বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৭:০১

পরীক্ষার্থীর রোল নাম্বারে অন্য শিক্ষার্থীর নাম, ইউএনওকে স্মারকলিপি

মতলবে ভুয়া রেজিস্ট্রেশনে ২০ পরীক্ষার্থীর এসএসসির ফল আসেনি

রেদওয়ান আহমেদ জাকির।।
মতলবে ভুয়া রেজিস্ট্রেশনে ২০ পরীক্ষার্থীর এসএসসির ফল আসেনি
মতলবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এসএসসির ফলবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা।

মতলব দক্ষিণ উপজেলার আলহাজ তোফাজ্জল হোসেন ঢালী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ২০ জন পরীক্ষার্থীর ফলাফল আসেনি। বুধবার (৩০ জুলাই ২০২৫) ওই বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে অন্যের নাম আসায় প্রধান শিক্ষক ও কমিটির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমজাদ হোসেনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

এদিকে মঙ্গলবার রোল নাম্বারে অন্য শিক্ষার্থীর নাম ও ফলাফল উঠে আসার ঘটনার সরেজমিনে তদন্ত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে বিষয়টির তদন্ত করে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল। তদন্তে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের দায়িত্বে অবহেলা এবং শিক্ষার্থীদের ভুয়া নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) ও প্রবেশপত্র প্রদানের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছেন ওই তদন্ত কমিটির এক সদস্য। তদন্ত চলাকালে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিদ্যালয়টির ফটকের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় ও ভুক্তভোগী একাধিক পরীক্ষার্থী সূত্র জানায়, ওই বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ২০ জন পরীক্ষার্থীর ফলাফল শীটে তাদের রোল নম্বরের জায়গায় বিদ্যালয়টির অন্য শিক্ষার্থীর নাম আসে, যারা এবার এসএসসি পরীক্ষাই দেয়নি। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে এবং বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ এনে গত ২০ জুলাই ওই শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন।

সূত্রটি আরও জানায়, ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনার তদন্তে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ওই বিদ্যালয়ে যায়। সেখানে বিকেল তিনটা পর্যন্ত তাঁরা অভিযোগের তদন্ত করেন। ওই তদন্ত কমিটির প্রধান হচ্ছেন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর নুরন্নবী আলম। প্রফেসর নুরন্নবী আলম বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা ঘটনাটির নিরপেক্ষ তদন্ত করেন। সেখানকার শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেন। প্রাথমিক তদন্তে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীদের অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পেয়েছেন। তবে ওই শিক্ষার্থীদের জন্যে ইতিবাচক কিছু করা যায় কি না তা ভেবে দেখছেন।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মাজহারুল হকের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ করেননি তিনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গাউছুল আজম পাটওয়ারী বলেন, তিনিও আলাদাভাবে ঘটনাটি তদন্ত করছেন। তাঁর তদন্তে জানা যায়, ওই পরীক্ষার্থীদের নবম শ্রেণিতে নিবন্ধনই হয়নি। পরীক্ষার্থীদের যে প্রবেশপত্র ও নিবন্ধন কার্ড দেওয়া হয় তা ছিলো ভুয়া। ওই বিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা ও আইসিটি বিভাগের শিক্ষক এ কাজটি করেছেন। তার মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ। এসএসসির ফলাফল প্রকাশের পর তিনি গা-ঢাকা দিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়