প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩০
চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের ৫৪তম অভিষেক অনুষ্ঠানে ড. মো. সবুর খান
দক্ষতা উন্নয়নের বিকল্প নেই, এ সংক্রান্ত প্রকল্পে আমার সকল ধরনের সহযোগিতা থাকবে
দেশকে পরিবর্তন করতে হলে আমাদের সবার নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। এ জন্যে আমাদের এখন দক্ষতা উন্নয়ন (স্কিল ডেভলপমেন্ট)-এর দিকে জোর দিতে হবে। স্কিল ডেভেলপমেন্টের বিকল্প নেই। চাঁদপুরে এমন কোনো প্রজেক্ট নেয়া হলে আমার পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা থাকবে। চাঁদপুর রোটারী ক্লাব এবং চাঁদপুর প্রেসক্লাব যৌথভাবে এমন উদ্যোগ নিতে পারে। সনদ নির্ভর শিক্ষার চেয়ে কর্মমুখী শিক্ষার প্রতি এভাবেই গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য রাখলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান।
|আরো খবর
তিনি গত শনিবার (৩০ নভেম্বর ২০২৪) সন্ধ্যায় চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের ৫৪তম অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। সন্ধ্যা ৬টায় চাঁদপুর রোটারী ক্লাব ভবনে ক্লাবের ডা. নুরুর রহমান কনফারেন্স হলে ২০২৪-২৫ রোটারী বর্ষের বোর্ড অব ডিরেক্টর্সের সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে অভিষিক্ত হন। রোটারিয়ান, রোটার্যাক্টর, ইন্টার্যাক্টরসহ চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের স্পন্সরকৃত বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের মিলনমেলায় আড়ম্বরপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মো. সবুর খান আরো বলেন, চাঁদপুর রোটারী ক্লাব চাইলে স্কিল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করে নোবেল পুরস্কার লাভ করতে পারে, যদি এটিকে মডেল হিসেবে তৈরি করতে পারে। এজন্যে ছোট ছোট উদ্যোগ নিলে এই অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা এক সময় কর্মমুখী শিক্ষায় সাফল্য অর্জন করে দেশের বাইরে গিয়ে কোনো না কোনো কাজ করতে পারবে। তাহলে সবাইকেই ভালো রাখতে সক্ষম হবে।
ড. সবুর খান বলেন, আমি কম্পিউটার ব্যবসা দিয়ে নিজকে আজ এই অবস্থানে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। যার কারণে আজ আমার ড্যাফোডিল পরিবার। এখানে প্রায় ৩৫ হাজার লোক কাজ করেন। যাদের প্রত্যেকেই প্রায় আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী কিংবা প্রশিক্ষণার্থী। এই পরিবারটি শিক্ষাখাতে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। এজন্যে আমাদের উদ্যমী ও উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, কাজের জন্যে যে কোনো উদ্যোগেই আমরা সফল হতে পারি। কেবল ভালো আইডিয়া গ্রহণ করতে পারলেই হলো। তিনি বলেন, আমাদের দেশে বন্যা হলে আমারা ত্রাণ দেই কিংবা কাপড় দেই। কিন্তু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় মূলত ফসল। যার প্রভাব পড়ে আমাদের কৃষিতে। এজন্যে আমি দেশের কৃষি বিভাগের প্রধান বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী প্রফেসর আবদুর রহিমকে পরামর্শ দেই কৃষির জন্যে আপনি ভালো কিছু করতে পারেন। এজন্যে আপনি চাইলে বন্যা পরবর্তীতে ছোট ছোট গাছের চারা দিতে পারেন। তাহলে বন্যা শেষে কৃষক চারা রোপণ করে দ্রুত ফসল উৎপাদন করতে পারে। তিনি আমার পরামর্শ নেন, সাথে আমি ৪/৫ লাখ টাকা দেই। সাথে আমাদের প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনি প্রাথমিকভাবে উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করেন। বর্তমানে তিনি বছরে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি গাছের চারা কৃষকদের হাতে তুলে দেন। তার এই প্রকল্প দেখে বিশ্বব্যাংক এগিয়ে এসেছে এবং বলেছে এটি একটি মডেল। এভাবেই আমরা দেশের সব ক্ষেত্রে কিছু না কিছু করতে পারি। এক্ষেত্রে চাঁদপুর রোটারী ক্লাব এবং চাঁদপুর প্রেসক্লাব যৌথভাবে উদ্যোগ নিলে আমার ড্যাফোডিল পরিবার আপনাদের সাথে থাকবে।
অভিষেক অনুষ্ঠানের চেয়ারম্যান রোটা. কাজী শাহাদাতের পরিচালনায় অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সভাপতিত্ব করেন ক্লাবের ২০২৩-২৪ রোটারী বর্ষের প্রেসিডেন্ট রোটা. অ্যাড. শরীফ মাহমুদ ফেরদৌস শাহীন এবং দ্বিতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন ২০২৪-২৫ রোটারী বর্ষের প্রেসিডেন্ট রোটা. অ্যাড. মো. নজরুল ইসলাম।
বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা রোটারী ক্লাবের সেক্রেটারী রোটা. অ্যাড. মাসুদুর রহমান সিকদার, চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাবের পাস্ট প্রেসিডেন্ট রোটা. শেখ মনির হোসেন বাবুল, হাজীগঞ্জ রোটারী ক্লাবের প্রেসিডেন্ট রোটা. যুগল কৃষ্ণ হালদার, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের পাস্ট প্রেসিডেন্ট রোটা. সুভাষ চন্দ্র রায়, রোটা. ডা. এসএম সহিদ উল্লাহ, ডা. এমজি ফারুক ভূঁইয়া, রোটা. অ্যাড. ইকবাল-বিন-বাশার, ক্লাবের পাস্ট প্রেসিডেন্ট রোটা. মঞ্জুরুল কাদের সোহেল প্রমুখ।
প্রধান অতিথি ড. সবুর খানের জীবনী পাঠ করেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের পাস্ট প্রেসিডেন্ট রোটা. প্রফেসর গোলাম মোস্তফা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন রোটা. অ্যাড. শাহাদাত হোসেন, গীতা পাঠ করেন রোটা. গোপাল চন্দ্র সাহা, রোটারী প্রত্যয় পাঠ করেন রোটা. রফিকুল ইসলাম এবং বার্ষিক প্রতিবেদন পাঠ করেন রোটা. উজ্জ্বল হোসাইন। অনুষ্ঠানে বিসিবির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহকারী কোচ, চাঁদপুরের কৃতী সন্তান সৈয়দ শামীম আহমেদ ফারুকীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের ২০২৪-২৫ রোটারী বর্ষের সেক্রেটারী রোটা. মাহবুবুর রহমান সুমনের ধন্যবাদ প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। পরে র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে অ্যাড. মাসুদ রানা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. কালামকে ক্লাবের সদস্য পদ প্রদান করা হয়। এদের প্রত্যয় পাঠ করিয়ে ক্লাবে অন্তর্ভুক্ত করেন রোটারীর ডিস্ট্রক্ট ৬৫-এর কো-কোঅর্ডিনেটর রোটা. শাহেদুল হক মোর্শেদ ও রোটা. অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন।