প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
প্রতিবাদটি বিচ্ছিন্ন, তবুও সময়োপযোগী
চাঁদপুর শহরের পশ্চিম-উত্তরাংশে, বলা যায় কিছুটা প্রান্তিক এলাকায় অবস্থিত আক্কাছ আলী রেলওয়ে একাডেমী। গত ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় এ বিদ্যালয়টির সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। তবে বিদ্যালয়ের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের দাবিতে নয় তথা বিদ্যালয়ের কোনো স্বার্থের অনুকূলে নয়। বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম কোশাস উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কর্তৃক ভর তেতুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুল ইসলাম দুদুকে নির্যাতনসহ সারাদেশে শিক্ষক নির্যাতনের প্রতিবাদে এমন আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনের সাথে আক্কাছ আলী রেলওয়ে একাডেমীর কোনো নৈকট্য থাকার কথা নয়। প্রথমত যিনি নির্যাতিত হয়েছেন, তিনি চাঁদপুর জেলার কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নন। তবে আক্কাছ আলী রেলওয়ে একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মোঃ গোফরান হোসেন বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের সাথে সংশ্লিষ্ট। এমন সংশ্লিষ্টতাহেতু তিনি উক্ত পরিষদের পক্ষে তাঁর নেতৃত্বে শিক্ষকবৃন্দকে নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে উক্ত আয়োজন করেন। এ আয়োজনে একাত্মতা পোষণ করেন তাঁর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, সুধী সমাজ ও শিক্ষার্থীরা।
|আরো খবর
বগুড়ার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে আরেকটি বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্যাতন করেছে-এটা নিঃসন্দেহে আপত্তিকর ও ঘৃণ্য কাজ। এ কাজের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানানো উচিত ছিলো সারাদেশের প্রতিটি শিক্ষককে। কিন্তু সেটি সেভাবে করেনি প্রতিটি শিক্ষক তথা পুরো শিক্ষক সমাজ। তাতে কী? বগুড়া থেকে শত শত কিলোমিটার দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত চাঁদপুরের আক্কাছ আলী রেলওয়ে একাডেমীর সামনে এই একাডেমীর প্রধান গোফরান হোসেন একাই তাঁর নেতৃত্বে প্রতিবাদমুখর হলেন, রুখে দাঁড়ানোর মানসিকতা প্রদর্শন করলেন। যেটা নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী ও যথার্থ।
জনাব গোফরান হোসেন বলেছেন, আমরা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নই। কেউ যদি কোনো অন্যায় করে তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে। কিন্তু জনসমক্ষে কাউকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল ॥ আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
আমরাও তাঁর এ বক্তব্যের সাথে একমত। আমাদের অভিমত হচ্ছে, জনসমক্ষে অনেক বড় অপরাধীকে যদি মারধর করার পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেটাতে অনেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু বগুড়ায় একজন প্রধান শিক্ষককে অন্য একটি বিদ্যালয় ম্যানেজি কমিটির সভাপতি যে কারণে জনসমক্ষে মারধর করেছেন, সেটাতে নিশ্চয়ই অনিয়ন্ত্রিত হবার মতো বিষয় নেই। যদি থাকতো, তাহলে ওই প্রধান শিক্ষক গণপিটুনিই খেতেন। আমরা মনে করি, কোনো ব্যক্তি কম-বেশি যতো অপরাধই করেন তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়াতেই অগ্রসর হওয়া উচিত, সরাসরি আইন হাতে তুলে নেয়া উচিত নয়।