সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২২, ০০:০০

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২ উপলক্ষে জেলা পর্যায়ে সংবাদ সম্মেলন

চাঁদপুর মৎস্য সম্পদে অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ, উদ্বৃত্ত মাছ ৪৬ হাজার মেট্রিক টন

চাঁদপুর মৎস্য সম্পদে অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ, উদ্বৃত্ত মাছ ৪৬ হাজার মেট্রিক টন
গোলাম মোস্তফা ॥

২৩ জুলাই থেকে ২৯ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৩ জুলাই শনিবার সকাল ১১টায় জেলা মৎস্য অফিসে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মেহেদী হাসান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আজ ২৪ জুলাই জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এছাড়া সপ্তাহব্যাপী প্রতিদিন সভা, সেমিনার, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন, ভ্রাম্যমাণ মেলা এবং জেলেদের উদ্বুদ্ধকরণে সভা অনুষ্ঠিত হবে। ২৯ জুলাই চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সপ্তাহব্যাপী জাতীয় মৎস্য মেলার সমাপ্তি ঘটবে। সকল অনুষ্ঠানমালা ব্যাপক প্রচারের লক্ষ্যে সাংবাদিক ভাইয়েরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে আশা করি।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌসের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত, সাবেক সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, রহিম বাদশা, সময় টেলিভিশনের ফারুক আহাম্মদ, এখন টেলিভিশনের তালহা জুবায়ের, যমুনা টেলিভিশনের কাদের পলাশ, প্রথম আলোর আলম পলাশ প্রমুখ। এ সময় চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানীয় দৈনিকের সম্পাদকগণ, জাতীয় দৈনিক ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার জেলা প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার বক্তব্যের পূর্ণ বিবরণ

সম্মানিত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ,

আস্সালামু আলাইকুম। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ২৩-২৯ জুলাই ২০২২ ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২’ উদ্‌যাপিত হতে যাচ্ছে। আজ থেকে শুরু করে সপ্তাহব্যাপী এ আয়োজনের এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। এ উপলক্ষে আমি আপনাদের মাধ্যমে জেলার সকল মৎস্য চাষী, মৎস্যজীবী, আড়তদার, মৎস্য ব্যবসায়ীসহ মৎস্য সেক্টরের সাথে জড়িত সকলকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে মৎস্যখাতের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়টি অনুধাবন করেই স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের এক জনসভায় ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদিশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ’। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য খাতের টেকসই উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।

দেশের বিপুল জনগোষ্ঠির খাদ্য নিরাপত্তা ও আমিষের চাহিদা পূরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আর্থসামাজিক উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনসহ জাতীয় অর্থনীতিতে মৎস্যখাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে। মৎস্যখাত সংশ্লিষ্ট সকলকে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে মৎস্য সম্পদের টেকসই উন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য অধিদপ্তর বাংলাদেশের উদ্যোগে অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২ উদ্‌যাপিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। ২৩-২৯ জুলাই ৭ দিন নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২ চাঁদপুর জেলায় উদ্‌যাপিত হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ নেতৃত্ব ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর ২০১৬-১৭ অর্থবছর হতে বাংলাদেশ চাহিদার বিপরীতে মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। সরকারের মৎস্যবান্ধব কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং চাষি ও উদ্যোক্তা পর্যায়ে চাহিদাভিত্তিক ও টেকসই কারিগরি পরিষেবা প্রদানের ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরে মৎস্য উৎপাদন হয়েছে ৪৬.২১ লাখ মেঃ টন, গত ৫ দশকের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ছয় গুণ। মৎস্যখাত বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারভুক্ত খাত। বর্তমান সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্ব, জনবান্ধব ও সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ, সফল বাস্তবায়ন, চাষি পর্যায়ে চাহিদামাফিক সম্প্রসারণ সেবা প্রদান ও মৎস্যাচাষি-উদ্যেক্তাদের নিরন্তর পরিশ্রমের ফলে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় এবং মৎস্য অধিদপ্তর বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার ১৪২৩-এ স্বর্ণ পদক অর্জন করে।

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০২২-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ ৩য়, স্বাদু পানির মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে ২য়, বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে ৫ম, তেলাপিয়া উৎপাদনে ৪র্থ, বিশে^ ইলিশ আহরণকারী ১১ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১ম, সামুদ্রিক ও উপকূলীয় ক্রাস্টাসিয়া এবং ফিনফিস আহরণে যথাক্রমে অষ্টম ও দ্বাদশ স্থান অধিকার করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে মৎস্য উৎপাদন ৪৬.২১ লাখ মেঃ টন। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যে প্রাণিজ আমিষের প্রায় ৬০ শতাংশ যোগান দেয় মাছ। মাথাপিছু দৈনিক মাছ গ্রহণের পরিমাণ চাহিদার (৬০ গ্রাম/দিন/জন) বিপরীতে বৃদ্ধি পেয়ে ৬২.৫৮ গ্রামে উন্নীত হয়েছে। জাতীয় অর্থনীতিতে জিডিপির ৩.৫৭%, কৃষিজ জিডিপির ২৬.৫০% এবং রপ্তানী আয়ের ১.২৪% আসে মৎস্য খাত হতে। ১৯৮৩-৮৪ সালে মোট উৎপাদিত মাছের পরিমাণ ছিল মাত্র ৭.৫৪ লাখ মেঃ টন, ২০২০-২১ অর্থ বছরে তা দাঁড়িয়েছে ৪৬.২১ লাখ মেঃ টন। ১৯৮৩-৮৪ সালে মোট উৎপাদিত মাছের ১৫ শতাংশ পাওয়া যেত চাষকৃত মাছ হতে, আর ৬৩ শতাংশ আসত উন্মুক্ত জলাশয় হতে। বর্তমানে দৃশ্যপটের পরিবর্তন হয়ে চাষকৃত মাছের অবদান ৫৭ শতাংশের বিপরীতে উন্মুক্ত জলাশয়ের অবদান ২৮ শতাংশ, বাকিটা আসে সামুদ্রিক উৎস হতে। জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় নিষিদ্ধকালীন সময় মাছ ধরা বন্ধ করা, জেলেদের মাঝে ভিজিএফ বিতরণ, আইন বাস্তবায়ন, ৬টি ইলিশ অভয়াশ্রম ঘোষণাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে ২০২০-২১ সালে ইলিশের উৎপাদন ৫.৬৫ লাখ মেঃ টন, ২০০৭-২০০৮ সালে যা ছিল ২.৩ লাখ মেঃ টন।

বর্তমানে মৎস্য খাতে দেশের প্রায় ১২% লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জীবিকা উপার্জনে জড়িত। এ সেক্টরে প্রায় ১৪ লক্ষাধিক নারী প্রত্যক্ষ/পরোক্ষভাবে জড়িত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭৪,০৪২.৬৭ মেঃ টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করে ৫১৯১.৭৫ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে। রপ্তানীযোগ্য মৎস্য পণ্যের মাননিয়ন্ত্রণে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় ৩টি আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রণ ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানিতে মান নিয়ন্ত্রণ ল্যাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর কর্তৃক বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ ও বাগদা চিংড়ি’র ভৌগোলিক (জিআই সনদ) নিবন্ধন প্রদান করা হয়েছে। মৎস্য গবেষণা ও জরিপ জাহাজ ‘আর ভি মীন সন্ধানী’-এর মাধ্যমে ২৫ টি সার্ভে ক্রুজ পরিচালনা করে মোট ৪৫৭ প্রজাতির মৎস্য ও মৎস্য জাতীয় প্রাণী শনাক্ত করা হয়েছে।

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,

ইলিশের বাড়ি খ্যাত চাঁদপুর জেলা মৎস্য সম্পদে অত্যন্ত বৈচিত্রপূর্ণ। এখানে রেয়েছে বিল, পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া, ধনাগোদা নদী, সুবিশাল প্লাবনভূমি, অপার সম্ভবনাময় মৎস্যসম্পদ। বিলে উৎপাদিত দেশী প্রজাতির মাছ ও তা হতে তৈরি শুঁটকি, নদীতে ছোট-বড় দেশী প্রজাতির মাছ ও ইলিশ মাছ, পুকুরে উৎপাদিত রুই জাতীয় বড় মাছ, নদীতে স্থাপিত পেন ও খাঁচায় মাছচাষ জেলাকে মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ করেছে। জেলায় রয়েছে ৯৭৫৮.২৯ হেক্টর আয়তন বিশিষ্ট ৫০৭৫৬টি পুকুর, বিলের আয়তন ৩১৬ হেক্টর, প্লাবন ভূমির আয়তন ৬৯২ হেক্টর, ৪টি নদী, সরকারি হ্যাচারী ১টি, বেসরকারি হ্যাচারী ১৬টি, ৩১০১৫ জন মৎস্য চাষী এবং ৪৪০৩৫ জন মৎস্যজীবী রয়েছে।

এ জেলায় নদীতে ৩৫৬৯৫ মেঃ টন, বিলে ২৯৯ মেঃ টন, প্লাবণভূমিতে ২৪৮৭৯ মেঃ টন, সরকারি ও বেসরকারি পুকুর ও বাণিজ্যিক খামারে ৩৭৯১৬ মেঃ টন, সিজোনাল জলাশয়ে চাষের মাধ্যমে ২৭৫৭ মেঃ টন, চিংড়ি ১৯৬ মেঃ টন, পেন কালচারে ১৮৬ মেঃ টন এবং খাঁচায় ১০০৪ মেঃ টনসহ মোট উৎপাদন ১ লাখ ২ হাজার ৯শ’ ৩২ মেঃ টন। এ জেলায় মাছের চাহিদা ৫৬ হাজার ৯শ’ ৪৫ মেঃ টন। এ জেলায় উদ্বৃত্ত মাছ ৪৫ হাজার ৯শ’ ৮৭ মেঃ টন।

১টি সরকারি হ্যাচারীতে কার্প ও দেশী প্রজাতির মাছের ১১৮ কেজি রেনু, কার্প জাতীয় দেশীয় প্রজাতি ও পিওর লাইন ব্রুড প্রভৃতি মাছের প্রায় ১.২ লাখ পোনা রয়েছে।

২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্যচাষ প্রযুক্তিসেবা সম্প্রসারণ প্রকল্প (২য় পর্যায়), ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম ফেজ ও প্রজেক্ট (এনএটিপি-২), বৃহত্তর কুমিল্লা জেলায় মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বৃহত্তর কুমিল্লা জেলায় মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন এবং ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প মৎস্যজীবীকে বিকল্প আয়বর্ধক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,

২০২১-২২ অর্থবছরে মা ইলিশ জাটকা রক্ষায় জেলার ৪টি উপজেলার ৪৪ হাজার ৩৫ জন জেলেকে ভিজিএফ সহায়তা প্রদান করা হয়। জেলার বিভিন্ন নদী, বিলে মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন, বিল নার্সারী স্থাপন এবং উন্মুক্ত জলাশয় ও প্রাতিষ্ঠানিক পুকুরে পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে।

জেলায় মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন ও সংরক্ষণে নিয়মিত আইন বাস্তবায়ন ও অভিযান পরিচালনা, বেসরকারি হ্যাচারী এবং মৎস্য খাদ্য উৎপাদন ও বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও পরিদর্শন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া রাজস্ব বাজেটের আওতায় প্রশিক্ষণসহ মৎস্যচাষীদের কারিগরি পরামর্শ প্রদান, পুকুর ও খামার পরিদর্শন, মাটি ও পানি পরীক্ষা, মতবিনিমিয়সহ অন্যান্য সম্প্রসারণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

সীমিত সম্পদ ও জনবলের মাধ্যমে মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিকতায় মৎস্যখাত দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অন্যান্য খাতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলছে। মৎস্য খাতের এই উন্নয়নের ধারা বজায় রাখা, বিদ্যমান উৎপাদনের প্রবৃদ্ধিকে স্থায়িত্বশীল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, ক্রমবর্ধমান মৎস্যচাষীদের মাঝে সম্প্রসারণ সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে মৎস্য সেক্টরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি একান্ত প্রয়োজন। অন্যান্য সরকারি দপ্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মৎস্য অধিদপ্তরের জনবল কাঠামো এবং যানবাহন সুবিধা বৃদ্ধি করা না হলে মৎস্য খাতের এই উন্নয়নের ধারা বজায় রাখা অত্যান্ত দুরূহ হবে। মৎস্যজীবীদের জন্য ভিজিএফ-এর পরিমাণ বৃদ্ধি, নদীতে মৎস্য অভয়াশ্রম এলাকার মৎস্যজীবীদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য কার্যক্রম গ্রহণ একান্ত জরুরি।

জাতির পিতা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। জাতির পিতার সে স্বপ্নকে সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করতে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। মৎস্য সেক্টরে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জনের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার নানামুখী কর্মসূচি ও প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন ২০২৫ সাল নাগাদ ৫০ লাখ মেঃ টনে উন্নীত করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। ফলে অর্জিত হবে সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির আওতায় পশ্চাৎপদ এলাকার মৎস্যচাষের সম্প্রসারণ ও সমৃদ্ধি। মৎস্যখাতে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের অঙ্গীকার।

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,

আগামী ২৪ জুলাই ২০২২ খ্রিঃ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্য সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২ উদ্‌যাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন/ মতবিনিময়, জেলা/ উপজেলায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা, ব্যানার, ফেস্টুন সহযোগে সড়ক র‌্যালি ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, স্থানীয় পর্যায়ে সফল মৎস্যচাষী/ উদ্যোক্তা/ প্রতিষ্ঠানকে মৎস্য পুরস্কার প্রদান, জেলা ও উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের জলাশয়ে পোনা মাছ অবমুক্তকরণ, মৎস্য সেক্টরে বর্তমান সরকারের অগ্রগতি ও সাফল্য বিষয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, প্রান্তিক পর্যায়ের মৎস্যচাষি ও মৎস্যজীবীদের সাথে মতবিনিময়, অবৈধ জালের বিরূদ্ধে মোবাইল কোর্ট/ অভিযান পরিচালনা, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মৎস্যচাষীদের মাছ চাষ বিষয়ক বিশেষ পরামর্শ সেবা প্রদান, পুকুরের মাটি ও পানি পরীক্ষা, বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ।

আগামী ২৯ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি।

প্রতিটি অনুষ্ঠানে আপনাদের সবান্ধব উপস্থিতি কামনা এবং আপনাদের মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২-এর সফলতা কামনা করছি।

সকলকে ধন্যবাদ। জয় বাংলা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়