শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

খেলাধুলা শরীরকে সুস্থ রাখাসহ মনকে সতেজ রাখে
চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ॥

নিজের নিত্য কাজের ফাঁকেও প্রতিদিনই সময় বের করে নেন খেলাধুলার জন্য। কখনও ফুটবল, ক্রিকেট আবার কখনও ব্যাডমিন্টন নিয়মিত খেলে যান। নিজের পাড়া কিংবা শহরের বিভিন্ন মাঠে বিকেলের পর থেকে রাতেও খেলতে দেখা যায় তাকে। নিয়মিত আইনপেশার কাজ শেষ করে তিনি এ খেলাধুলার সাথে জড়িত হন। একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে। তিনি হলেন চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির পরিচিত একজন আইনজীবী অ্যাডঃ আবদুল হান্নান কাজী। তার বাবার নাম মরহুম শহীদ কাজী। তার বাবা চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচণ্ডী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তার মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তার স্ত্রীর নাম জুবাইদা গুলসান আরা। তার ২ ছেলের মধ্যে কাজী আব্দুল্লা পড়াশোনা করছেন চাঁদপুর শহরের অক্সফোর্ড মডেল স্কুলে। তার দ্বিতীয় ছেলে কাজী হাবিবুল্লা মধ্য তরপুরচণ্ডী তালিমুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে পড়াশোনা করছেন। চাঁদপুর শহরের তরপুরচণ্ডী ইউনিয়নের বিটি রোডস্থ কাজী বাড়িতে তাদের বসবাস। তিনি ২০০৭ সালে চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতিতে আইন পেশায় যোগ দেন। এর আগে তিনি চাঁদপুর শহরের ষোলঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও চাঁদপুর টিচার্স টেনিং কলেজের প্রভাষকের দায়িত্ব পালন করেন।

অ্যাডঃ আবদুল হান্নান কাজী উত্তর তরপুরচণ্ডী (সেনেরদিঘির পাড়) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশেষে ভর্তি হন মধ্য তরপুরচণ্ডী (ফিশারি গেট) সপ্রাবিতে। চাঁদপুর সরকারি টেকনিক্যাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করে ভর্তি হন চাঁদপুর সরকারি কলেজে। সেখান থেকে এইচএসসি, গণিতে অর্নাস ও মাস্টার্স শেষ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএডএমএড, এলএলবি ও এলএলএম শেষ করেন। স্কুলে পড়াবস্থায়ই তিনি খেলাধুলার সাথে জড়িয়ে পড়েন এবং বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনের সাথে স্কুল জীবন থেকে শুরু করে এখনও জড়িত রয়েছেন। বতর্মানে বিভিন্ন ক্লাব ও বিভিন্ন ইভেন্টের খেলোয়াড়দেরকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। আন্তঃকলেজ ফুটবল প্রতিযোগিতা সহ চাঁদপুর জেলা শহরের বিভিন্ন ক্লাবের হয়েও বেশ ক’টি টুর্নামেন্টে খেলছেন। খেলাধুলা সহ বিভিন্ন বিষয়ে এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপচারিতায় তিনি তুলে ধরেন তার কথা। পাঠকদের জন্য তার কথাগুলো তুলে ধরা হলো।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আসসালামুআলাইকুম, কেমন আছেন?

অ্যাডঃ আবদুল হান্নান কাজী : ওয়ালাইকুম আস্সালাম। জ্বি, আপনাদের দোয়ায় ও সকলের ভালোবাসায় ভালো আছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : খেলাধুুলার সাথে জড়িত কবে থেকে?

অ্যাডঃ আবদুল হান্নান কাজী : আমি শৈশবে প্রাইমারী স্কুলে পড়াঅবস্থায় খেলাধুলার সাথে জড়িয়ে পড়ি। ওই সময় থেকে দৌড়, মোরগ লড়াই সহ বিভিন্ন ইভেন্টে এককভাবে অংশ নিয়ে অনেক পুরস্কার অর্জন করি। প্রাইমারি স্কুল জীবন শেষ করে হাইস্কুলে ওঠার পর ক্রিকেট, ফুটবল ও ব্যাডমিন্টনের সাথে জড়িয়ে পড়ি। স্থানীয় একুশে ক্লাবের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে খেলায় অংশ নেই।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ক্রিকেটে এবং ফুটবলে কোন্ পজিশনে খেলতেন এবং কোথাও খেলেছেন?

অ্যাডঃ আবদুল হান্নান কাজী : আমি ক্রিকেটে ডানহাতি ব্যাটসমান ও স্পিন বোলার হিসেবে খেলতাম। আমি বেশিরভাগ সময়ই দলের ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে খেলতে নামতাম। ফুটবলে আমি মধ্যমাঠে খেলতে পছন্দ করি। এখন বিভিন্ন মাঠে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে দলের পক্ষে মধ্যমাঠেই খেলি। আমি ফুটবল ও ক্রিকেটে স্কুল জীবনে যেমন বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে বিভিন্ন সর্তীথদের সাথে খেলেছি, বতর্মান সময়ে আমি সুযোগ পেলে পাড়ার এবং পরিচিতজনদের সাথে বিভিন্ন স্থানে খেলতে যাই।

ক্রীড়াকণ্ঠ : চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াবস্থায় কি খেলাধুলার সাথে জড়িত ছিলেন?

অ্যাডঃ আবদুল হান্নান কাজী : আমি চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াবস্থায় আন্তঃকলেজ ফুটবল প্রতিযোগিতায় বেশ কয়েকবার অংশ নিয়েছি। এছাড়া কলেজ পর্যায়ের খেলায় আমি গণিত বিভাগের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : বর্তমানে ব্যাডমিন্টন খেলায় তো নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন?

অ্যাডঃ আব্দুল হান্নান কাজী : আমি গত ক’বছর ধরে ব্যাডমিন্টন খেলা সহ ফুটবল এবং ক্রিকেটে নিয়মিত মিনি লীগ পর্যায়ের খেলাতে অংশ নিচ্ছি। আমি ব্যাডমিন্টনে চাঁদপুর ক্লাব মাঠে, জোড়পুকুর পাড়, জেলখানা মাঠ, বাবুরহাট মাঠ, ওয়্যারলেস এলাকা, আইনজীবী সমিতির মাঠে নিয়মিত লীগ ও টুর্নামেন্টের খেলাগুলোতে কখনও একক আবার কখন দ্বৈতে অংশ নেই। শরীর সুস্থ থাকাবস্থায় নিয়মিতভাবে আমি এ খেলাধুলার সাথে জড়িত থাকবো।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আইনপেশার পাশাপাশি এতো খেলাধুলাও!

অ্যাডঃ আবদুল হান্নান কাজী : আমি একজন আইনজীবী হিসেবে বিচারপ্রার্থীদের সেবা ও সহযোগিতার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। দিনের শুরু থেকে রাত পর্যন্ত বিচারপ্রাথীদের সেবার জন্য কাজ করতে হয় আমাদের। এর ফাঁকেই নিজের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য খেলাধুলার সময় বের করে নিতে হয়। খেলাধুলা শরীরকে সুস্থ রাখা সহ মনকে সতেজ রাখে। প্রতিদিনই নির্দিষ্ট একটি সময় বের করে রাখি খেলাধুলার জন্য। আমি আমার আইনপেশা সহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সালাতসহ খেলাধুলার সাথে জড়িত থাকতে পছন্দ করি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনি কি খেলাধুলার ব্যাপারে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেন?

অ্যাডঃ আবদুল হান্নান কাজী : আমি খেলাধুলাকে পছন্দ করি। আমি নিজে খেলাধুলার সাথে জড়িত থাকতে পছন্দ করি। আমার কাছে খেলাধূুলার ব্যাপারে খেলোয়াড় সহ যারাই সহযোগিতার জন্য আসে তাদেরকে আমার সাধ্যের মধ্যে থেকে আমি উৎসাহ সহ সহযোগিতার চেষ্টা করি এবং আমার এ ধারাবাহিকতা সবসময়ই অব্যাহত থাকবে।

ক্রীড়াকণ্ঠ : তরুণ প্রজন্মদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন?

অ্যাডঃ আবদুল হান্নান কাজী : তরুণ প্রজন্ম ও উদীয়মান খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে বলবো, খেলাধুলার সাথে জড়িত থাকলে মাদক ও মোবাইল থেকে দূরে থাকা যায়। খেলাধুলা করলে মন ভালো থাকে ও লেখাপড়ায় মন বসে। একঘেঁয়েমি জীবন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। খেলাধুলার মাধ্যমে বাজে অভ্যাস থেকে দূরে থাকা যায়। জেলা শহরে বর্তমানে ২টি ক্রিকেট একাডেমি ও ২টি ফুটবল একাডেমি রয়েছে। সেখানে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত অনুশীলন করছে। আমি এই সমস্ত উদীয়মান খেলোয়াড় সহ তরুণ প্রজন্মদেরকে বলবো, পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলাকে নিয়মিত চর্চা হিসেবে রাখতে হবে। ভালো খেললেই হবে না, সাথে পড়াশোনাও জানা থাকতে হবে। খেলাধুলার ক্ষেত্রে সঠিক অনুশীলন ও নিয়ম শৃঙ্খলা মানতে হবে। নিয়মিত নামাজ পড়তে হবে। মোবাইল থেকে দূরে থাকতে হবে। সিনিয়রদের শ্রদ্ধা সহ তাদের সকল কিছু অনুকরণ করতে হবে। খেলাধুলার ক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক সকল কিছু করতে হবে। যে যেই জায়গাতে যোগ্য তাকে সেখানে বসাতে হবে। এছাড়া খেলোয়াড়দেরকে নিজ খেলাধুলার প্রতি মনোযোগী হতে হবে।

ক্রীড়াকণ্ঠ : চাঁদপুরের খেলাধুলার উন্নতির জন্য কী করা প্রয়োজন?

অ্যাডঃ আবদুল হান্নান কাজী : চাঁদপুর জেলাটি খেলাধুলার জন্য একটি ভালো জেলা। চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে অ্যাথলেট সহ বিভিন্ন খেলাধুলায় আমাদের জেলাটি অনেক এগিয়ে। আমাদের জেলার ২ জন ক্রিকেটার, ১ জন ফুটবলার জাতীয় দলে নিয়মিত খেলছেন। তাদের মতো আরো খেলোয়াড় তৈরি করতে হবে। এক সময় ফুটবল ও সাঁতার সহ বিভিন্ন ক্রীড়াভিত্তিক ইভেন্টে এ জেলার সুনাম ছিলো। আমাদের হারানো সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হলে নিয়মিত লীগ কিংবা টুর্নামেন্টের আয়োজন করতে হবে। খেলোয়াড়রা শুধু অনুশীলন করবে কিন্তু কোনো খেলাধুলার আয়োজন যদি না থাকে, তাহলে খেলোয়াড়রা তাদের খেলার নৈপুণ্য দেখাতে পারবে না। জেলা পর্যায়ের খেলোয়াড়দেরকে নিয়মিতভাবে নার্সিং করতে হবে, যাতে করে তারা যেনো দেশের সেরা পর্যায়ের খেলাগুলোতে সুযোগ পেতে পারে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে খেলোয়াড় বাছাই করে তাদেরকে দিয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে, তাহলে আমাদের এই জেলা থেকে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় সৃষ্টি হবে বলে আমি আশাবাদী।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনাকে সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

অ্যাডঃ আবদুল হান্নান কাজী : জ্বি, আপনাকে ও আপনার পত্রিকার সকলকে জানাই ধন্যবাদ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়