প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সাক্ষাৎকার : ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম
রোগী কিংবা রোগীর স্বজন পরামর্শ মেনে না চললে কষ্ট লাগে

ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম এ সময়ের একজন তরুণ চিকিৎসক। তিনি চাঁদপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত।
একজন তরুণ চিকিৎসক হিসেবে বর্তমান চিকিৎসাব্যবস্থা এবং চিকিৎসাসেবা প্রদানের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন ‘চিকিৎসাঙ্গন’-এর সাথে। সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতার সেই কথাগুলো লিখেছেন আলআমিন হোসাইন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : আলহামদুলিল্লাহ, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে কোথায়?
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে মামার বাড়িতে আমার শৈশব-কৈশোরের বেশিরভাগ সময় কেটেছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার শিক্ষাজীবন সম্পর্কে জানতে চাই।
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : আমি ২০০৮ সালে এসএসসি এবং ২০১০ সালে এইচএসসি পাস করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসক হওয়ার ভাবনাটি সূচনা হলো কীভাবে?
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : যখন বুঝতে শিখলাম তখন দেখি আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কবিরাজ দ্বারা অপচিকিৎসা গ্রহণ করে এবং নৌকা ছাড়া যাতায়াতের অন্য ব্যবস্থা না থাকায় তারা সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। তখন চিন্তা করলাম, আমি চিকিৎসক হবো এবং তাদের সেবা প্রদান করবো।
চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসক হিসেবে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতার কথা বলুন।
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : চিকিৎসক হিসেবে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা দারুণ ছিলো। মানুষকে সেবা করার সুযোগ লাভের জন্যে মনে প্রশান্তি অনুভব করি। এজন্যে মহান আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুরে যোগদান করেছেন কবে?
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : ২০২৩ সালের ৯ এপ্রিল চাঁদপুরে যোগদান করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুরের চিকিৎসাব্যবস্থার সার্বিক দিক নিয়ে কিছু বলুন।
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : চাঁদপুরের চিকিৎসাব্যবস্থার সার্বিক দিক ভালোই মনে হয়েছে। তবে আমি যেহেতু মোটামুটি নতুন চিকিৎসক, তাই শতভাগ নিশ্চিত কিছু বলতে পারছি না।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার কাছে কোন্ ধরনের রোগী বেশি আসে?
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : আমি যেহেতু শিশুরোগের অভিজ্ঞ চিকিৎসক, তাই শিশু রোগীই বেশি আছে। যার মধ্যে ঠাণ্ডা, কাশি, ডায়ারিয়া আক্রান্ত রোগী বেশি থাকে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : রোগীদের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী?
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : রোগীদের কাছে আমার প্রত্যাশা হলো : চিকিৎসকের দিকনির্দেশনা মেনে চলা, ধৈর্য সহকারে ওষুধের কোর্স সম্পন্ন করা এবং পরবর্তী সাক্ষাৎকারে প্রেসক্রিপশন ও রিপোর্ট নিয়ে আসা।
চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসাজীবনের একটি সুখের এবং একটি দুঃখের স্মৃতির কথা বলুন।
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : চিকিৎসাজীবনে সুখের স্মৃতি অনেক। এর মধ্যে অন্যতম হলো : একদিন রাতে অপরিচিত নম্বর থেকে কল করে একজন বাচ্চার মা বলছেন, ‘স্যার আমার বাচ্চা এখন অনেক ভালো আছে। ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া করে’- এ কথাটি আমার মনে অনাবিল প্রশান্তি এনে দেয়। যখন একজন বাচ্চা ভালো হয়ে বাসায় যায় এবং মায়ের মুখে হাসি ফুটে তখনই আমার সর্বোচ্চ আনন্দ লাগে। মনে শান্তি লাগে। দুঃখের স্মৃতি হলো, ৩-৪ মাস আগের ঘটনা, একজন জন্মগত হার্টের সমস্যার বাচ্চা দেখার পর বললাম, ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে। রোগীর স্বজনরা আমার কথা না শুনে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করলে বাচ্চাটি মারা যায়, তখন খুব খারাপ লাগে। রোগী কিংবা রোগীর স্বজন পরামর্শ মেনে না চললে কষ্ট লাগে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে কী কী প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন?
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : প্রচলিত কুসংস্কার, তাবিজ, পানি পড়া এবং নিজের পছন্দমতো ফার্মেসি থেকে এন্টিবায়োটিক কিনে খাওয়া এবং রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হলে হাসপাতালে আসা ঠিক নয়। পাশাপাশ অপচিকিৎসা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : মানসম্মত সঠিক চিকিৎসা কীভাবে রোগী গ্রহণ করবে?
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : রোগীদেরকে সচেতন হতে হবে। সরাসরি চিকিৎসকের চেম্বারে আসতে হবে। কোনো মাধ্যমে আসা যাবে না।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হলে প্রথম যে তিনটি কাজ করতেন?
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হলে হেলথ ইন্সুরেন্স চালু করতাম। এছাড়া একজন চিকিৎসক যেনো সর্বোচ্চ ৩০ জন রোগী দেখতে পারেন সে নিয়ম চালু করতাম। হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিজস্ব ভবন, ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক এবং প্যাথলজি খোলা রাখার ব্যবস্থাগ্রহণ করতাম।
চাঁদপুর কণ্ঠ : অবসরে কী করেন?
ডাঃ মোহাম্মদ মেহেদী আল মাসুম : আমার মেয়েকে সময় দিই এবং পড়াশোনা করি।