বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৮:০৫

প্রশিক্ষণ কর্মশালা, পুরুস্কার প্রদান, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে তথ্য সংগ্রহের ওয়েবসাইট উদ্বোধন

রায়পুরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি।।
রায়পুরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান খান কর্তৃক বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট প্রদান।

'ন্যায়সঙ্গত ও আশাব্যঞ্জক এক বিশ্বে তরুণদের নিজেদের কাঙ্ক্ষিত পরিবার গঠনের ক্ষমতায়ন করা’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই ২০২৫) উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা, কমিউনিটি ক্লিনিকের তিন পরিদর্শককে পুরস্কার প্রদান এবং ইউএনও ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসারের যৌথ উদ্যোগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে তথ্য সংগ্রহ ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়েছে।

উপজেলায় শ্রেষ্ঠ পরিবার কল্যাণ সহকারী শাহনাজ বেগম, শ্রেষ্ঠ পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পারভেজ চৌধুরী, শ্রেষ্ঠ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শকা সুফিয়া বেগম, শ্রেষ্ঠ কেন্দ্র কেরোয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদ কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদকে পুরস্কৃতকরা হয়।

এ সময় বক্তারা বলেন, জন্ম সনদ একটি শিশুর অধিকার। জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের অনুচ্ছেদ ৭ অনুযায়ী শিশুর জন্মগ্রহণের পর জন্ম-নিবন্ধীকরণ করতে হবে। কিন্তু জন্ম সনদ পাওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। রায়পুরে ইউনিয়নগুলোতে জন্ম নিবন্ধন সনদে কারো বাচ্চা, পিতা, মাতার নাম বা জন্ম তারিখ ভুল লেখা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধনের তথ্য ম্যানুয়ালি জমা হয় পরিষদে। সেটি দেখে দেখে টাইপিং-এ মাঝেমধ্যে ভুল হয়ে যায়।

পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মীরা জানান, আমরা মানুষের কাছ থেকে যে তথ্য সংগ্রহ করে দিই, তাতে দেখা যায় জন্ম বা মৃত্যু সনদে ভুল আসে। এতে মাঠে কাজ করার সময় বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলেন, আসলে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ফরমের হার্ডকপি থেকে তথ্য কম্পিউটারের ইনপুট দেওয়ার সময় অনেক সময় ভুল হয়ে যায়। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে পরিবার পরিকল্পনা অফিসার জিয়াউল কাদেরের পরিকল্পনায় একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়, যেটি ইউএনও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। এর আলোকে ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, উদ্যোক্তা, পরিবার পরিকল্পনার মাঠ পর্যায়ের কর্মী ও সাংবাদিকদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার জিয়াউল কাদের বলেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন পরিবার পরিকল্পনার মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। পরিদর্শক ও পরিবার কল্যাণ সহকারীদের মাধ্যমে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের তথ্য সংগ্রহ করার সময় মনে হতো, প্রচুর সময় ও কাগজের ব্যবহার হচ্ছে। ফরম প্রিণ্ট ও বিভিন্ন প্রমাণক সংগ্রহ করতে অর্থ ও সময় দুটোই লাগে। তাই প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর চিন্তা করা হয়েছে।

রায়পুরের ইউএনও মো. ইমরান খাঁন জানান, ওয়েবসাইটটির মাধ্যমে উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ে জন্মগ্রহণকৃত শিশুর ও জনসাধারণের তথ্য দ্রুত ইউনিয়ন পরিষদে চলে আসবে। তথ্য সেবাগ্রহীতার সামনে ওয়েবসাইটে ইনপুট দেওয়ার ফলে ভুলভ্রান্তি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না ও গ্রাহকের ভোগান্তি কমবে। এতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অংশীজনরা উপকৃত হবেন এবং নির্ভুল জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের হার বাড়বে। উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে কর্মক্ষম তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ, সুশিক্ষিত ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হিসেবে গড়ে তোলা আবশ্যক।

রায়পুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তাবারক হোসেন আজাদ বলেন, দক্ষ জনগোষ্ঠী দেশের সম্পদ। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ কিশোর-কিশোরী ও তরুণ। বিপুল জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য, জীবনমান এবং ক্ষমতায়নের ওপর নির্ভর করে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন। স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকা কিংবা পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে পছন্দমতো সিদ্ধান্ত গ্রহণই যথেষ্ট নয়, টেকসই উন্নয়ন, উন্নত জীবন ব্যবস্থা এবং সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিতের জন্য প্রজন্মান্তরে ন্যায্যতা ও ন্যায়-নীতিবোধ ধরে রাখা একান্ত প্রয়োজন। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ছেলে-মেয়ের মাঝে কোনো বৈষম্য না করে সকলের জন্যে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে সরকার পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য এবং কৈশোরকালীন প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে তরুণ প্রজন্মের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাবে সরকার । একটি সুস্থ-সবল জাতি গড়ার এই কর্মযজ্ঞে সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বেসরকারি সংগঠন, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজকে তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন সকলে মিলে দেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিই।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়