প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২১, ২০:০৬
এমন সচেতনতামূলক সভা কাঙ্ক্ষিত
সচেতনতা সৃষ্টির জন্যে বিভিন্ন অ্যাডভোকেসি সভা দেখতে দেখতে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট অনেকের মাঝে এতোটা বিরক্তির উদ্রেক হয়েছে যে, এ জাতীয় সভার কথা শুনলে কিংবা এমন সভায় আমন্ত্রিত হলে পূর্বের ন্যায় আগ্রহ নিয়ে যেতে চান না। এর কারণ হচ্ছে, সচেতনতা সৃষ্টির নামে যে সভাটি আহূত হয়, সে সভাটিতে আলোচিত বিষয় যথাযথভাবে উপস্থাপনের চেয়ে নয়ছয় করে বরাদ্দকৃত টাকা আয়োজকরা কীভাবে হালাল(!) করতে পারেন, সেই প্রয়াস চালান। এমন সব সভায় আবেগপ্রসূত অঙ্গীকার, প্রত্যয় ব্যক্ত হয়, সিদ্ধান্ত হয়, কিন্তু পরবর্তীতে ন্যূনতম মনিটরিং হয় না। সচেতনতা সৃষ্টি সংক্রান্ত একটি প্রকল্প তৈরিতে যিনি চটকদারি দেখাতে সক্ষম হন, কার্যত তিনি সাময়িক বাহবা পান, আর্থিকভাবে লাভবান হন। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে কাক্সিক্ষত সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়টি মাটিচাপা পড়ে, এ নিয়ে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি ব্যক্তিবর্গের প্রায় সকলে চুপসে যান। এমন প্রকল্পের পেছনে সরকারের বিভিন্ন বিভাগে সব সময় সুবিধাবাদী একটি চক্র সক্রিয় থাকে, যাদের উদ্দেশ্যই হলো নিতান্ত বাড়তি রোজগার।
|আরো খবর
এমন তিক্ত বাস্তবতাতেই দেখা গেলো, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাদের লাইফস্টাইল, হেল্থ অ্যাডুকেশন অ্যান্ড প্রমোশনের আওতায় স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর মাধ্যমে চলমান করোনাকালে জরুরি প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও আয়োজন করেছে একটি অ্যাডভোকেসি সভা। এতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজনসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন। গত ১৭ জুন দিনব্যাপী এ সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে এ সংক্রান্ত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এ দিন কি সকাল ৯/১০ টা থেকে বেলা ১/২টা না বিকেল ৪/৫টা পর্যন্ত সেটা সংবাদে উল্লেখ করা হয়নি। বস্তুত সকাল থেকে মধ্যাহ্ন কিংবা তারপর কিছু সময় চালিয়েই একটি অ্যাডভোকেসি সভার ব্যাপ্তিকে দিনব্যাপী বলে জায়েজ(!) করা হয়।
সে যাই হোক, চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আয়োজিত অ্যাডভোকেসি সভাটির শ্লোগান ছিলো ‘জাংক ফুড, পথ খাবার, খোলা খাবার না খেলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি মিলে’। নিঃসন্দেহে বাস্তবসম্মত এ স্লোগান। কারণ আমাদের সমাজে শিশু-কিশোর-তরুণসহ একটা বিরাট শ্রেণী ঘরের খাবারের চেয়ে এসব খাবারে অনেক বেশি আসক্ত। কেননা এ সকল খাবার মুখরোচক। এগুলোর যারা ভোক্তা, তারা খাবারের খাদ্যগুণের চেয়ে মুখরোচক কিনা সেটাকেই প্রাধান্য দেয়। এতে অনেক জটিল-কঠিন রোগে আক্রান্ত হবার প্রবণতায় এসব ভোক্তা ভোগে। এদের জন্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সচেতনতা সৃষ্টির যে প্রয়াস শুরু হলো, সেটা সময়োপযোগী, অবশ্যই কাক্সিক্ষত। আমরা এই প্রয়াসের ধারাবাহিকতা ও কার্যকর দিকটাকেই বেশি প্রত্যাশা করবো, কারো বাহবা প্রাপ্তির উদ্দেশ্যকে নয়।