প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
‘বিদ্রোহী’ নিছক কোনো কবিতা নয়, ‘বিদ্রোহী’ হলো জগতের সকল শোষিতের অনির্বাণ মুক্তির ইশতেহার। আলজেরিয়ার আলজিয়ার্সে জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু যে অমর বাণী দিয়েছিলেন শোষিতের পক্ষে, কবি নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় সেই অমর বাণীই বিভিন্ন শব্দ-সমাহারে জীবন্ত হয়ে উঠেছে শতবর্ষের শত কল্লোল পেরিয়েও। পৃথিবী যতোদিন আছে ততোদিন পৃথিবীতে শোষক আর শোষিতের শ্রেণিভেদ থাকবেই এবং শোষিতের পক্ষে নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতাই মুক্তির কথা বলে যাবে আজীবন। ভাঙা পর্বের উত্তম পুরুষে মুক্তক মাত্রাবৃত্ত ছন্দে লেখা কালজয়ী কবিতা ‘বিদ্রোহী’ কীভাবে শতবর্ষের মাইলফলক স্পর্শ করে আজও সতেজতায় সদ্যোজাত তা বুঝতে হলে খুব বেশি গবেষণায় সময়ক্ষেপণ করার প্রয়োজন পড়ে না। ‘বিদ্রোহী’র কালজয়িতায় অসাম্প্রদায়িক উপাদান যেমন ছিলো, তেমনি ছিলো শ্রেণিবৈষম্যের আবহমানকালীন বিস্তার নাশনের শুভ প্রচেষ্টা। ‘বিদ্রোহী’র ভাষা কোমল ছিলো না মোটেই। ‘পথ সম্মুখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’র মূলমন্ত্র জপে হাতুড়ির আঘাতে বাধা-বিঘœ চুরমার করার মতো ভাষাশৈলী নিয়ে বিদ্রোহীর জন্ম। রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে একদিকে কুঠারাঘাত আর অন্যদিকে ঔপনিবেশিকতাবাদকে ভূপাতিত করার অজর অমর ও অক্ষয় আহ্বান নিয়ে ‘বিদ্রোহী’ সম্পন্ন করেছে তার যাত্রার শতবর্ষ।
‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি যেনো গ্রীক দেবতা অ্যাপোলোর মতোই শক্তিমান। ক্ষুদ্র দেহে অ্যাপোলো হার্কিউলিসের মতো যেমন শক্তিমান, তেমনি ‘বিদ্রোহী’ কবিতাখানিও এক সার্থক মহাকাব্যের বনসাই হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে পাঠক মননে। ‘বিদ্রোহী’ পাঠকের শক্তি হরণ করে না বরং দুর্বল পাঠকের প্রাণস্পন্দনে শক্তির সঞ্চার করে। কবি নজরুলের যে ‘কুলি’ কবিতাটি কেবল নির্যাতিত হওয়ার ছবি তুলে ধরে, ‘বিদ্রোহী’ কবিতা সেই ‘কুলি’কেও প্রতিরোধ প্রক্রিয়ায় শামিল করে।
‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি কোনো ব্যক্তি বা শক্তির বিরূদ্ধে বিদ্রোহ করে না। বিদ্রোহীর বিদ্রোহ কেবল প্রথার বিরুদ্ধে, যুগের বিরূদ্ধে। শাসক শক্তিকে কুর্ণিশ করার যে প্রথা, বিদ্রোহী তার মূলে আঘাত হানে মানবিক প্রজ্ঞায়। প্রচলিত সকল অমানবিক প্রথার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী সর্বকালের এক কালোত্তীর্ণ প্রতিবাদ। ‘বিদ্রোহী’ প্রতিবাদ হিসেবে অসাম্প্রদায়িক। এ প্রতিবাদ খোদার আসন-আরশ ছেদন করে যেমন পৌঁছে যায় আপন গন্তব্যে, তেমনি পিনাক-পাণির ত্রিশূলকেও বিদ্ধ করে। বিদ্রোহীর আহ্বান সর্বত্যাগী গৈরিক বসনধারী রাজকুমার সিদ্ধার্থকে যেমন ছুঁয়ে যায়, তেমনি বেথলেহেমের গোশালায় যাবপাত্রে নেমে আসা স্বর্গীয় তারকা খ্যাত মহান যীশুকেও সাক্ষী মানে। বিদ্রোহী জগতজুড়ে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার এক উচ্চকণ্ঠ নান্দনিক হাতিয়ার। বিদ্রোহী রক্তপাতের বিপ্লবের কথা বলেনি, বিদ্রোহী শোষকের প্রাণ সংহারের কথাও বলেনি। বিদ্রোহী জগতের সকল শোষিতের ভাগ্যের উন্নয়নে যার যার অবস্থান পরিবর্তনের কথা বলেছে। শোষক যদি তার অবস্থান পরিবর্তন করে শোষিতের প্রতি মানবিক হয়ে ওঠে তবে বিদ্রোহীর বিদ্রোহ সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়।
‘বিদ্রোহী’তে প-িত সৈয়দ আলী আহসান ওয়াল্ট হুইটম্যানের ‘সঙস্ অব মাইসেল্ফ’-এর প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলেও আদতে ‘বিদ্রোহী’ তার ভাব ও ভাষ্যে অনন্য। ‘বিদ্রোহী’ একটি জাতির ভাগ্যললাট পরিবর্তনের নকশাচিত্র। ‘বিদ্রোহী’ নির্যাতিত বাঙালির প্রথম মুক্তির সনদ। বাঙালি তার শোণিতধারায় সুবোধ্যতা ও অবাধ্যতার দ্বিবিধ গুণাবলি যুগপৎ ধারণ করে। ‘বিদ্রোহী’ এই দুই গুণেরই পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ। ‘বল বীর বল চির উন্নত শির’ বলে ‘বিদ্রোহী’ যে বয়ানে আত্মদাবির প্রকাশ করতে থাকে, তার সূচনাতেই বিধৃত আছে বাঙালির হাজার বছরের সমৃদ্ধির শেকড়ের ইতিহাস। হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালি যায়নি পাশ্চাত্য লুণ্ঠনে। বরং পাশ্চাত্যই এসেছে এ বঙ্গভূমিতে লুটেরার অবয়বে। ‘বিদ্রোহী’ সেইসব বর্গী ও লুটেরার প্রভুত্বের অবসান চায়। যতোদিন না পর্যন্ত লুটেরা প্রভুর হাত হতে উৎপীড়িত সাধারণ মানুষের মুক্তি ঘটবে না, ততোদিন পর্যন্ত বিদ্রোহীও রণক্লান্তি বোধ করবে না, বিদ্রোহীও শান্ত-সুবোধ হয়ে রইবে না। অত্যাচারীর খড়্গ-কৃপাণের উদ্ধত নৃত্যের অবসান না হওয়া অব্দি বিদ্রোহীর স্থিরতা নেই, প্রশান্তি নেই। বিদ্রোহী যতোদিন অব্দি পালযুগের সমৃদ্ধিকে দেশ-মাতৃকার মৃত্তিকায় পুনঃঅধিষ্ঠিত করতে পারবে না ততোদিন পর্যন্ত আত্মমর্যাদার প্রতিষ্ঠায় নিরলস দুর্বিনীত থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে চলবে।
বিদ্রোহী নিজে এক যুগের অবতার। দুষ্ট তথা শোষক প্রভুর দমন ও শিষ্ট তথা শোষিত জনতার পালনে যুগাবতার বিদ্রোহী নিয়তি কর্তৃক প্রেরিত। বিদ্রোহী যেনো নিজেই জগদীশ্বর। ঈশ্বরের অভিপ্রায় জাগতিক মানুষের কল্যাণ সাধন। যুগাবতার বিদ্রোহীর উদ্দেশ্যও তাই। বিদ্রোহী সঙ্গত কারণে পূর্বসূরি অবতারদের স্মরণ করে তার আত্মবয়ানে। এই বিদ্রোহী সর্বকালে ছিলো। অতীতের জন্যে যেমন সত্য, বর্তমানের জন্যেও তেমনি বিদ্রোহী ধ্রুব। তার এই ধ্রুবত্ব অনাগত কালের জন্যেও সত্য ও অনিবার্য। সে যেমন প্রলয়ের নটরাজ হয়ে সত্য যুগে অত্যাচারিতের পক্ষে ছিলো, তেমনি অর্ফিয়ুসের বাঁশির রূপধারণ করেও বঞ্চিতের পক্ষে ছিলো। বিদ্রোহী কোনো একক নির্দিষ্ট সত্তা নয়। বিদ্রোহী সর্বভূতে বিরাজমান সার্বজনীন সত্তা। যে কারও মধ্যেই বিদ্রোহী সত্তার উদ্বোধন ঘটতে পারে। যে কেউ যে কোনো অনিবার্য প্রয়োজনীয় কালে বিদ্রোহীর রূপ ধারণ করতে পারে। বিদ্রোহী আমাদের মুক্তির প্রতীক, বিদ্রোহী আমাদের উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দেয়ার অনন্য পাঞ্জেরি।
বিদ্রোহীর শব্দচয়নে গতিশীলতার যে অভিক্ষেপ, তাতে কোমলতা সজ্ঞানে পরিহার করা হয়েছে বলেই প্রতীয়মান। বেদনায় বিদীর্ণ যুগের যন্ত্রণাকে ধারণ করতে হলে বিদ্রোহীতে অবশ্যই শব্দের মসিধর্মের চেয়ে অসিধর্মের প্রাধান্য পাওয়া উচিত যা সঙ্গতকারণেই কবি বজায় রেখেছেন। প্রতিবাদের যে শৌর্য তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিনির্মিত হয়েছে বিদ্রোহীর পরতে পরতে। ‘বিদ্রোহী’ কবিতাকে অন্তরে ধারণ করে বলা যায়, এ যেনো বঙ্গবন্ধুর সাত মার্চের মহাভাষণের আগাম বার্তা। বিদ্রোহী কবিতায় বৃটিশদের চোখ রাঙিয়ে যে শব্দ চয়িত হয়েছে, সেই একই কাঠামোতেই পশ্চিম পাকিস্তানীদের শাসিয়ে রচিত হয়েছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এক ভাষণকাব্য যাতে নিনাদিত হয়েছে ঠিক পঞ্চাশ বছর আগেকার এক কবিতার প্রতিধ্বনি। বিদ্রোহীর শতবর্ষে এসে ঐতিহাসিক সাত মার্চের সুবর্ণজয়ন্তীতে মহাভাষণ হয়ে উঠেছে বিশ্বজনীন শোষিতের মুক্তিবাণী। যথার্থ অর্থে বিদ্রোহী কবিতাই সাত মার্চের মহাভাষণের ইন্ধনদাতা, শক্তিদাতা। বিদ্রোহী যেমন বলে ওঠে, ‘আমি সেইদিন হব শান্ত/যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দনরোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না’, তেমনি মহাভাষণও মহানাদে দশদিক প্রকম্পিত করে জানায়, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেবো, তবু বাংলার মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ্।’ জাগরণী শক্তিতে বিদ্রোহী রূপান্তরিত হয়েছে সাত মার্চের মহাকাব্যে।
বিদ্রোহীর আঙ্গিক বিবেচনায় সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘লেলিন’ কবিতাটিকে মনে হয় বিশ্বজনীনতার ব্যক্তি নির্দেশকরণ। লেলিন যেমন রুশদের জন্যে শোষকের নিগড় হতে শোষিতকে টেনে বের করে নিয়ে এসেছেন, তেমনি কবিতায় উল্লেখিত বিদ্রোহীও জগতের সকল শোষিতের জন্যে সেরকম এক শোষণহীন, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থার কথা নিরন্তর ভেবে চলে। শোষকের শোষণের বিরুদ্ধে লেলিন যেমন কবির দাবিতে প্রথম প্রতিবাদ, তেমনি বিদ্রোহী কবিতার মূল সুরেও বিশ্বজুড়ে বিদ্রোহীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যম-িত ত্রাতাদের কথা বলা হয়েছে। পৃথিবীর সকল বিদ্রোহীই বিপ্লবস্পন্দিত বুকে নিজেকে লেলিনের ছায়া মনে করে। সাম্যবাদকে নিজের জীবনের মূলমন্ত্র বানিয়ে নেয়া কবিও তাঁর ভাবনাবিন্দুতে লেলিনের প্রতিচ্ছবিই হয়তো এঁকেছিলেন। লেলিনের বিপ্লবে রক্তপাতের দেখা ছিলো না। ছিলো আদর্শের শক্ত বেষ্টনী। এতেই কাক্সিক্ষত গন্তব্যে তিনি টেনে নিয়ে যেতে পেরেছেন শোষিতের আশা-আকাক্সক্ষার তরণীকে। কবি সুকান্ত যে লেলিনকে নিজের বিপ্লব স্পন্দিত বুকে ধারণ করেন সে লেলিন সর্বোতভাবেই যেনো কবি নজরুলের ‘বিদ্রোহী’রই এক রুশীয় রূপ। শতবর্ষে এসে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা আজ এমনিভাবেই বিভিন্নরূপে নিজের অবতারী অবয়বকে প্রকাশিত করে বাধা-বিঘœ চুরমার করার মতো ভাষাশৈলী নিয়ে।
বিদ্রোহী নিজেকে অরুণ খুনের তরুণ হিসেবে প্রকট করে তুলেছে দ্রোহের নান্দনিকতায় সকল কালে, সকল যুগে । বৃটিশ সা¤্রাজ্যে সূর্যাস্ত না হওয়ার যে প্রবাদ প্রচলিত ছিলো, বিদ্রোহী সে প্রবাদের মূলে কুঠারাঘাত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। জগতের যতো সুন্দর কাজে তরুণের সক্রিয় অংশগ্রহণই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। তারুণ্য-শক্তির উদ্বোধন না হলে দ্রোহের শক্তির সৌকর্য বিকশিত হয় না। বিদ্রোহী সেই সৌকর্যের বিনির্মাণে অন্তহীন প্রেরণা। তারুণ্যের সমন্বিত প্রয়াসেই বৃটিশ সা¤্রাজ্যের সূর্য অস্তমিত করার মহান কর্মযজ্ঞে বিদ্রোহী নিমগ্ন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কবিতার ছন্দবিদ্যুতে। বিদ্রোহী কেবল শোষকের অবসান চায়নি বরং ঔপনিবেশিক শক্তির সমূলে বিনাশ চায়। তাই সা¤্রাজ্যবাদের অরুণকে খুন করে বিদ্রোহীর তারুণ্য দেশপ্রেমের ফল্গুধারাকে দৃশ্যমান করে তোলার চেষ্টা করেছে। বিশ্বজুড়ে যে আরব বসন্তের হাওয়া বয়ে গেছে বিদ্রোহী অনেকটাই সে রকম হাওয়ার প্রবাহ নিয়ে যুগের সংস্কার সাধনে ব্রতী হওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করে গেছে। বিদ্রোহী লর্ড বা সা¤্রাজ্যবাদী শাসকের ভূখ- শোষণের শ্বাপদী দন্ত উপড়ে ফেলানোর অঙ্গীকারে আবদ্ধ। বিদ্রোহী কেবল মনোরঞ্জনকারী সাহিত্য নয়, এটি সংস্কারবাদী সৃজনশীলতার বিশ্বজনীন প্রতীক। শোষকের অচলায়তন ভেঙে সা¤্রাজ্যবাদের যবনিকা ঘটাতে চায় বলেই বিদ্রোহী নিজেকে নিজে অরুণ খুনের তরুণের অভিধায় অভিষিক্ত করেছে।
বিদ্রোহের চেতনায় কেবল রাষ্ট্রশক্তি কিংবা শ্রেণিশক্তির বিরুদ্ধে সংস্কারবাদিতার কথা বলা হয়নি, বিদ্রোহী কবিতায় বরং প্রচলিত ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধেও সংস্কার তথা বিদ্রোহের কথা বলা হয়েছে। কবিতাটির সার্বজনীনতার মূল কারণ, এখানে সকল সামাজিক স্তরকেই অংশীভূত করা হয়েছে। বিদ্রোহী কবিতায় নারীশক্তির যে উদ্বোধনের কথা বলা হয়েছে তা অনন্য। নারীকে নারী নয়, শক্তির ও সমন্বয়ের আধাররূপে বিদ্রোহী যে সম্মানে অধিষ্ঠিত করেছে তাতেই তার কালজয়িতা তৈরি হয়ে গেছে। যে যুগে নারীর জন্যে ঘর হতে আঙিনা ছিলো বিদেশ, সে যুগেই বিদ্রোহী নারীশক্তিকে নিয়ে আসতে চায় আলোয়, নিয়ে আসতে চায় মূল শক্তির সমকাতারে। ‘বিদ্রোহী’ ইন্দ্রাণীর শক্তিকে যেমন সমীহ করে তেমনি বিধবার বুকের দীর্ঘশ্বাসকে নিয়েও ভাবে। সে তন্বীর চোখের দৃষ্টিবহ্নিকে যেমন মূল্যায়ন করেছে তেমনি ষোড়শী হিয়ার কমলিত কথামালাকেও সমান গুরুত্ব দিয়েছে। বিদ্রোহী নিজে চরম অপমানিতের পক্ষ নিয়ে যেমন সমরে অবতীর্ণ হতে উৎসাহ দেখায় তেমনি প্রণয়ে প্রমোদিত পল্লিবালার অধিকার নিয়েও সচেতনতা তৈরি করে। বিদ্রোহী কোনো কালিক দলিল নয়, স্থানিক সম্পত্তিও নয়, বিদ্রোহী সর্বকালের সর্বমানুষের জীবনবেদের এক অনুপম যাপনবিদ্যা। বিদ্রোহী তাই সঙ্গত কারণেই বুক চিতিয়ে বলতে পেরেছে,
‘আমি বিশ্ব তোরণে বৈজয়ন্তী, মানব-বিজয় কেতন।’