারের মেয়ে। যৌতুকের জন্য তার উপর এমন অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে গৃহবধূ আয়েশার পরিবার দাবি করেছে।
নির্যাতিতা গৃহবধূর বাবা আবুল বাসার জানান, ছয় বছর আগে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বাড়ৈগাঁও এলাকার আব্দুল মতিন মজুমদারের ছেলে কাউছার মজুমদারের সাথে আমার মেয়ের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে কাউছার যৌতুকের দাবি করে আসলে আমার সামান্য জায়গা জমি বিক্রি করে কাউছারকে একটি বসতঘর করে দেই। এরপর কিছুদিন সংসার ভালোভাবে চললেও পুনরায় কাউছার যৌতুক বাবদ আমার কাছ থেকে আরও টাকা এনে দিতে মেয়েকে চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু আমার মেয়ে এতে রাজি না হলে প্রায় সময় তাকে বেধড়ক মারধর করতো।
গত ৯ এপ্রিল দিবাগত রাতে কাউছার মজুমদার ও তার আগের সংসারের ছেলে মিনহাজ মজুমদার, বড় ভাই সাদেক মজুমদারসহ পরিবারের লোকজন মিলে আয়েশা আক্তারকে বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে চাপ প্রয়োগ করে। আয়েশা তাতে রাজি না হলে কাউছার মজুমদার ও তার ছেলে মিনহাজ, ছেলের বউ, ভাই সাদেক মজুমদার, সাদেকের স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন আয়েশাকে হত্যার জন্য বেধড়ক মারধরসহ দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে আয়েশা অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে বস্তায় ভরে ফেলে দেয়ার পরিকল্পনা করে কাউছার ও তার পরিবারের লোকজন। পরে আয়েশার জ্ঞান না ফেরায় ঘটনার প্রায় ৩ ঘন্টা পর কাউছারের ছেলে মিনহাজ আয়েশার বাবার বাড়ি ফোন করে জানায় আয়েশা ঘুমের ঘরে মারা গেছে। এ খবর পেয়ে আয়েশার বাবার বাড়ির লোকজন তার শ্বশুর বাড়ি গেলে তাদের উপর হামলা করার চেষ্টা করে কাউছার ও তার পরিবারের লোকজন। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মুমূর্ষু অবস্থায় আয়েশা আক্তারকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে আয়েশা আক্তার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গৃহবধূর বাবা কাঁদতে কাঁদতে আরও বলেন, আমি খুবই গরিব মানুষ। বারবার জামাইর চাহিদা মেটানোর সামর্থ্য আমার নেই। তাই তারা সবসময় আমার মেয়েকে মারধর করতো। অনেক বুঝিয়ে লাভ হয়নি। এবার হত্যার চেষ্টা করেছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে নির্যাতনকারী কাউছার মজুমদারের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন সূত্রে চেষ্টা করেও সেই পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।